এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > একদম শূন্য থেকে শুরু করে একজীবনে সত্যিই কি কোটিপতি হওয়া যায়? আছে কি কোন গোপন সহজ মন্ত্র?

একদম শূন্য থেকে শুরু করে একজীবনে সত্যিই কি কোটিপতি হওয়া যায়? আছে কি কোন গোপন সহজ মন্ত্র?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – আমাদের সকলের জীবনেই স্বপ্ন থাকে সৎপথে প্রচুর টাকা রোজগার করে কোটিপতি হওয়া। কিন্তু একই সঙ্গে আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে, সত্যিই কি সাধারণ নিম্নবিত্ত বা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসে নিজের ক্ষমতায় কোটিপতি হওয়া সম্ভব কিনা তাই নিয়ে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, কোটিপতি হওয়ার জন্য অনেক রাস্তাই রয়েছে, তবে সবথেকে জরুরি, আপনার অবশ্যই কোটিপতি হওয়ার জন্য জোরদার প্যাশন থাকতে হবে।

আপনার প্যাশন বা মনের জেদ না থাকলে আপনি কিছুতেই কোটিপতি হয়ে উঠতে পারবেন না। আপনার লক্ষ্য পূরণের জন্য মানসিক শক্তি বা অদম্য ইচ্ছা না পাওয়া পর্যন্ত আপনি কিছুতেই কোটিপতি হয়ে উঠবেন না। এই প্রসঙ্গে এরকমই শূন্য থেকে শুরু করে নিজের দমে কোটিপতি হয়ে ওঠা এক ব্যক্তির প্রেরণাদায়ক সত্যি ঘটনা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। তিনি স্থির করে নিয়েছিলেন, যাই হয়ে যাক তাঁকে কোটিপতি হতেই হবে। আর সেই লক্ষ্য অর্জন করতে অনেক উত্থান-পতনের সাক্ষী থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি কিন্তু কোটিপতি হয়েছিলেন।

তাঁর নাম ছিল সুমিত মালিক। তিনি তার জীবনে অনেক উত্থান-পতন দেখেছিলেন। তিনি অনেক ব্যবসা করেছেন। দেখেছেন প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত ব্যবসায়িক ব্যর্থতা। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি। আর তাই শেষ হাসি হেসেছিলেন তিনিই। সুমিত মালিক ছিলেন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। তাঁর বাবা অত্যন্ত মৃদুভাষী ও কঠোর পরিশ্রমী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের সমস্ত গুণ তার পিতার কাছ থেকে অর্জন করেছিলেন। সুমিত মালিক নিজেও ছিলে একজন শক্তিশালী ও পরিশ্রমী ব্যক্তি।

তিনি প্রথম ব্যবসা শুরু করেছিলেন। তিনি বইয়ের কাজ শুরু করেছিলেন। দিল্লির বাজার ঘুরে তিনি বই বিক্রি করতেন। দরিয়াগঞ্জ হল দিল্লির একটি বিশাল পুরাতন বইয়ের বাজার, সেখান থেকে বই কিনে দিল্লির কানাট প্লেস বাজারে বিক্রি করতেন তিনি। দীদীর্ঘদিন ধরে, তিনি সেই কাজটি অত্যন্ত অধ্যবসায়ের সাথে করেছিলেন। কিন্তু, তাঁর স্বপ্ন ছিল কোটিপতি হওয়ার এবং পুরাতন বইয়ের ব্যবসায় সঠিক লাভ না করায়, তিনি বিকল্প পথের কথা চিন্তা করতে শুরু করেন।

তিনি নিজের মনেই ভাবতে থাকেন কি করলে তিনি তাঁর কাঙ্খিত পথে সাফল্য পাবেন। কেননা তিনি মনে করতেন, মানুষের মনটি বিশাল সমুদ্রের মতো। এর মধ্যে অজস্র ধারণা রয়েছে। আমরা যখন মনের উপর চাপ দিই, তখন নতুন ধারণা উদ্ভূত হয় – আর তা অবশ্যই করে সাফল্যের পথে নিয়ে যায় মানুষকে। এরপর, সুমিত মালিক দ্বিতীয় ব্যবসা হিসাবে মোবাইলের ব্যবসা শুরু করেন। প্রথমদিকে মোবাইলের ব্যবসায় তার বেশ সাফল্য আসছিল।

