এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > পদ্ম ঝড়ের দাপট বাঁচাতে পারল না মুখ্যমন্ত্রীর নিজের গড়ও, মোদী ঝড়ের আঁচ লাগল টালির চালেও

পদ্ম ঝড়ের দাপট বাঁচাতে পারল না মুখ্যমন্ত্রীর নিজের গড়ও, মোদী ঝড়ের আঁচ লাগল টালির চালেও


এবারের লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির বাড়তি নজর ছিল। তবে বিজেপি বাংলাতে সেইভাবে কোনোই প্রভাব ফেলতে পারবে না বলে প্রথম থেকেই দাবি করতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু বাস্তবে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর দেখা গেল সম্পূর্ণ বিপরীত ছবি। যেখানে রাজ্যের 42 টি লোকসভার মধ্যে 42 টি লোকসভা আসন দখল করার জন্য দলকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সেখানে 22 টি আসনের কোটাই পেরোতে পারলেন না তারা।

অন্যদিকে বিগত 2014 সালে এই রাজ্য থেকে দুটি লোকসভা আসনে জয়ী বিজেপি এবার 18 টি আসন দখল করেছে। যা তৃণমূলের কাছে অত্যন্ত অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে যে সমস্ত লোকসভা কেন্দ্র তৃণমূল জয়লাভ করেছে, সেখানে বিধানসভা ভিত্তিক বা ওয়ার্ডভিত্তিক ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে যে, তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা নেত্রীরা, এমনকি স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওয়ার্ডেও এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। যা দেখে চোখ কপালে ওঠার জোগাড় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের।

সূত্রের খবর, প্রাথমিকভাবে কলকাতা উত্তর ও কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল জয়লাভ করলেও এখানকার 50 জন কাউন্সিলরই নিজেদের ওয়ার্ডে পিছিয়ে রয়েছেন। আর খোদ তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরে যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি, সেই 73 নম্বর ওয়ার্ডেও বিজেপির কাছ থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল। শুধু তাই নয়, ভবানীপুরের 63, 70, 71, 72, 73 এবং 74 নম্বর ওয়ার্ডেও বিজেপির উত্থান প্রবলভাবে লক্ষ্য করা গেছে। তবে এই ভবানীপুর বিধানসভায় তৃণমূল অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে কলকাতা পৌরসভার মেয়র তথা রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ওয়ার্ড 82 নম্বরের জন্য।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে রাসবিহারী বিধানসভা কেন্দ্রে নিজেদের ওয়ার্ডে লিড দিতে পারেননি কলকাতা পৌরসভার 85 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ দেবাশীষ কুমার, 93 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মেয়র পারিষদ রতন দে। একইভাবে কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বেহালা এলাকায় বিজেপির উত্থান আটকাতে পারেননি তৃনমূলের মেয়র পারিষদ তথা 118 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারক সিংহ।

তবে শুধু দক্ষিণ কলকাতা নয়, উত্তর কলকাতাতেও তৃণমূলের দখলে থাকা কুড়িটি ওয়ার্ডে প্রবলভাবে গেরুয়া শিবিরের উত্থান লক্ষ্য করা গেছে। গোটা বড়বাজার এলাকা বিজেপির পক্ষে চলে গেছে বলে ভোট পরবর্তী পর্যালোচনায় দাবি করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। উত্তর কলকাতার মোট 60 টি ওয়ার্ডের মধ্যে 6, 13, 17, 18, 20, 24, 25, 26, 27, 31, 40, 41, 42, 44, 47, 50, 51, 52, 55 এবং 58 নম্বরে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল।

যেখানে দেখা গেছে যে, জোড়াসাঁকোর বিধায়ক স্মিতা বক্সী এবার নিজের ওয়ার্ডেই চার হাজারের বেশি ভোটে পিছিয়ে রয়েছেন। কিন্তু কেন এরকম হল? এদিন এই প্রসঙ্গে দু নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সাধন সাহা বলেন, “সত্যিই এটা অবিশ্বাস্য। ভোট পর্ব শুরু হওয়ার পর থেকে ওদের কোনো মিটিং মিছিল চোখে পড়ল না। অথচ ফলাফলে দেখলাম আমাদের অনেক ভোট কমে গিয়েছে।”

এদিকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে থাকায় এই ব্যাপারে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করতে দেখা গেছে 23 নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর বিজয় ওঝাকে।এদিন তিনি বলেন, “এবার আমাদের লক্ষ্য কলকাতা পৌরসভা। পুরসভার ভোটেও এই ধাক্কা দেওয়া হবে।”

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে বিজেপির কোনো শক্তি নেই বলে শাসকদলের নেতা মন্ত্রীদের দাবি করতে দেখা গেছে। আর বিরোধীদের এইভাবে অবদমিত করার প্রচেষ্টা রাজ্যের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ ঠিক মত মেনে নিতে পারেননি। যার জেরে মুখে কিছু না বললেও ভোটবাক্সে তারা বিজেপির প্রতি সমর্থন জানিয়ে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে অনেকটাই চাপে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। ফলে বিভিন্ন ওয়ার্ডে শাসকদল পিছিয়ে থাকায়, কিভাবে তারা নিজেদের পালে হাওয়া আনবে এবং এর জন্য তৃণমূল আদৌ কোনো স্ট্র্যাটেজি নেয় কিনা এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!