দলের অন্দরমহলে “ভাবমূর্তি নষ্ট” করা নেতাদের নিয়ে বিস্ফোরক বিধায়ক, চাঞ্চল্য তৃণমূলে কলকাতা রাজ্য হাওড়া-হুগলি September 12, 2019 2014 সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল 42 টি আসনের মধ্যে 34 টি আসন নিজেদের দখলে রেখেছিল। কিন্তু বিজেপি ঝড়ে 2019 এর লোকসভা নির্বাচনে থেমে গিয়েছে তৃণমূলের সেই বিজয়রথ। 42 এ 42 দখল করা তো দূর অস্ত, মোটে বাইশটা আসন পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে ঘাসফুল শিবিরকে। অপরদিকে বিজেপি বাংলা থেকে 18 টা আসন নিজেদের দখলে নিয়েছে। আর দলের এই খারাপ ফলাফলের পরেই দলীয় পর্যালোচনা বৈঠকে ফলাফল বিশ্লেষণে তৃণমূল উপলব্ধি করে যে, দলের ভেতরকার স্বজনপোষণ, কিছু নেতাদের দুর্নীতি এবং সাধারন মানুষদের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের জনসংযোগের অভাবের কারণেই তাদের বিভিন্ন লোকসভায় পরাজয় ঘটেছে।তবে তারপর থেকেই নিজের দলকে স্বচ্ছ করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের জনসংযোগ করানোর নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আর এমতাবস্থায় ফের অস্বস্তি বাড়ল রাজ্যের শাসকদলের। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলকে স্বচ্ছ করার যতই নির্দেশ দেন না কেন, তার যে কিছুই হচ্ছে না তা কার্যত নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়েই তুলে ধরতে দেখা গেল উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষালকে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - সূত্রের খবর, বুধবার কোন্নগরে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন এই তৃণমূল বিধায়ক। আর সেখানেই দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করে রাজ্য নেতৃত্বর ঢিলেমি মনোভাবকে কিছুটা দায়ী করতে দেখা যায় তাকে। এদিন তিনি বলেন, “দল এখানে যেভাবে চলছে তা সন্তোষজনক নয়। রাজ্য নেতৃত্তের উচিত এই ব্যাপারে পদক্ষেপ করা। আমি বহু জায়গায় গিয়ে দেখেছি, আমাদের নেত্রীর নানান কর্মকাণ্ডে তারা খুশি। কিন্তু এক শ্রেণীর জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সকলে সরব হচ্ছেন। ফলে এই মানুষগুলোকে শাস্তি দিলে জনসমর্থন আমাদের সঙ্গে আরও বেশি করে থাকবে। শাস্তির মুখে পড়ে এরা দল বদলে ফেললেও আখেরে দলের উপকার হবে।” অর্থ্যাৎ উত্তরপাড়ার এই তৃনমূল বিধায়ক বোঝাতে চেয়েছেন, দুষ্টু গরুর থেকে শূন্য গোয়াল ঢের ভালো। কিন্তু তার এই আবেদনে সাড়া দিয়ে রাজ্য নেতৃত্ব কি আদৌ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে! এখন তা নিয়েই তৈরি হয়েছে প্রশ্ন।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত মাসেই দলের জেলা কমিটির বিশেষ বৈঠকে দল পরিচালনা নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক। যেখানে তিনি অভিযোগ করেন যে, তাকে এবং আরও কয়েকজন বিধায়ককে হারিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আর তারপরই দল পরিচালনা সম্পর্কে এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রবীর ঘোষালের এহেন মন্তব্য তৃণমূল জেলা এবং রাজ্য নেতৃত্তের অস্বস্তি অনেকটাই বাড়িয়ে দিল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে প্রবীর ঘোষালের এহেন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এদিন পাল্টা এই ব্যাপারে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান জেলা তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ যাদব। তিনি বলেন, “বিচক্ষণ বিধায়কের অজানা থাকার কথা নয় যে কি কথা কোথায় বলা হবে! রাজ্য নেতৃত্বের ওপরেই তার যখন এত ভরসা, তখন অভিযোগটাও সংবাদ-মাধ্যমে না করে সেখানেই করতে পারতেন। এই ঘটনা অনভিপ্রেত।” সব মিলিয়ে দলের পরিচালন পদ্ধতি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে প্রবীর ঘোষালের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এখন তৃণমূল কোনো পদক্ষেপ নেয় কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। আপনার মতামত জানান -