এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > 300 বছরের কাজ করে ফেলা দাবি যে সরকারের, তার সামান্য সমন্বয়ও নেই! ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা কলকাতা

300 বছরের কাজ করে ফেলা দাবি যে সরকারের, তার সামান্য সমন্বয়ও নেই! ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা কলকাতা


2011 সালে ক্ষমতায় আসার পরেই রাজ্যজুড়ে উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ ভর্তি হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বলে দাবি করে থাকে তৃণমূল কংগ্রেস। কিছুদিন যাওয়ার পরই বিভিন্ন জনসভা থেকে প্রশাসনিক বৈঠক মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, তাঁর সরকার যে কাজ করেছে, তা 100 বছরেও কেউ করতে পারবে না‌। এমনকি বর্তমানে গোটা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে যে উন্নয়নমূলক প্রকল্প চালু করা হয়েছে এবং যে কাজ করা হয়েছে, আগামী 300 বছরে এই নিয়ে কোনো কিছুই ভাবতে হবে না বলেও শোনা গিয়েছিল রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের গলায়।

তবে একটা দুর্যোগ, এবার মুখ্যমন্ত্রীর সেই বক্তব্যকে নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছে বলে দাবি করছে সমালোচক মহল। সম্প্রতি রাজ্যের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আমপান। তবে ঝড়ের চারদিন পেরিয়ে গেলেও, এখনও কলকাতার অনেক বাড়িতে বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়নি। অনেকেই পানীয় জলের পরিষেবা না পেয়ে হাহাকার করছেন। বিভিন্ন জায়গায় এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ তৈরি হতেও দেখা গেছে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে যে, সম্প্রতি নাকতলার বাসিন্দা সূর্যশিখা দাস নামে এক মহিলা এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার জন্য তৃনমূল মহাসচিব শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন।

এদিন সূর্যশিখাদেবী বলেন, “বিদ্যুতের জন্য আর কত অপেক্ষা করব! বাবার অক্সিজেন দরকার। কোনো পথ না দেখে এদিন পার্থবাবুর বাড়িতে গিয়েছিলাম। উনি দ্রুত সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করবেন বলে কথা দিয়েছেন।” এদিকে বিভিন্ন জায়গায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় এবং বিদ্যুৎ না আসায় বিক্ষোভ শুরু করেছেন সাধারণ বাসিন্দারা। এদিন এই প্রসঙ্গে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ করা মানুষজনের বক্তব্য, “আর ধৈর্য ধরতে পারছি না। এত আগে থেকে ঝড়ের কথা জানা সত্ত্বেও বিপর্যয় মোকাবিলায় এত দেরি! বিক্ষোভের পরেও দেখছি হুশ নেই। সমন্বয়ের এত অভাব কেন!”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে এদিন কসবার জিএস বসু রোড এবং গরফা মেইন রোডের একাংশে বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মী এবং পৌরসভা গেলেও, মানুষের বিক্ষোভে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় তাদের। অন্যদিকে উত্তর কলকাতার বেশ কিছু এলাকাতেও জল এবং বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক না হওয়ায়, মানুষের বিক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে। এদিন এই প্রসঙ্গে এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, “আলোহীন ঘরে জল নেই। কিন্তু কাকে বলব! এই সময় রাজনীতি ভুলে আমাদের সমস্যাটা একটু বুঝলে ভালো হয়।”

বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, রাজ্যে মা-মাটি-মানুষের সরকার ক্ষমতায় আসার প্রায় 9 বছর হয়ে গেল। আর ক্ষমতায় আসার পাঁচ বছরের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, তাঁর সরকার যে কাজ করে ফেলেছে, তা নিয়ে আগামী 300 বছর আর কিছু ভাবতে হবে না। কিন্তু তার পরেও একটা ভয়াবহ দুর্যোগের পর এতদিন কেন বিদ্যুৎ পরিষেবা বেহাল এবং পানীয় জল পাচ্ছেন না সাধারন মানুষ, তা নিয়ে এবার মানুষের তরফেই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের অন্দরে সমন্বয়ের অভাবের কঙ্কালসার চেহারাটা এত সহজে সামনে বেরিয়ে আসতেই!

সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে বিরোধীরা প্রত্যেকেই প্রশ্ন তুলছেন, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, সমস্ত রকম উন্নয়ন হয়ে গিয়েছে, সেখানে কেন একটা ভয়াবহ দুর্যোগের পরেই পরিষ্কার হয়ে গেল যে, রাজ্যে ব্যাপক পরিমাণে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে! তাহলে কি সরকার শুধুমাত্র মুখেই এই ধরনের কথা বলছে! আদতে ভেতরে ভেতরে রয়ে গিয়েছে সমন্বয়ের অভাব! যা দুর্যোগের ফলে প্রমাণিত হচ্ছে বলে দাবি বিরোধীদের। এখন পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে এবং আলোহীন বাসিন্দাদের ঘরে সুদিন ফিরবে! তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!