তৃতীয় দফার মুখে আবার অপসারিত মমতা-ঘনিষ্ঠ পুলিশ সুপার, উচ্ছ্বসিত বিরোধীরা, ব্যাকফুটে তৃনমূল? মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম রাজ্য April 21, 2019 রাজ্যে শান্তিপূর্ণ ও অবাধ নির্বাচনের জন্য বেশ কয়েকজন প্রশাসনিক ব্যাক্তিকে অপসারণের জন্য দাবি জানিয়ে আসতে দেখা গিয়েছিল বিরোধীদের। এর আগেই বিরোধীদের সেই দাবিকে মান্যতা দিয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার সহ বেশ কিছু পুলিশ আধিকারিককে অপসারিত করেছিল নির্বাচন কমিশন। আর এবার সেই ধারা বজায় রেখে তৃতীয় দফার নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মালদহ জেলা পুলিশ সুপার অর্নব ঘোষকে সরিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন। জানা গেছে, শনিবার মালদহে আসেন রাজ্যের বিশেষ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবে। আর তাঁর কাছেই বিরোধীদের তরফে মালদহের পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়। আর তারপরই অর্নব ঘোষকে মালদহ জেলার পুলিশ সুপারের পদ থেকে সরিয়ে দেয় নির্বাচন কমিশন। যেখানে নতুন এসপি হিসাবে আনা হয় অজয় প্রসাদকে। বিরোধীদের অভিযোগ, অর্নব ঘোষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ছিল – তার মধ্যে অন্যতম শাসকদলকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়া। আর তাই, নির্বাচন কমিশন ভোটের আগে এহেন পদক্ষেপ গ্রহণ করায় খুশি সকলেই। এদিন এই প্রসঙ্গে উত্তর মালদহ লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী ইশা খান চৌধুরী বলেন, “অর্নববাবু তৃনমূলের হয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন করিয়েছিলেন। তাঁর মতো মানুষকে নিয়ে আমরা এবার আতঙ্কে ছিলাম। কিন্তু এখন তিনি সরে যাওয়ায় আমরা খুশি। জেলায় অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট হলে তৃনমূল একটা আসনও পাবে না।” অন্যদিকে অর্নব ঘোষের পাশাপাশি মালদহ জেলার জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্যকেও সরানোর দাবি জানিয়েছেন জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মোস্তাক আলম। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিকে এই প্রসঙ্গে মালদহ জেলা সিপিএমের সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “আমরা অনেক আগে থেকেই বলেছিলাম যে অর্নব ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। বিগত পঞ্চায়েতের গননার সময় অনেক ঘটনা ঘটেছে। তাই অর্নব ঘোষের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিরুদ্ধে আমরা বারবার সোচ্চার হয়েছিলাম। অবশেষে আমাদের দাবি মান্যতা পেল।” অন্যদিকে মালদহ পুলিশ সুপারের অপসারণে অত্যন্ত খুশি বলে জানান জেলা বিজেপির সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র। এদিকে জেলা পুলিশ সুপারকে সরিয়ে দিলেও কিছুই হবে না বলে জানান মালদহ জেলা তৃনমূলের কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার। এদিন তিনি বলেন, “আমরা প্রশাসনের ভরসায় ভোট করি না। তাই এসব সিদ্ধান্তে আমাদের কিছু যায় আসে না। তবে সারা দেশে বিজেপি যেভাবে বিধি ভাঙছে সেদিকেও কমিশনের দৃষ্টি দেওয়া উচিত।” এর আগে কলকাতার পুলিশ কমিশনার সহ অন্যান্য পুলিশ সুপারদের অপসারিত করায় তৃণমূল যেভাবে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছিল, মালদার ক্ষেত্রে তা কিন্তু হয় নি। ফলে – রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ছড়াচ্ছে – নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপে কি ব্যাকফুটে তৃণমূল কংগ্রেস? আবার আরেক দলের মতে, এর আগে পুলিশ কর্তাদের অপসারণ নিয়ে ফ্রন্টফুটে খেলতে গিয়ে, কমিশন যেভাবে ভর্ৎসনা করেছিল, তাতে তৃণমূল কংগ্রেস এমনিতেই ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল। আসন্ন নির্বাচনে সুষ্ঠু ও অবাধভাবে ভোট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করায় কমিশনের মূল লক্ষ্য। আর তাই, এইসব প্রশাসনিক পদক্ষেপের ক্ষেত্রে বিরোধিতা করতে গেলে – একদিকে যেমন কমিশনের কাছে ভর্ৎসিত হতে হবে, অন্যদিকে জনমানসেও এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে – তাই কমিশনের এত বড় পদক্ষেপের সামনে কার্যত নিশ্চুপ তৃণমূল কংগ্রেস বলেই অভিমত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। আপনার মতামত জানান -