দলের পুরোনো নেতা-কর্মীদের নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত মমতার, বড় দায়িত্ব ফিরহাদের কাঁধে কলকাতা রাজ্য June 8, 2019 কংগ্রেসে পরিবারতন্ত্র চলছে অভিযোগ তুলে 1998 সালে নিজের হাতে তৃণমূল কংগ্রেস দল গঠন করেছিলেন তৃনমূল নেত্রী তথা রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।আর তারপর থেকেই নিজের হাতে তৈরি এই দল গড়ে তৎকালীন বাম সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই আন্দোলন সংগঠিত করতে হয়েছিল তাকে। আর এই লড়াইয়ের পথ মোটেই মসৃন ছিল না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। শত শত কর্মীর আত্ম বলিদানের মধ্যে দিয়েই 2011 সালে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন তিনি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরই তৃণমূলকে ক্ষমতায় আনার জন্য যে সমস্ত কর্মীসমর্থকরা লড়াই করেছে, সেই সমস্ত পুরোনো কর্মী সমর্থকরা নতুনদের দলে আসায় অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে বলে নানা সময়েই অভিযোগ করতে দেখা যেত দলের একাংশকে। এমনকি এই ব্যাপারে দলীয় স্তরে অভিযোগ জানালেও সেই পুরনো নেতাকর্মীদের ফিরিয়ে আনার জন্য দল সেইভাবে এতদিন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলেও জানাতে শুরু করেছেন অনেকে। কিন্তু এবার লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ভরাডুবি এবং বিজেপির প্রবল উত্থান ঘটায় কিছুটা চিন্তিত তৃণমূল নেত্রীর গলায় সেই পুরনো কর্মীদের ফিরিয়ে আনার কথাই শোনা গেল। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - সূত্রের খবর, গতকাল হুগলি জেলার সমস্ত সাংসদ, বিধায়ক, সভাধিপতি, পঞ্চায়েতের তিনস্তরের নির্বাচিত প্রতিনিধি, পুর প্রতিনিধি এবং ব্লক পর্যায়ের নেতৃত্বকে তৃণমূল ভবনে ডেকে পাঠান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেখানেই দলের খারাপ ফলাফলের জন্য হুগলি জেলার নেতৃত্বকে কিছুটা ধমকও দেন তিনি। বস্তুত, রাজ্যের বিগত বাম সরকারকে সরানোর সময় এই হুগলির সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় তুলে দিয়েছিল। আর সেই লড়াইয়ের ফসল হিসেবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এতদিন বিগত দিনে তার সেই লড়াইয়ের শরিক ছিলেন যে সমস্ত নেতাকর্মীরা, তাদের কোনো খোঁজ না নিলেও এবার দুর্দিনে থাকা তৃণমূল নেত্রী নিজের দলের ভরাডুবি রুখতে এক সময়ের বামফ্রন্টের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে যারা তার হয়ে লড়াই করেছে, তৃণমূল ভবনের বৈঠকে সেই সমস্ত নেতাকর্মীদের নাম নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, “পুরনো যেসব কর্মী সিপিএমের বিরুদ্ধে কষ্ট করে লড়াই করেছিল, আমি তাদের চাই। সিঙ্গুরে সবাই নেতা। এমন নেতা চাই না যিনি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলবেন। যদি এরকমটা হয় প্রশাসনের থেকে আমি খবর নিয়ে গ্রেপ্তার করাবো।” এদিকে হুগলি জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলাগড়ের দিকে নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে প্রাক্তন বিধায়ক পারভেজ এবং হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী তপন দাশগুপ্তকেও কিছুটা সতর্ক করে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে শুধু হুগলি জেলার দলীয় নেতৃত্বকে তিরস্কার করাই নয়, ভোটের দিন হুগলির জয়ী বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে মোক্তার হোসেন নামে যে তৃণমূল কর্মী বন্দেমাতরম স্লোগান দিয়ে মাত করেছিলেন, এদিন তাকে পুরস্কার স্বরূপ 10 হাজার টাকা দেন তৃণমূল নেত্রী। আর এরপরই হুগলি জেলায় সংগঠনকে আরও চাঙ্গা করতে কলকাতা পৌরসভার মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে সেখানকার প্রত্যেকটি ব্লকে সভা করে পুরনো কর্মীদের ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেন তিনি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দেরিতে হলেও পুরনো কর্মীরাই যে তার মূল সম্পদ তা বুঝতে পেরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাইতো এতদিন সেই পুরনো কর্মীদের ভুলে গেলেও এবার ঠেলায় পড়ে দলের ভরাডুবির পর বিধানসভা নির্বাচনে যাতে সাফল্য পাওয়া যায়, তার জন্য জেলায় জেলায় সেই পুরনো কর্মীদের খুঁজতে শুরু করেছেন তিনি। কিন্তু নতুনদের চাপে কোণঠাসা হয়ে যাওয়া অভিমানী পুরনো কর্মীরা এখন দিদির ডাকে সাড়া দিয়ে ফের মূলস্রোতে ফিরে এসে লড়াই করেন কিনা, এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। আপনার মতামত জানান -