তবে অনলাইন শপিং শুরু হওয়ার পরে তার ব্যবসার পরিধি ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছিল। কেননা গ্রাহকের কাছে খুব কম দামে অনলাইন মোবাইলে সহজ প্রাপ্য – তাই একসময় তার ব্যবসা বন্ধই হয়ে যায়। সুমিত মালিক সেই সময় কার্যত দিশাহীন হয়ে পড়েন। কেননা তিনি সংসারের দায়িত্ব তুলে নেওয়ার পরে, তাঁর বাবা ততদিনে কাজ ছেড়ে বাড়িতে বসে গিয়েছিলেন। এখন, এই অবস্থায় তিনি সংসার চালাবেন কি করে? এইসময় তাঁর বাবা তাঁকে বলেন, ভেঙে পড়লে হবে না! মন দিয়ে কাজ করে যেতে হবে, সাফল্য একদিন আসবেই।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সুমিত মালিক জানিয়েছেন, বাবা সেই সময় প্রবোধ দিলেও, তিনি ব্যবসার অবস্থা বা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা জানতেনও না। বা এই অধিনায়ক জীবনে কিভাবে ব্যবসায় সাফল্য পাওয়া যেতে পারে সেই সম্পর্কেও কোনো অভিজ্ঞতা তাঁর ছিল না। তাই সুমিত তাঁর মানসিক চাপ বাড়িতে না জানিয়ে, নতুন ব্যবসার কথা চিন্তা করতে থাকেন। এরপরেই তিনি গুজরাটে যান, সেখানে তিনি শাড়ির ব্যবসা শুরু করেন। এই উপলক্ষ্য তিনি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘোরেন।

কিন্তু, তাঁর সেই শাড়ির ব্যবসাতেও ব্যর্থতা নেমে এসেছিল। সেইসময় সুমিত তাঁর মা-বাবাকে জানান, তিনি কিছুদিনের জন্য উত্তরাঞ্চল থেকে ঘুরে আসতে চান। তাঁর মা যেহেতু নিজে উত্তরাঞ্চল থেকে ছিলেন এবং ছেলের ব্যবসার অবস্থা ভালো নয় আন্দাজ করেছিলেন – তাই মানসিক প্রশান্তি পাবার জন্য তাঁকে উত্তরাঞ্চল ভ্রমনের পরামর্শ দেন। কিন্তু সুমিতের মনে ভ্রমনের কোনো স্বপ্ন ছিল না – পরিবর্তে ছিল এক নতুন পরিকল্পনা।

সেই পরিকল্পনা মত তিনি দিল্লির আনন্দবিহার থেকে বাস ধরে ২৪ ঘন্টা যাত্রা শেষে উত্তরচঞ্চলের বাগেশ্বরে পৌঁছান। সেখানে তিনি একটি ঘর ভাড়া নেন। সেখানে একাকী বসে তিনি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতে থাকেন। একদিন তিনি একাকী নদীর ধরে বসে ভাবনাচিন্তা করছিলেন, মন ছিল খুব উদাস। সেইসময় হাঠৎ করে নদীর জলে চোখ যায়। সেখানে তিনি একটি অদ্ভুত আকৃতির পাথর দেখতে পান। এমন পাথর তিনি আগে কোনোদিন দেখেননি। পাথরটি দেখতে অনেকটা ভগবান গণেশের মত।

একটু ভালো করে খোঁজ করতেই তিনি আশেপাশে এই ধরনের বহু পাথর দেখতে পান। নদীর জলে ঘষে ঘষে সেগুলো বিভিন্ন শেপ নিয়েছে। তার কোনোটা দেখতে ভগবানের কোনো মূর্তির মত, কোনোটা আবার কোনো সুন্দর প্রতিকৃতি। তিনি এরকম অনেক পাথর সংগ্রহ করেন এবং তার ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। আর তারপরেই কামাল! দেশ-বিদেশ থেকে বিভিন্ন মানুষ ওই অদ্ভুত সুন্দর পাথরগুলো তাঁর কাছ থেকে কেনার জন্য যোগাযোগ করতে থাকেন।

সুমিত সেগুলো বিক্রি করে বেশ মোটা রকমের মুনাফা পান। দিনদিন ওই রকমের মূর্তি পাথরের চাহিদা বাড়তে শুরু করে। বিদেশ এবং ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলি থেকেও ক্রমবর্ধমান অর্ডার আসতে শুরু করে তাঁর কাছে। এরপর আর তাঁকে পিছন ফিরে তাকাতে হয় নি এবং তিনি কোটিপতি হয়ে উঠতেও বেশি সময় নেন নি। পরে তিনি হিমালয় অঞ্চলে একটি জলের সংস্থা চালু করেছিলেন এবং সেখানেও মিনারেল ওয়াটার বিক্রি করে প্রচুর মুনাফা করেছিলেন।

এই প্রসঙ্গে, সুমিত নিজে বলেন, জীবনে যতই চ্যালেঞ্জ আসুক, কখনই হাল ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়, তবেই সাফল্য আসবে। কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখে, আপনার কঠোর পরিশ্রম সেদিনই সফল হবে, যেদিন আপনি কোটিপতি হবেন। তাই কঠোর পরিশ্রম করে চলুন, সঠিক সময়ে আপনি ভাগ্যের সাহায্যও পাবেন, কাঙ্খিত সাফল্যও পাবেন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!