মেদিনীপুর নিয়ে মহা বৈঠক মমতার! চরম হুঙ্কার ছেড়ে অস্বস্তি বাড়ালেন শুভেন্দু! তৃণমূল বিজেপি রাজনীতি রাজ্য January 11, 2024 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন কোন দিক সামলাবেন, সেটা তিনি বুঝে উঠতে পারছেন না। একদিকে শেখ শাহজাহানের মত ঘটনা, অন্যদিকে একের পর এক চুরি সামনে চলে আসছে। দল আদৌ টিকবে কিনা, সেটা নিয়েই একটা বড় প্রশ্ন। ফলে সব দিক থেকেই তিনি কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে রয়েছেন। বিরোধীরা তেমনটাই দাবি করছে। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। মাঝে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খুব আগ্রহ তৈরি হয়েছিল দেশের রাজনীতি নিয়ে। কিন্তু এখন বাংলার যা পরিস্থিতি, তাতে দেশ তো দূরের কথা, বাংলাতেই তৃণমূল ধুয়েমুছে সাফ হয়ে যেতে পারে, এটা ধীরে ধীরে অনুভব করতে শুরু করেছে ঘাসফুল শিবির। একে তো বিজেপি বিরোধী দল, তার মধ্যে বিরোধী দলনেতার নাম শুভেন্দু অধিকারী। তিনি প্রতিমুহূর্তে এই সরকারের কুকীর্তির পর্দা ফাঁস করে দিচ্ছেন। তাই এবার লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে মেদিনীপুর নিয়ে দলীয় বৈঠক করলেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। আর সেই বৈঠকে একাধিক বার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিলেও, লাভের লাভ কিছুই হলো না। কারণ সেই বৈঠকে নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে প্রশ্ন করতেই তিনি রীতিমত হুংকার ছাড়লেন। যে উদ্দেশ্যে তৃণমূল নেত্রী বৈঠক করছেন, সিট ধরে রাখার যে চেষ্টা তিনি এখন থেকে শুরু করেছেন, তা হয়ত এবার আর ফলপ্রসু হবে না। কারণ শুভেন্দু অধিকারী নিজের নাম দিয়ে লিখে রাখার যে বিষয়টি উল্লেখ করলেন, তাতে মনে করা হচ্ছে যে, মেদিনীপুর আবার যেতে চলেছে সেই বিজেপির হাতেই। কিন্তু কি এমন বলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা? প্রসঙ্গত, এদিন মেদিনীপুর নিয়ে তৃণমূলের প্রস্তুতি বৈঠক প্রসঙ্গে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে প্রশ্ন করা হয়। আর সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বড় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূলের উদ্দেশ্যে। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “মেদিনীপুর তো ধরে রাখবই। এবার ঘাটালও আমাদের দখলে আসবে। আপনি আমার নাম করে লিখে রাখুন। কোনো লাভ হবে না, চোর মমতাকে কেউ ভোট দেবে না।” অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে যে, শুভেন্দু অধিকারী এবার কতটা আদা জল খেয়ে নেমে পড়েছেন এই সরকারের বিরুদ্ধে। শেষবার যখন লোকসভা নির্বাচন হয়, তখন তিনি তৃণমূলে ছিলেন। কিন্তু বিজেপিতে আসার পর এটাই তার প্রথম লোকসভা নির্বাচন। তাই এই নির্বাচনে বিজেপিকে একটা ভালো ফলাফল দেওয়ার চেষ্টা বিরোধী দলনেতার পক্ষ থেকে অবশ্যই থাকবে। স্বাভাবিক ভাবেই সেই ভয়ে ভীত হয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন থেকেই মেদিনীপুর নিয়ে তৎপর হতে শুরু করেছেন। কিন্তু তৃণমূল তৃণমূল নেত্রীর পক্ষ থেকে সিট ধরে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। তবে শুভেন্দু অধিকারী একেবারে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছেন। আর এখানেই বোঝা যাচ্ছে যে, মেদিনীপুর, ঘাটাল, আরামবাগ এই সমস্ত জায়গায় জয়লাভ করা নিয়ে বিজেপি কতটা আত্মপ্রত্যয়ী! ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারীর সুরে সুর মিলিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, এত বৈঠক করে লাভের লাভ কিছু হবে না। মানুষ এই সরকারের চুরিটাকে ধরে ফেলেছে। একের পর এক মন্ত্রী জেলে যাচ্ছে, তারপরেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লজ্জা হচ্ছে না। দুর্নীতির মধ্যে ডুবে রয়েছে বাংলা। তাই বাংলাকে রক্ষা করতে হলে বিকল্প শক্তির প্রয়োজন। লোকসভা নির্বাচন পথ দেখাবে। মেদিনীপুর তো এমনিতে চলেই এসেছে। বাকি একাধিক আসন, যেগুলো তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত, সেখানেও পদ্মফুল ফুটবে বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের। পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই রাজ্যের মানুষ অনেক ভরসা করেছিলেন। কিন্তু তার আমলে যে পরিমাণ দুর্নীতি, যে পরিমাণ চুরি সামনে আসছে, তাতে মানুষের বিশ্বাস ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। আর তার ফলেই মানুষ এই সরকারের প্রতি রেগে ফায়ার। ভোট দিতে গিয়েও অনেককে ফিরে আসতে হয়েছে। তাই সেই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য লোকসভা নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্রপ্রেমী জনসাধারণ। স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপিও আত্মপ্রত্যয়ী যে, যে পরিমাণ চুরি বাংলায় হয়েছে, যেভাবে বেকাররা চাকরি পাচ্ছে না, রাজ্যে শিল্প নেই, গণতন্ত্র ধ্বংস হচ্ছে, তাতে এই সরকারের ওপর কোনো সভ্য মানুষ ভরসা রাখতে পারেন না। ফলে সেই বিশ্বাস নিয়েই বলা যায় যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতই বৈঠক করুন, লোকসভায় তৃণমূলের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের পর তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা। আপনার মতামত জানান -