এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > তৃণমূলের ‘প্যাঁচে’ তৃণমূলেরই ‘ঘুম ওড়াতে’ দিল্লিতে বড়সড় পরিকল্পনায় মুকুল রায় – জানুন বিস্তারিত

তৃণমূলের ‘প্যাঁচে’ তৃণমূলেরই ‘ঘুম ওড়াতে’ দিল্লিতে বড়সড় পরিকল্পনায় মুকুল রায় – জানুন বিস্তারিত


রাজ্য রাজনীতিতে ইদানিং দুটি কথা খুব জনপ্রিয় হয়ে গেছে। এক – রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন আর দুই, বাংলায় গণতন্ত্র নেই! বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডল প্রথম ‘রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়ানোর’ তত্ত্ব বলেন। যা নিয়ে কম বিতর্ক হয় নি সেই সময়! অনুব্রতবাবু নিজের ব্যাখ্যায় জানিয়েছিলেন – রাজ্যে ৩৪ বছরের বাম শাসনে কোনো উন্নয়নই হয় নি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের দায়িত্ত্ব নেওয়ার পরেই এতো উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন – যে কেউ রাস্তায় বেরোলেই সেই উন্নয়ন দেখতে পাবেন।

কিন্তু, বিরোধীদের দাবি ছিল সম্পূর্ণ অন্য। এই ব্যাপারে বিরোধীদের বক্তব্য, রাজ্যে বিরোধীদের রাজনীতিটুকু করার সুযোগ দিতে রাজি নয় রাজ্যের শাসকদল। আর তাই, পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দিতে এবং সাধারণ মানুষকে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না দিতেই একদল সশস্ত্র বাহিনী রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রেখেছে শাসকদল। যারা প্রয়োজনে বিরোধীদের ও সাধারণ মানুষকে ভয় দেখানোর পাশাপাশিই মারধরও করছে – এরাই আসলে ‘রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা উন্নয়ন’!

আর এই অভিযোগের পাশাপাশি, বিরোধীদের দাবি, বাংলায় বর্তমানে গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। আর তার পরিপ্রেক্ষিতে অন্যতম বিরোধীদল বিজেপি বাংলায় ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রার’ ডাক দিয়েছিল। সেখানেও অভিযোগ, রাজ্যের শাসকদল প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে বিজেপির এই রাজনৈতিক কর্মসূচি বানচাল করার চেষ্টায় আছে। যদিও, তৃণমূল নেত্রী স্বয়ং ও তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যান্য নেতা-কর্মী-সমর্থক দাবি করে থাকেন – প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ গোটা বিজেপি দলটাই নাকি সবথেকে বেশি ‘অগণতান্ত্রিক’!

আর তাই নাকি কেন্দ্র সরকার থেকে বিজেপিকে হঠানো ও বাংলায় বিজেপির উত্থান আটকানো অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু এইসবের পরিপ্রেক্ষিতে এবার রাজ্যের শাসকদলকে ‘প্যাঁচে’ ফেলতে দিল্লিতে বড়সড় পরিকল্পনা করছেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। সূত্রের খবর, মুকুলবাবু, কৈলাশ বিজয়বর্গীয় ও এক শীর্ষস্তরের রাজ্যনেতা মিলে দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করতে চলেছেন। সেই বৈঠকে, মুকুলবাবুরা সুস্পষ্টভাবে অভিযোগ আনতে চলেছেন –

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

১. পঞ্চায়েত নির্বাচনে কিভাবে বিরোধীদের মনোনয়ন আটকানো হয়েছে
২. পঞ্চায়েত নির্বাচনে কিভাবে সাধারণ মানুষকে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেওয়া হয় নি
৩. পঞ্চায়েত নির্বাচনে কতজন কিভাবে রাজনৈতিক হিংসার বলি হয়েছেন
৪. পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে কিভাবে বিরোধীদের ভাঙিয়ে জোর করে বোর্ড গঠন করেছে শাসকদল
৫. এই দল ভাঙানোর কাজে কিভাবে পুলিশ ও প্রশাসনকে ব্যবহার করা হয়েছে
৬. কিভাবে বিজেপির রাজনৈতিক সভা করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না
৭. কিভাবে বিজেপি কর্মীদের নামে একের পর এক মিথ্যা মামলা করা হচ্ছে
৮. বিজেপির যে কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি কিভাবে আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগে আটকে দেওয়া হচ্ছে

গেরুয়া শিবিরের খবর – উপরের প্রতিটি অভিযোগেরই সুস্পষ্ট প্রমান সাথে নিয়ে যাচ্ছেন মুকুলবাবুর। তার থেকেও বড় কথা, পুলিশ ও প্রশাসনের কোন কোন অফিসার ও আমলাকে সুনির্দিষ্টভাবে এইসব রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে – তার সম্পূর্ণ তালিকা নিয়েই মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করবেন মুকুলবাবুরা। আর এসবের পরিপ্রেক্ষিতেই, অভিযোগ জানানো হবে, বাংলায় আসন্ন লোকসভা নির্বাচন যদি ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে’ করতে হয় তাহলে কোন কোন পুলিশ অফিসার ও আধিকারিকের উপর বিশেষ নজর রাখতে হবে।

সূত্রের খবর, এইখানেই শেষ নয় – এরপরে মুকুলবাবুরা একই অভিযোগ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে যাবেন। সেখানে জানানো হবে, বিজেপি একটি জাতীয় দল, বিজেপির রাজনৈতিক কর্মসূচিতে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি হবে এরকম কোনো অভিযোগ অন্য কোন রাজ্য সরকার বা সেই রাজ্যের সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশন করে নি। এমনকি, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনও বিজেপির রাজনৈতিক কর্মসূচির উপর কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করে নি। এই পরিস্থিতিতে, পশ্চিমবঙ্গে যেহেতু ‘আইনশৃঙ্খলার অবনতির’ কথা বারবার তোলা হচ্ছে এবং আদালতেও তোলা হচ্ছে – তাতে এটাই প্রমাণিত যে পশ্চিমবঙ্গের সার্বিক আইনশৃঙ্খলার অবস্থায় খুব খারাপ! আর তাই এই ব্যাপারে যেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সদর্থক পদক্ষেপ নেয়।

সবমিলিয়ে, গেরুয়া শিবিরের বক্তব্য – এতদিন তৃণমূল কংগ্রেস নাকি যে যে পদ্ধতিতে বিজেপিকে বাংলায় আটকানোর চেষ্টা করেছে – সেগুলোকেই ‘অস্ত্র’ হিসাবে ব্যবহার করে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে এখন থেকেই চাপ সৃষ্টি করা। যাতে করে বিরোধীদের করা অভিযোগের ‘রাস্তায় দাঁড়ানো উন্নয়নের’ রাস্তা একেবারে বন্ধ হয়ে যায় আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে। সবথেকে বড় কথা – পুলিশ মহল ও আমলা মহলেও চাপ সৃষ্টি করা নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য। তবে, বিজেপির এই পরিকল্পনা শেষপর্যন্ত কতটা কাজে আসে সেটা বা কেন্দ্রী নির্বাচন কমিশন ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কতটা গুরুত্ত্ব দেয়, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!