এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > অকাজের ঢেঁকি, আদালতের নির্দেশের পরেও মিনমিনে রাজ্যপাল!

অকাজের ঢেঁকি, আদালতের নির্দেশের পরেও মিনমিনে রাজ্যপাল!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরে এই রাজ্যে অনেক কিছু ঘটে গিয়েছে। কিন্তু বারবার নিজের অপদার্থতার প্রমাণ দিয়ে এই রাজ্যপাল বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি এই সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেবেন না। যখনই কিছু বড় মাপের ঘটেছে, তখনই শুধু সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে হালকা কিছু মন্তব্য করে এই সরকারের আরও সুবিধাই করে দিয়েছেন। যার ফলে বিরোধীদের বিভিন্ন নেতাদের কাছেও তিনি প্রশ্নের চিহ্নের মুখে পড়েছেন। অনেকে তো এটাও বলেন, যদি এই সময় জগদীপ ধনকর পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল থাকতেন, তাহলে তিনি বুঝিয়ে দিতেন, কত ধানে কত চাল। কিন্তু এই রাজ্যপালের দ্বারা কোনো কাজ হবে না।

আজকে আদালত যখন বলছে যে, শেখ শাহজাহানকে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। তারপরেও এই রাজ্যপালের মন্তব্য আবার একটা প্রশ্ন তুলে দিল। একজন সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে চোখের সামনে গণতন্ত্র ধ্বংস হচ্ছে, মহিলারা তার হাতে রাখি বেঁধে তিনি যখন সন্দেশখালিতে গিয়েছিলেন, সেখানে হাহাকার করেছিলেন, তারপরেও কেন রাজ্যপাল এত মিনমিন সুরে কথা বলছেন! তাহলে কি লাভ তাকে রাজ্যপাল করে! অর্থের খরচ ছাড়া তো আর কিছুই নয়। রাজভবনে বসে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে রাজ্যের মানুষের জন্য কাজ না করে বরঞ্চ এই সরকারকে আরও সুবিধা করে দিচ্ছেন সিভি আনন্দ বোস। কিন্তু সমালোচক মহল কেন এই কথা বলছে?

প্রসঙ্গত, তৃণমূল সন্দেশখালিতে কি পরিমান অন্যায় করেছে, তা গোটা রাজ্যের মানুষ দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু সেখানে গিয়েও সেখানকার মানুষের হাহাকার দেখেও এই রাজ্যপালের হুঁশ ফেরেনি। তিনি শুধুমাত্র দেখে এসে দিল্লিতে গিয়ে কি রিপোর্ট জমা দিয়েছেন, সেটা তিনি নিজেই জানেন। তারপর তার কোনো অ্যাকশন এই রাজ্যের মানুষ দেখতে পায়নি। যার ফলে একাংশ ধরেই নিয়েছেন যে, এই রাজ্যপাল মিডিয়ার প্রচার পাওয়ার জন্যই সেই সন্দেশখালিতে গিয়েছিলেন। আজকে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিও যখন জানিয়ে দিলেন যে, শাহজাহানকে গ্রেফতার করতে কোনো বাধা নেই, তখন এই রাজ্যপাল কড়া কোনো বার্তা না দিয়ে হালকা ভাবে একটা মন্তব্য করলেন।

যেন সন্দেশখালিতে কিছুই হয়নি। এই সরকারের যেটা মনোভাব, যেন সেটা তারও মনোভাব। তিনি বললেন যে, আদালত যখন বলে দিয়েছে, তখন অবশ্যই শেখ শাহাজাহানকে গ্রেফতার করা উচিত। কিন্তু কেন তিনি পুলিশ প্রশাসনের ওপর জোর খাটাচ্ছেন না? কেন নিজের অধিকার বলে তিনি এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ডেকে পাঠিয়ে বলতে পারছেন না যে, শাহাজাহানকে এই সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে! কেন তিনি সময়সীমা বেঁধে দিতে পারছেন না! তাহলে কি মানুষের চোখের জল মুখ্যমন্ত্রীর মত তিনিও উপভোগ করতে ভালোবাসেন? তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।

পর্যবেক্ষকদের মতে, এত কিছুর পরেও যখন রাজ্যপালের তরফে তেমন কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না, তখন ধরেই নিতে হবে যে, এই রাজ্যপালকে দিয়ে কাজের কাজ কিছু হবে না। তিনি যত পারছেন, এই সরকারের সুবিধে করার মতই কাজ করছেন। চোখের সামনে তৃণমূলের এত বড় অন্যায় দেখার পরেও তিনি সেটাকে লঘু করার চেষ্টা করছেন। তাহলে প্রশ্ন উঠেছে যে, এইরকম একজন রাজ্যপালকে রেখে কি লাভ হচ্ছে বাংলার মানুষের? মানুষ যখন প্রশাসনের কাছে সুবিচার পায় না, তখন তাদের একমাত্র রাস্তা তো রাজভবন। কিন্তু সেখান থেকেও যখন সুবিচার আসে না, তখন শেষ বিচারের জায়গা হয়ে দাঁড়ায় আদালত।

তাই বিরোধী দল থেকে শুরু করে রাজ্যের প্রতিবাদী মানুষের ভরসা এখন একমাত্র কলকাতা হাইকোর্ট। অতীতে বাম সরকারের আমলে যখন বিরোধী দল সুবিচার পেত না, তখন তারা রাজভবনে গিয়ে অভিযোগ জানাত। রাজভবন প্রয়োজন পদক্ষেপ নিত। কিন্তু বর্তমান সরকারের আমলে এই রাজভবন যেন তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে। রাজ্যপালের গতিপ্রকৃতি কিন্তু তেমনটাই বলছে। আজকে কলকাতা হাইকোর্ট এত বড় মন্তব্য করার পরেও, রাজ্যপাল যে হালকা সুরে সংবাদ মাধ্যমকে বিবৃতি দিলেন, তাতে প্রমাণ হয়ে গেল যে, সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে তিনি অন্তত বিচলিত নন। রাজ্যের মানুষ কাঁদছে কাঁদুক, অত্যাচারিত মানুষগুলোর হাহাকার দেখেও সন্দেশখালিতে নিজে গিয়েও, তিনি সেই সমস্ত বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। যার ফলে এই রাজ্যপালের চালাকিটাও কিন্তু এবার রাজ্যের মানুষ ধরে ফেললেন। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!