এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মিড ডে মিলে ছাত্রদের মাছ-ভাত তুলে দিতে অভিনব পদক্ষেপ মৎসদপ্তরের – জানুন বিস্তারিত

মিড ডে মিলে ছাত্রদের মাছ-ভাত তুলে দিতে অভিনব পদক্ষেপ মৎসদপ্তরের – জানুন বিস্তারিত


“মাছে ভাতে বাঙালি” এই কথা সকলেই জানে। কিন্তু স্কুলগুলোতে যে মধ্যাহ্নভোজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেখানে ভাতের সঙ্গে মাছ পাওয়া খুবই কষ্টকর ব্যাপার। প্রতিদিনের মেনুতে ডাল সবজি খুব বেশি হলে ডিম, এই জোটে পড়ুয়াদের কপালে। কোনো কোনো দিন খিচুড়িও পেয়ে থাকে। যদিও মাসে একদিন সাধারণত চিকেন পেয়ে থাকে ছাত্রছাত্রীরা।

কিন্তু এবার ছাত্র-ছাত্রীদের পাতে পড়তে চলেছে রুই-কাতলা মাছের পিস। গত সোমবার সিউড়ি করিধ্যা যদু রায় মেমোরিয়াল অ্যান্ড পাবলিক ইনস্টিটিউশনের নিজস্ব পুকুরে মাছের চারা ছাড়া হয় মৎস্য দপ্তরের থেকে। ওই পুকুরের জন্য 42 কেজি মাছের চারা দেওয়া হয়। এদিন অত্যন্ত আনন্দ সহকারে শিক্ষক-শিক্ষিকারা পুকুরে মাছের চারা ছাড়েন।

স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, সিউড়ি শহরের উপকণ্ঠেই রয়েছে ওই স্কুল। এই স্কুলে পঞ্চম ক্লাস থেকে শুরু করে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করে। বর্তমানে সমগ্র স্কুলের ছাত্র সংখ্যা প্রায় 1000 জনের মত। স্কুলের মোট আয়তন প্রায় সাত একর। সেখানে দীর্ঘদিন ধরেই জলাভূমি রয়েছে। আর এবার সেই পুকুরকে কাজে লাগিয়ে পড়ুয়াদের পুষ্টিকর মাছ-ভাত খাওয়ানোর আশায় মাছ চাষ শুরু করা হয়েছে। তবে এবারেই যে ওই পুকুরে প্রথম মাছ ছাড়া হয়েছে তা নয়, এর আগেও বহুবার মৎস্য দপ্তরের কাছে আবেদন করে মাছের চারা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, চলতি মরসুমে মাছের চারা ছাড়া হয়েছে। আগামী শীতে সেই মাছ ধরা হবে। তখন ছাত্র-ছাত্রীদের মিড ডে মিলে মাছের পিস দেওয়া হবে। স্বাভাবিকভাবেই পড়ুয়ারা মাছ পেলে একটু বেশি ভাত খায়। জলাশয় রক্ষা এবং ছাত্র-ছাত্রীদের পুষ্টি – দুই জিনিসকে মাথায় রেখেই নিয়মিত পুকুরটি চাষ করা হয়। এদিন মৎস্য দপ্তরের তরফ থেকে প্রায় 42 কেজি রুই কাতলা মাছের চারা জলাশয়ে ছাড়া হয়েছে। পুকুরের সামনে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে নিয়ে একটি ছোট্ট অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এই অনুষ্ঠানে এদিন সিউড়ী এক নম্বর ব্লকের মৎস্য আধিকারিক মৃনাল গঙ্গোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও মৎস্য দপ্তরের কর্মীরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এদিন এই বিষয়ে বীরভূম জেলার মৎস্য আধিকারিক রঞ্জিত মন্ডল বলেন, “করিধ্যার ওই স্কুল নিজেদের পুকুরে মাছ চাষ করার আবেদন করেছিলেন।

এদিন সেই আবেদনেই সাড়া দিয়ে প্রায় 2 হাজার পিস মাছ সরবরাহ করা হয়েছে। ছোট জেলায় মৎস্য চাষ প্রকল্প অনুযায়ী তাদেরকে মাছের চারা দেওয়া হয়েছে।” আধিকারিক জানান, মাছ দেওয়ার পাশাপাশি মাছের খাবার ও অন্যান্য সামগ্রী দেওয়া হবে। এদিন এই প্রসঙ্গে স্কুলের প্রধান শিক্ষক কল্যান ভট্টাচার্য্য বলেন, “বছরে 5-6 বার ওই পুকুর থেকে মাছ ধরা হয়। তারপর মিড ডে মিলে পড়ুয়াদের ভাতের সঙ্গে মাছের ঝোল দেওয়া হয়। বিগত বেশ কয়েক বছর থেকে আমরা এভাবেই পুকুর চাষ করি।”

স্কুল সূত্রে জানা গেছে, শুধু মাছ চাষ নয়, নিজেদের জমিতে উচ্ছে, বেগুন, লঙ্কা ইত্যাদি সবজিও চাষ করা হয় স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে। সেই সবজি ব্যবহার করা হয় ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যাহ্নকালীন আহারে। এছাড়াও প্রায় 100 প্রজাতির গাছের সম্ভারে তৈরি করা হয়েছে ভেষজ উদ্যান। যেখানে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে গাছ চেনানো হয়।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই স্কুলটি 15 আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে কলকাতা রেড রোডে নৃত্য পরিবেশনা করেছিল। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে স্কুলটিকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়। সবকিছু মিলিয়ে সিউড়ির করিধ্যা ইনস্টিটিউশন যে নিজেদের একটি নতুন পরিচয় তৈরি করে নিয়েছে, সেই বিষয়ে সকলেই একমত।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!