এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > কংগ্রেস > মমতার বার্তার পরেই কি কাছাকাছি আসতে চলেছে তৃণমূল এবং কংগ্রেস? বাড়ছে জল্পনা!

মমতার বার্তার পরেই কি কাছাকাছি আসতে চলেছে তৃণমূল এবং কংগ্রেস? বাড়ছে জল্পনা!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে খুব একটা ভালো সম্পর্ক নেই তৃণমূল কংগ্রেসের। জাতীয়স্তরে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সখ্যতা থাকলেও, বাংলায় অধীর রঞ্জন চৌধুরীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কট্টর বিরোধী নেতা থাকার কারণে সেভাবে তৃণমূলের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখতে দেখা যায়নি কংগ্রেসকে। স্বাভাবিকভাবেই 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সিপিএমের সঙ্গে জোট করে লড়াই করতে দেখা গিয়েছিল হাত শিবিরকে। তবে এই প্রথম রাজ্য বিধানসভায় বাম এবং কংগ্রেসের একজন প্রতিনিধিও যেতে পারেনি। সেদিক থেকে বিরোধী জোট নিজেদের দখলে রেখে 77 টি আসন পেয়ে বিরোধী দলের মর্যাদা পেয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

আর এই পরিস্থিতিতে ক্রমশ রাজ্যে কোনঠাসা হতে শুরু করেছে বাম এবং কংগ্রেস। তবে সম্প্রতি একুশে জুলাইয়ের শহীদ সমাবেশের ভার্চুয়াল মঞ্চ থেকে দেশের সমস্ত বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায। দিল্লির কনস্টিটিউশন হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য শুনতে উপস্থিত হয়েছিলেন কংগ্রেসের বর্ষিয়ান নেতা পি চিদাম্বরম। আর তার ফলেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, এবার জাতীয় স্তরে কংগ্রেসকে সাথে নিয়ে বিজেপি বিরোধী জোট গঠন করতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এক্ষেত্রে দ্রুত সময় নষ্ট না করে যাতে সমগ্র রাজনৈতিক দলগুলো বিজেপির বিরুদ্ধে জোট গঠন করতে এগিয়ে আসে, তার জন্য কালীঘাটের ভার্চুয়াল মঞ্চ থেকে বার্তা দিতে দেখা যায় তৃণমূল নেত্রীকে। আর তারপর থেকেই জল্পনা তৈরি হয়, তাহলে কি এবার বাংলাতে কংগ্রেসের যে সমস্ত নেতারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে শুরু করেছিলেন, তারা জাতীয় রাজনীতির দিকে তাকিয়ে সুর নরম করতে শুরু করবেন? সেদিক থেকে কি আবার কাছাকাছি আসতে শুরু করবে তৃণমূল এবং কংগ্রেস?

বলা বাহুল্য, 2011 সালে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল এবং কংগ্রেস জোটবদ্ধ হয়ে লড়াই করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের সেই জোট ভেঙে যায়। দু’পক্ষের সম্পর্ক তিক্ততায় পৌঁছে যায়। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় স্তরে বিজেপিকে সরাতে যখন উঠেপড়ে লেগেছে তৃণমূল কংগ্রেস, তখন সমগ্র বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে জোট গঠনের বার্তা দেওয়ার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই বার্তায় রাজি হয়ে সোনিয়া গান্ধী বাংলার প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন। আর প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে যদি হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে এই নির্দেশ আসে, তাহলে অধীর রঞ্জন চৌধুরী এবং তার নেতৃত্বাধীন বঙ্গ কংগ্রেস তৃণমূলের প্রতি সুর নরম করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

তাহলে কি এবার বাংলায় তৃণমূলের কাছাকাছি আসতে চলেছে হাত শিবির? এতদিন কথায় কথায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দলকে তুলোধোনা করতেন। তবে জাতীয় রাজনীতির দিকে তাকিয়ে বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে এবার কি সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সখ্যতা বজায় রাখতে দেখা যাবে তাকে? এদিন এই প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি তথা সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, “বাংলার কংগ্রেস বলে আলাদা কিছু নেই। আমরা জাতীয় কংগ্রেসের রাজ্য শাখা। জাতীয় কংগ্রেস যদি তৃণমূলের সঙ্গে যেতে পারে, তাহলে তাই করতে হবে। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেই তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 2011 সালে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিলেন। তৃণমূল নেত্রী তো সব দলকেই জোটে ডেকেছেন। আর তার মধ্যে তো সিপিএমও আছে। হাইকমান্ডের কথায় তৃণমূলের সঙ্গে জোট হয়েছিল। তৃণমূলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বামেদের সঙ্গে জোট করেছিলাম দিল্লির সম্মতি নিয়ে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এখানেই জল্পনা তৈরি হয়েছে, তাহলে আগামী দিনে বাংলার রাজনীতি নতুন কোনো সমীকরণ দেখতে পারে। এক্ষেত্রে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের তিক্ততা ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছিল। পরবর্তীতে কংগ্রেস রাজ্যে বিরোধী দলের জায়গা দখল করে। কিন্তু এবার সেই শূন্য হয়ে যাওয়া কংগ্রেস জাতীয় রাজনীতির দিকে তাকিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তায় সম্মতি দিয়ে নিজেদের শ্রীবৃদ্ধির লক্ষ্যে সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা থেকে সরে আসতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, প্রতিটি রাজনৈতিক দলই নিজেদের স্বার্থের কথা চিন্তা করে। এক্ষেত্রে রাজনীতি কখন কোন মোড় নেবে, তা বলা যায় না। সদা পরিবর্তনশীল সম্ভাবনার নামই রাজনীতি। সেদিক থেকে শহীদ দিবসের ভার্চুয়াল মঞ্চ থেকে জাতীয় স্তরে বিজেপিকে সরাতে কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিজেপি বিরোধী দলগুলোকে বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেই বাংলার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যদি প্রতিমুহূর্তে মন্তব্য করতে দেখা যায় বাংলার কংগ্রেস নেতৃত্বকে, তাহলে জাতীয় স্তরে তৃণমূল এবং কংগ্রেসের কাছাকাছি আসার সম্ভাবনা বিশবাঁও জলে চলে যাবে।

তাই সেই জটিলতাকে মাথায় রেখে যাতে তৃণমূলের সঙ্গে জোট গঠনে কোনো রকম সমস্যার সৃষ্টি না হয়, তার জন্যই কংগ্রেস হাই কমান্ডের পক্ষ থেকে কোনো বার্তা এলে যে প্রদেশ কংগ্রেস তা মেনে নেবে, তা বুঝিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধী বলে পরিচিত অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, বিজেপিকে সরাতে আগামী দিনে আবার তিক্ততা ভুলে কাছাকাছি আসে কিনা তৃণমূল এবং কংগ্রেস, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!