প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –শারদ উৎসবের আগে শুভেন্দু অধিকারীর উদ্যোগে তমলুকে বিতরণ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হল। যেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের বহু নেতা উপস্থিত ছিলেন। যা নিয়ে এবার তৈরি হয়েছে জল্পনা। বস্তুত, বেশ কয়েক মাস ধরেই শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল। দল এবং সরকারের কোনো কর্মসূচিতে উপস্থিত না হয়ে বরঞ্চ শুভেন্দু অধিকারী কার্যত ঘরে বসে গিয়েছিলেন।

শুধু তাই নয়, তার অনেক অনুগামীরা শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দিয়ে দাদার অনুগামী বলে নানা জায়গায় কর্মসূচি পালন করতে শুরু করেছিলেন। সাধারন মানুষকে সহযোগিতা হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। আর এবার শুভেন্দু অধিকারী নিজে বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচিতে উপস্থিত হলেন। তবে এই কর্মসূচিকে অরাজনৈতিক কর্মসূচি বলা হলেও, সেখানে একাধিক তৃণমূল নেতার উপস্থিতি ব্যাপক গুঞ্জন সৃষ্টি করেছে।

অনেকে বলছেন, বর্তমানে এই সমস্ত কর্মসূচিকে অরাজনৈতিক নাম দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী নিজের প্রভাব প্রতিপত্তি দেখিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। দলের সঙ্গে তার কিছুটা হলেও দূরত্ব বেড়েছে বলে নানা মহলে জল্পনা চলছে। তাই এই পরিস্থিতিতে এই সমস্ত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিতে দেখা যাচ্ছে তাকে। যেখানে দলের কোনো নাম নিচ্ছেন না তিনি।

জানা গেছে, এদিনের এই কর্মসূচিতে প্রতিটি ওয়ার্ডের তৃণমূল সভাপতি, কো-অর্ডিনেটর এবং অধিকাংশ নেতা উপস্থিত ছিলেন। অনেকে বলছেন, শুভেন্দু অধিকারীর প্রতি তাদের আস্থা জানাতেই তারা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন। তাহলে কি শুভেন্দু অধিকারী পৃথকভাবে কোনো মঞ্চ তৈরি করতে শুরু করেছেন? তাই এখন থেকেই অরাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সাধারন মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিচ্ছেন তিনি? যেখানে তৃণমূল নেতাদের প্রভাব প্রতিপত্তি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে।যদিও এই নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ অধিকারী পরিবার থেকে শুভেন্দু অনুগামীও।

কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর যখন দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে এবং তাকে নিয়ে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে, তখন তার পাশে একাধিক তৃণমূল নেতার থাকা নিঃসন্দেহে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের চাপকে বাড়িয়ে দিচ্ছে বলেই দাবি একাংশের।এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা আইএনটিটিইউসি সভাপতি দিব্যেন্দু রায় বলেন, “শুভেন্দুবাবু প্রতি বছর পুজোর আগে বস্ত্র বিতরণ করেন। কর্মসূচি রুপায়ন করেন। উনি তমলুক পৌরসভাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আমরা সকলেই সহযোগিতায় ছিলাম।” অন্যদিকে এই ব্যাপারে তমলুক পৌরসভার প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, “জামা কাপড় দেওয়া হয়েছে। শহরের কুড়িটি ওয়ার্ডে প্রায় সাড়ে চার হাজার জনকে নতুন বস্ত্র দেওয়া হবে। মন্ত্রীর নির্দেশে আমরা এই কর্মসূচি পালন করলাম। দলের অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন।”

তবে যে যাই বলুন না কেন, শুভেন্দু অধিকারী যখন দল এবং সরকারের থেকে কিছুটা দূরত্ব অবলম্বন করে নিজের মত করে সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা করছেন, তখন সেখানে একাধিক তৃণমূল নেতার উপস্থিতি নিঃসন্দেহে গুঞ্জন বাড়াতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর এই পৃথক চলার নীতি ভবিষ্যতে বঙ্গ রাজনীতিতে কতটা আলোড়ন ফেলে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।