এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মন্ত্রী, বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি নিয়েও প্রবল ধাক্কা মমতার, ফের জয় পেলেন শুভেন্দু! মুচকি হাসছে বিজেপি!

মন্ত্রী, বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি নিয়েও প্রবল ধাক্কা মমতার, ফের জয় পেলেন শুভেন্দু! মুচকি হাসছে বিজেপি!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-বিধানসভার শেষ অধিবেশনের দিন মন্ত্রী বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর সেই বিল নিয়ে আজ আলোচনা করার কথা ছিল। তবে আলোচনা তো দূরের কথা, শেষ পর্যন্ত এই বিল নিয়ে যে বেশিদূর এগোতে পারবে না রাজ্যের শাসক দল। কিন্তু মানুষের স্বার্থকে বিঘ্নিত করে এই বিল শুধুমাত্র গায়ের জোরে বিধানসভায় আনার চেষ্টা করলেও, কেন সরকার তা পারছে না, কোথায় গিয়ে আটকালো গোটা পদ্ধতি? যে পরিস্থিতি বর্তমানে তৈরি হয়েছে, তাতে এই বিল নিয়ে প্রথম থেকেই বিরোধিতা করা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীই বড়সড় জয় পেয়ে গেলেন। অন্যদিকে পূজোর মরশুমে এই ব্যাপারে মুখ পুড়লো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। অন্তত তেমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কিন্তু কি কারণে হলো এই পরিস্থিতি?

প্রসঙ্গত, আজ বিশেষ অধিবেশনের ডাক দেওয়া হয়েছিল বিধানসভায়। সেই মতো সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত খবর পাওয়া যায় যে, যেহেতু এটা অর্থ সংক্রান্ত একটি বিলের মধ্যে পড়ে, বিধায়কদের মন্ত্রীদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি, তাই এই ব্যাপারে রাজ্যপালের স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক। কিন্তু রাজ্যপালের কাছে সেই বিল পাঠানো হলেও, তিনি এখনও পর্যন্ত তাতে সবুজ সংকেত দেননি। যার কারণে বিএ কমিটির বৈঠকের পর জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, এই বিল পেশ করা হবে বিধানসভায়। কিন্তু তা নিয়ে কোনো ভোটাভুটি এবং আলোচনা করা যাবে না। কারণ রাজ্যপালের অনুমোদন না থাকলে এই অর্থ সংক্রান্ত বিল নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না বিধানসভা। ফলে রাজ্যপালের এক টাইটেই রীতিমতো কাবু রাজ্য সরকার। গায়ের জোরে সব কিছু করার চেষ্টা করেছিল তারা। সাধারণ মানুষকে কষ্ট দিয়ে, ডিএ না দিয়ে, নিজেদের বেতন বৃদ্ধির পথে হেটেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কিন্তু প্রথমেই এতে আপত্তি জানিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এমনকি এই বিল নিয়ে বিধানসভায় আলোচনা হলে সেখানেও তারা প্রতিবাদ জানাবেন বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন। ফলে শেষ পর্যন্ত রাজ্যপাল সবুজ সংকেত না দেওয়ায় যেভাবে বিধানসভায় মুখ থুবড়ে পড়লো রাজ্য সরকার, তাতে আখেরে শুভেন্দু অধিকারীর জয় হলো বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিজেপির দাবি, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা নিজের অবস্থান অনেক আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন। রাজ্যের কিছু মানুষ খেতে পারছে না, আর মন্ত্রী বিধায়করা প্রচুর অর্থের বেতন নিয়ে বিলাসী জীবন যাপন উপভোগ করবেন, এটা মেনে নেওয়া যায় না। বাংলার অনেক চাকরিপ্রার্থীরা রাস্তায় বসে আন্দোলন করছেন, তাদের দিকে নজর দেওয়ার মত ক্ষমতা নেই রাজ্য সরকারের। অথচ মন্ত্রী বিধায়কদের হাজার হাজার টাকা বেতন বৃদ্ধি করে বিল আনার মত সময় রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের। তাই রাজ্যপাল যা করেছেন ঠিক করেছেন। সর্বগ্রাসী এই সরকারকে এই ভাবেই টাইট দেওয়া উচিত। মুখ্যমন্ত্রী যেখানে বলেন, কোষাগারে নাকি টাকা নেই, সেখানে মন্ত্রী বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধি হয় কি করে? বিধানসভার ভেতরে এমনিতেও এই ইস্যুতে বিরোধিতা করত বিজেপি। এই বিষয় নিয়ে তবে রাজ্যপাল কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত আলোচনা করার সুযোগ পাচ্ছে না রাজ্য। যার ফলে তাদের নৈতিক পরাজয় হয়ে গেল বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজ্যপালের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে কষ্টে থাকা মানুষগুলোর মুখে হাসি ফোটালো। তারা খুব কষ্টের মধ্যে ছিলেন যে, তাদের বেতন সামান্য বাড়াতে পারছে না রাজ্য সরকার, অথচ মন্ত্রী, বিধায়কদের এত বেতন বেড়ে যাচ্ছে! এটা কি করে সম্ভব? তাই শুভেন্দু অধিকারীও এর বিরোধিতা করেছিলেন। তবে ভেতরে আলোচনা করার সুযোগ না পেয়ে শেষ পর্যন্ত এই ব্যাপারে অন্তত উৎসবের মরশুমে মুখ পুড়লো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মানুষের দাবি নিয়ে যিনি আওয়াজ তোলেন, যিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেন, দিনের শেষে যে তারই জয় হয়, তা আবার স্পষ্ট হয়ে গেল। শেষমেষ শুভেন্দু অধিকারী যে বিষয়ে বিরোধিতা করেছিলেন, সেই বিষয়ে রাজ্য সরকার বিধানসভায় আলোচনা করতে না পারায় তাদের ব্যর্থতাই স্পষ্ট হয়ে গেল। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!