এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > শিল্প নাকি ঢপের চপ! বিদেশ থেকে ফিরেই হাওয়া মমতা! সত্য প্রকাশে এত ভয় রাজ্যের?

শিল্প নাকি ঢপের চপ! বিদেশ থেকে ফিরেই হাওয়া মমতা! সত্য প্রকাশে এত ভয় রাজ্যের?


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-12 দিনের বিদেশ সফর শেষ করে ইতিমধ্যেই রাজ্যে ফিরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিরোধী থেকে শুরু করে রাজ্যের সাধারণ মানুষ, বেকার যুবক-যুবতী, সকলেই একটা আশা করেছিলেন সরকারের কাছে। কি সেই আশা? আশা একটাই যে, মুখ্যমন্ত্রী এতদিন বিদেশ সফর করে অন্তত তথ্য প্রকাশ করে জানাবেন যে, ঠিক কত বিনিয়োগ পশ্চিমবঙ্গে নিয়ে এসেছেন তিনি। কিন্তু সেরকম কিছু এখনও পর্যন্ত দেখা যায়নি। উল্টে বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মিনিট কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন অসম্ভব ভালো বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কতটা ভালো সেই বৈঠক! তা জানার জন্য তো রাজ্যের মানুষ উদগ্রীব হয়ে রয়েছেন। কেন প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে তিনি সেই তথ্য প্রকাশ করছেন না? কত বিনিয়োগ এসেছে রাজ্যে, সেই তথ্য প্রকাশ করতে এত কেন ঢিলেমি মনোভাব মুখ্যমন্ত্রীর? সাধারণ মানুষের মনে ওঠা সেই সমস্ত প্রশ্নই এবার প্রশাসনিক প্রধানের উদ্দেশ্যে ছুড়ে দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

প্রসঙ্গত, এদিন বিদেশ সফরের পর মুখ্যমন্ত্রীর ফিরে আসা এবং শিল্প নিয়ে কোনো তথ্য না দেওয়া নিয়ে শুভেন্দুবাবুকে প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেন, “উনি শিল্প আনতে যাননি। উনি বেড়াতে গিয়েছিলেন। যদি শিল্প এনেই থাকেন, তাহলে কত শিল্প এসেছে! উনি তা জানান। উনি জানান যে, কারা কারা বিনিয়োগ করেছে! সেই সংখ্যা প্রকাশ করুন। কিন্তু আমি বলে দিচ্ছি, পশ্চিমবঙ্গে এখনও পর্যন্ত কত কারখানা বন্ধ হয়েছে!” আর এর পরেই একের পর এক বন্ধ কারখানার তুলে ধরে রাজ্যে শিল্পের যে করুন দশা, তা তুলে ধরেন শুভেন্দু অধিকারী।

একাংশের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী তো রাজ্যের মঙ্গলের জন্য বিদেশে বিনিয়োগে আনতে গিয়েছেন। যাওয়ার আগে বড় বড় দাবি করে গিয়েছেন। ফিরে আসার পরেও এক মিনিটের সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলে তিনি বলেছেন যে, অসম্ভব ভালোর বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সেই বৈঠকের নির্যাস জানার জন্য তো রাজ্যের মানুষ তাকিয়ে আছেন সেই মুখ্যমন্ত্রীর দিকে। তাই প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে অন্তত তার তথ্যটা সকলের সামনে প্রকাশ করা উচিত। সেই তথ্য কেন প্রকাশ হচ্ছে না? ফলে শুভেন্দু অধিকারীর এই প্রশ্ন অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত।

বিজেপির ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, রাজ্যের মানুষের ট্যাক্সের টাকায় বিদেশ ভ্রমণ করতে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রবল গরমে তিনি রাজ্যে থাকতে পারছিলেন না। আর সেই কারণেই মানুষ যখন বিপদে, তখন কোনো রকমে পালিয়ে বাঁচতে চেয়েছিলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তবে তিনি হয়তো ভেবেছিলেন, অতীতের মতই তার এই বিদেশ সফর নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠবে না। কিন্তু তিনি একটা জিনিস ভুলে গিয়েছেন যে, রাজ্যের বর্তমান বিরোধী দলনেতার নাম শুভেন্দু অধিকারী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মানুষকে ঘোল খাইয়ে দিতে পারেন। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী অন্য জিনিস।

রাজ্যের মানুষকে বোকা বানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিদেশ সফর করবেন, আর রাজ্যে এসে কিছুদিনের জন্য হাওয়া হয়ে যাবেন, ভাববেন, সবাই ভুলে গিয়েছে তার বিদেশ সফর। তাহলে তিনি মস্ত বড় ভুল করছেন। তাই শুভেন্দু অধিকারী আবার তাকে মনে করিয়ে দিলেন যে, রাজ্যের মানুষকে জবাব দিতে হবে, ঠিক কত শিল্প মুখ্যমন্ত্রী বিদেশ থেকে এনেছেন! তা না হলে সেই রাজ্যের মানুষ ধরে নেবে যে, শুধুমাত্র বিদেশ ভ্রমণ করতেই দুবাই থেকে শুরু করে স্পেনে গিয়ে জগিং করেছেন মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কটাক্ষ করে দাবি বিরোধী শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের দাবি, রাজ্যের সরকার ছিটেফোঁটা সাফল্য পেলেও, এই মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে ঘটা করে প্রেস কনফারেন্স করেন। কিন্তু এত বড় বিদেশ সফর হলো, প্রেস মিডিয়ায় সর্বক্ষণ আলোচনা হল, অথচ ফিরে আসার পর একটা সামান্য প্রেস কনফারেন্স করতে দেখা গেল না তাকে। তিনি কার্যত হাওয়া হয়ে গিয়েছেন বলেই দাবি করছে বিরোধীরা। ফলে এই পরিস্থিতিতে এত যখন সমালোচনা হচ্ছে, বিরোধী দলনেতা যখন তাকে এত কথা শোনাচ্ছেন, তখন মুখ্যমন্ত্রী কেন শিল্পে বিনিয়োগের তথ্যটা প্রকাশ করছেন না? সেই তথ্য প্রকাশ করলেই তো শুভেন্দু অধিকারীও বেকায়দায় পড়ে যান। তাহলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সেরকম কোনো তথ্য নেই? বিরোধী দলনেতা যে অভিযোগ করছেন, তা সত্যি? উত্তর দিতে হবে সেই মুখ্যমন্ত্রীকেই। যে উত্তরের আশায় গোটা রাজ্যের সাধারণ মানুষ। দিনের শেষে তেমনটাই দাবি ওয়াকিবহাল মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!