এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > মহকুমার ঘোষনা করে বিপদ বাড়ালেন মমতা, টুপি পড়ালেন ধুপগুড়িকে! সামনে এলো আসল চিত্র!

মহকুমার ঘোষনা করে বিপদ বাড়ালেন মমতা, টুপি পড়ালেন ধুপগুড়িকে! সামনে এলো আসল চিত্র!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-ধুপগুড়িতে জিততে নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, ধুপগুড়িকে মহকুমা করে দেওয়া হবে। সেই মতো করেই সেই প্রতিশ্রুতি পালন করার কথা নবান্ন থেকে জানিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এতে তৃণমূল প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে, এই কথা ভাবলে ভুল হবে। আর তার পেছনে যথেষ্ট কারণও রয়েছে। অনেকে বলছেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে ধুপগুড়ির সমর্থন নিজেদের দিকে রাখতেই এই প্রতিশ্রুতি পূরণের কথা শুনিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে পরিকাঠামগত দিক থেকে কি সত্যিই ধুপগুড়িকে মহকুমাগত ভাবে স্বীকৃতি পাওয়া সম্ভব হবে! নাকি শুধুমাত্র ঘোষণা করে দিয়েই থেমে থাকবে রাজ্য সরকার! তা নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। ধুপগুড়ির মানুষ হয়তো মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাতে অত্যন্ত খুশি। তবে সেখানকার জনসাধারণকে যে বড়সড় টুপি পরালেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান, তাতে দ্বিমত নেই বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।

প্রসঙ্গত, সোমবার নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, তিনি বিদেশে যাচ্ছেন। বিদেশ থেকে  ফিরেই ধুপগুড়িকে মহকুমা করার জন্য যা যা করার তিনি করে দেবেন। আর এই খবর শুনেই রীতিমত আনন্দে ফেটে পড়েছেন ধুপগুড়ির মানুষ। তৃণমূলও হয়ত বাড়তি মাইলেজ পেয়েছে। তবে এখানেই মুখ্যমন্ত্রীর আষাঢ়ে গল্প ধরে ফেলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তার দাবি, এর আগে উত্তরবঙ্গে আলিপুরদুয়ার এবং কালিম্পংয়ে দুটি জেলা ঘোষণা করেছে এই রাজ্য সরকার। কিন্তু নামেই সেটা জেলা। এখনও পর্যন্ত সেখানে ডিএম অফিস, এসপি অফিস এবং পরিকাঠামোগত কোনো উন্নয়ন হয়নি। ফলে ধুপগুড়িকে শুধুমাত্র মহকুমা ঘোষনার কাজ হয়তো রাজ্য সরকার করে দেবে মুখ রক্ষার জন্য। কিন্তু বাস্তবে প্রশাসনিক দিক থেকে তারা কতটা লাভবান হবে! বিরোধী দলনেতার বক্তব্যের পর সেই প্রশ্নই ক্রমশ মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে।

বলা বাহুল্য, ধুপগুড়ি উপনির্বাচনের প্রচারে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ডিসেম্বরের 31 তারিখের আগেই এই এলাকাকে মহকুমা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। তবে তিনি কি করে এই কথা বলতে পারেন! তা নিয়ে বিস্তর চর্চা হয়েছে, জলঘোলা হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নবান্ন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধুপগুড়িকে মহকুমা করার ঘোষণা করে দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন যে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই শেষ কথা বলবেন। কিন্তু এই সমস্ত কিছু অন্য বিষয়। সাধারণ মানুষ চায়, তাদের এলিকার উন্নতি হোক। ফলে তৃণমূল কংগ্রেস সেই প্রতিশ্রুতিটা পালন করছে, এটা দেখে সকলেই আনন্দিত। তবে সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ শুধুমাত্র মুখের কথা। বাস্তবে ধুপগুড়ির মানুষ যে অন্ধকারে পড়েছিল, সেই অন্ধকারেই পড়ে থাকবে, সেই সম্ভাবনা এবং আশঙ্কা কিন্তু ক্রমশ ঘনীভূত হতে শুরু করেছে। যেখানে কার্যত আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।

পর্যবেক্ষকদের মতে, ভোটে জেতার জন্য কিছু মানুষকে কিছুদিনের জন্য হয়তো বোকা বানানো যায়। কিন্তু সারা জীবনের জন্য সব মানুষকে বোকা বানানো যায় না। বিশিষ্ট এক দার্শনিক এই কথা অনেকদিন আগেই বলে গিয়েছিলেন। ফলে লোকসভা ভোটে জেতবার জন্য হয়তো বিধানসভা উপনির্বাচনের দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিজের ঘোষণার মধ্যে দিয়ে পূরণ করার স্বপ্ন দেখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বাস্তবে যদি পরিকাঠামোগত উন্নয়ন এলাকার না হয়, যা বিরোধী দলনেতার বক্তব্য অনুযায়ী, আলিপুরদুয়ার এবং কালিংপংয়ে হয়েছে, সেই পরিণতি যদি ধুপগুড়িরও হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ কিন্তু তৃণমূলের এই বুজরুকি ধরে ফেলবে। তাই শুধু ঘোষণার জন্য ঘোষনা নয়, বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে প্রকৃত মহকুমার স্বীকৃতি পাক ধুপগুড়ি, এটাই চাইছেন এলাকাবাসী।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!