মমতার ওপরেও দাদাগিরি ? দলীয় নেতাদের হুশিয়ারি ভাইপো ঘনিষ্ঠর ! হাসছে বিজেপি! তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য January 15, 2024 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-যত সময় যাচ্ছে, ততই দ্বিধা বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। পিসি এবং ভাইপো, কার হাতে দলের রাশ থাকবে, তা নিয়ে অনুগামীরা যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছেন বলে দাবি করছে বিরোধীরা। তবে এখনও পর্যন্ত দল এবং সরকারের শেষ কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাকে দেখেই সকলে তৃণমূল কংগ্রেস করেন। কিন্তু তার ভাইপোর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা, যার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে, এবার তিনি প্রকাশ্যে সভা মঞ্চে দাঁড়িয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের হুশিয়ারি দিলেন। যার ফলে অনেকে কটাক্ষ করে বলছেন যে, ধীরে ধীরে তো ভাইপোর হাতে রাশ চলে যাচ্ছে। এতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলকে সতর্ক করতেন। কিন্তু এবার ভাইপো ঘনিষ্ঠ এক চুনোপুটি নেতা, তিনি একেবারে লোকসভায় ফলাফল খারাপ হলে নীচুতলার নেতা কর্মীদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে ফেললেন, তাতে কি তৃণমূলের ক্ষমতার পরিবর্তন হচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন, এখন শেষ কথা বলবেন ভাইপো এবং তার অনুগামীরা? প্রসঙ্গত, এদিন ভাঙ্গরে একটি কর্মী সভায় উপস্থিত হয়ে দলীয় নেতা কর্মীদের সতর্ক করে দেন তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা। তিনি বলেন, “লোকসভায় যদি কোনো অঞ্চল থেকে লিড না পাওয়া যায়, তাহলে সেখানকার যারা দলীয় পদে রয়েছেন, তাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হবে।” আর এখানেই প্রশ্ন যে, শওকত মোল্লা কে, যে তিনি এত বড় ক্ষমতা রাখেন? দলের পদে থাকা সবাইকে তিনি সরিয়ে দেবেন, তার এই বক্তব্য রাখার কোনো অধিকার রয়েছে কি? তৃণমূলে তো শেষ কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই জায়গায় সুপ্রিমো কোনো নির্দেশ না দিলেও কেন শওকত মোল্লা নিজে থেকেই এলাকার নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে এমন হুশিয়ারি দিলেন? তা নিয়ে দলের অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। তবে অনেকে আবার এটাও বলছেন যে, ভাইপো ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত শওকত মোল্লা। তাই তাকে হয়ত নিজের এলাকার দলের রাশ হাতে নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন ভাইপো। ফলে সুপ্রিমোকে অমান্য করেই ভাইপোর কথামত চলতে গিয়ে এবং দলের রাশ নিতে গিয়েই এই ধরনের কথা বলে ফেলছেন শওকতবাবুর মত নেতারা বলেই দাবি একাংশের। তবে তৃণমূলের নেতাদের এই দাদাগিরি দেখে হাসতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের বক্তব্য, তৃণমূলে এখন ক্ষমতা দখলের কম্পিটিশন চলছে। সেই কারণেই পিসিপন্থী নেতারা এবং ভাইপোপন্থী নেতারা ক্ষমতা দখলের জন্য বল প্রয়োগে রাস্তায় নেমে পড়েছেন। কিন্তু মানুষ গোটা তৃণমূল দলটার উপরই বিরক্ত। এই সমস্ত গোয়ার্তুমি পশ্চিমবাংলায় চলবে না। মানুষ বিকল্পের সন্ধানে রয়েছে। আগামী লোকসভায় গোটা রাজ্যে বিপুল ভোটে পরাজিত হবে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই এইরকম হুঁশিয়ারি দিয়ে খবরে টিকে থাকতে পারলেও, জনতার মনে জায়গা করে নিতে পারবেন না তৃণমূল নেতারা বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের। পর্যবেক্ষকদের মতে, শওকত মোল্লার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। একসময় তো তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে তিনি নাকি বোম বাঁধেন, এমন কথাও বলে ফেলেছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই এমন একজন নেতা তৃণমূলের মত দলের নেতৃত্ব দেবেন, আর তার হুমকি হুঁশিয়ারিতে কর্মীরা কাজ করবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। তাই ভাইপোর এই মডেল যখন সর্বত্র চলছে, তখন তা নিয়ে আশ্চর্য হচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু একটা বিষয় নিয়ে চর্চা চলছে যে, ভাইপোপন্থী নেতার এত হুঁশিয়ারি কেন? তাহলে কি পিসির ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে! সর্বগ্রাসী হতে শুরু করেছেন ভাইপোমনি! তবে যাই হোক না কেন, এই সব হুমকি, হুঁশিয়ারি দিয়ে যে লোকসভা ভোটে প্রভাব ফেলা যাবে না, তা স্পষ্ট। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা। আপনার মতামত জানান -