তৃনমূলের চুরির দিন শেষ, পঞ্চায়েতেও নজর শুভেন্দুর! জেরবার মমতা! তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য September 25, 2023 প্রিয়বন্ধুর মিডিয়া রিপোর্ট- এর আগেও তৃণমূল সরকারের আমলে দু দুজন বিরোধী দলনেতা দেখেছে বাংলা। কিন্তু তাদের মধ্যে সেই রকম সক্রিয়তা এবং সরকারকে চেপে ধরার মানসিকতা লক্ষ্য করা যায়নি। যা দেখা যাচ্ছে রাজ্যের বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ক্ষেত্রে। বিধানসভার ভেতরে এবং বাইরে বিরোধী নেতা হিসেবে যেভাবে শাসক দলকে নাস্তানাবুদ করতে হয়, ঠিক সেটাই করছেন শুভেন্দুবাবু। বারবার তিনি প্রমাণ দিয়েছেন যে, তিনি সেটিং করা বিরোধী দলনেতা নন। তাকে ম্যানেজ করে সরকার তার কণ্ঠরোধ করতে পারবে না। তবে তিনি যেরকম ভাবে বিধানসভা এবং গোটা রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের চুরি আটকে দিচ্ছেন, দুর্নীতি আটকে দিচ্ছেন, ঠিক তেমনই পঞ্চায়েতেও এবার সেই বিরোধী নেতা তৈরি করতে ক্লাস নিতে চলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। যে সমস্ত পঞ্চায়েত বিজেপির দখলে নেই, সেখানে যাতে তৃণমূল একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করতে না পারে, তার জন্যই নিজের দলের জনপ্রতিনিতিদের নিয়ে দু ঘন্টার বৈঠকে বসতে চলেছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক। প্রসঙ্গত, এদিন মহিষাদলের একটি কর্মসূচি থেকে শুভেন্দু অধিকারী জানান, “কিভাবে বিরোধীদলের ভূমিকা পালন করতে হবে, তা আমি দুই ঘন্টার বৈঠকে আপনাদের বলে দেব। কিভাবে চেপে ধরতে হবে সরকারকে, তা বলে দেব। যে করেই হোক, এদের চুরি আটকাতে হবে, দুর্নীতি আটকাতে হবে। তাই আরটিআই করা থেকে শুরু করে সাধারণ সভায় প্রতিবাদ করার সমস্ত ফর্মুলা আমি আপনাদের বলে দেব।” একাংশ বলছেন, শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের ভেতরের খবর খুব ভালো মতো জানেন। কারণ তিনি দীর্ঘদিন তৃণমূলের সঙ্গে ঘর করে এসেছেন। তাই তার পক্ষে তৃণমূলকে চাপে রাখা অত্যন্ত সহজ। যে কাজটা তিনি বিরোধী দলনেতা হওয়ার পর থেকে লাগাতার করে যাচ্ছেন। আবাস যোজনা থেকে শুরু করে একশো দিনের কাজে দুর্নীতির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। শাসকদলকে চাপে রেখে শুভেন্দু অধিকারী বুঝিয়ে দিয়েছেন, কেন্দ্র দুর্নীতি করলে কোনোভাবেই টাকা দেবে না। তাই আর্থিক বঞ্চনার কথা তৃণমূলের পক্ষ থেকে লাগাতার বলা হলেও, রাজ্য সরকারের চুরি যে একদিক থেকে আটকে দিয়েছেন এই শুভেন্দু অধিকারী, তা বলাই যায়। সেদিক থেকে এটা বিজেপি এবং বলা ভালো শুভেন্দু অধিকারীর একটা বড় সাফল্য। তবে পঞ্চায়েতেও তৃণমূলের এই ছোটখাটো দুর্নীতিতে আটকে দেওয়ার জন্য এবার নিজের মতই বিরোধী নেতা প্রত্যেকটি পঞ্চায়েতে তৈরি করতে চান শুভেন্দুবাবু। যাকে স্বাগত জানাচ্ছেন দলের সমস্ত স্তরের কর্মীরা। বিরোধী শিবিরের দাবি, বিড়ালের গলায় যদি কেউ ঘন্টা বাঁধতে পারেন তাহলে তিনি শুভেন্দু অধিকারী, এতদিন রাজ্যের দুর্নীতি আটকেছেন। আর এবার একেবারে পঞ্চায়েত স্তরেও নিজের মত চোখে চোখ রেখে কথা বলা জনপ্রতিনিধি তৈরি করতে চাইছেন তিনি। কারণ পঞ্চায়েতে অনেক জায়গায় শাসকদলের হুমকি আসে। যার ফলে বিরোধী জনপ্রতিনিধিরা সেভাবে বিরোধিতা করতে পারে না। অনেক সময় তারা শাসক দলের প্রলোভনে পড়ে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেন। কিন্তু তা যাতে না হয় তার জন্যই এবার যেসব জায়গায় বিজেপি বিরোধী আসনে রয়েছে, সেই পঞ্চায়েতে তৃণমূলকে চেপে ধরার জন্য মন্ত্র দিতে চান কাথির মেজোবাবু। পর্যবেক্ষকদের মতে, একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, নীচুতলায় তৃণমূলের কিছু নেই। কিছুটা হলেও তাদের একটা শক্ত ভীত রয়েছে। যার কারণে পঞ্চায়েতে এত ভালো ফলাফল করেছে শাসক দল। কিন্তু তারপরেও কাজের মধ্যে দিয়ে নিজেদের অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে হবে বিজেপিকে। তা না হলে পরবর্তী নির্বাচনে তারা আরও ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাবে। আর এই সরল সত্যটা আর কেউ না বুঝুক, শুভেন্দু অধিকারী খুব ভালো করেই বোঝেন। কারণ, তার একটাই লক্ষ্য তৃণমূলকে ক্ষমতাচ্যুত করা। তাই সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে এবার পঞ্চায়েত স্তর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দিতে ময়দানে নামছেন শুভেন্দু অধিকারী। যার ফলে রীতিমতো নাস্তানাবুদ হতে চলেছে তৃণমূল। আটকে যেতে চলেছে তাদের সমস্ত দুর্নীতি। দিনের শেষে অন্তত তেমনটাই দাবি সমালোচক মহলের। আপনার মতামত জানান -