বৃদ্ধা ও তাঁর বৌমাকে মারধরের ঘটনায় প্রকাশ্যে চলে এল দুই নেতার দ্বন্দ্ব, চরম অস্বস্তিতে তৃণমূল! কলকাতা তৃণমূল রাজনীতি রাজ্য October 1, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – শাসকদলের অন্তর্কোন্দল নিঃসন্দেহে অস্বস্তিতে ফেলে ঘাসফুল শিবিরকে। বারবার তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে সেই দ্বন্দ্ব বন্ধ করবার জন্য কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কিছুতেই তা বন্ধ হতে দেখা যাচ্ছে না। এবার টালিগঞ্জ রোডের একটি বাড়িতে চড়াও হয়ে এক বৃদ্ধা এবং তার বউমাকে মারধরের ঘটনায় দুই তৃণমূল নেতার বিবাদ প্রকাশ্যে চলে এল। যে ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে 81 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলার জুঁই বিশ্বাসের স্বামী স্বরূপ বিশ্বাস সহ 5 জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। যে ঘটনায় নাম জড়িয়ে পড়ে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের। স্বভাবতই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর গন্ডগোলের ফলে শাশুড়ি এবং বৌমার ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনা এখন ব্যাপক অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। কিন্তু কেন এমন ঘটনা ঘটল! ঠিক কি হয়েছিল? জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত আটটার সময় টালিগঞ্জ রোডের ঝালদার মাঠ এলাকায় দীপু দাস নামে এক বাসিন্দার বাড়িতে 5 জন স্থানীয় যুবক চড়াও হন। যেখানে অভিযোগ ওঠে, তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলরের স্বামী স্বরূপ বিশ্বাসের নেতৃত্বে চার যুবক তাদের বাড়িতে চড়াও হয়েছিলেন। যেখানে বাড়িতে ঢুকে দীপুবাবুর মা নমিতা দাসকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তার ছেলে কোথায়! পরবর্তীতে ছেলে বাড়ি নেই শুনে নমিতাদেবী এবং তার ছেলের বউকে লাঠি রড দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকি ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করে চম্পট দেয় সেই যুবকরা। এদিকে তার বাড়িতে হামলা হয়েছে এই খবর পেয়ে দীপু দাস বাড়িতে এসে স্ত্রী এবং মাকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর অবশ্য তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - কেন এমনটা হল? এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন সেই দীপু দাস। তিনি বলেন, “আমি এখন স্বরূপ বিশ্বাসের সাথে থাকি না। এলাকার বিধায়ক এবং মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে থাকি। সেই কারণে ওরা আমাকে দীর্ঘদিন ধরে হুমকি দিচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে আমাকে না পেয়ে আমার স্ত্রী এবং মাকে মারধর করে চলে যায়” কিন্তু এই ভাবে কেন দীপুবাবুর বাড়িতে আক্রমণ চালানো হল? এতে তো শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে চলে এল! এদিন এই প্রসঙ্গে দীপু দাসের তোলা অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত স্বরূপ বিশ্বাস। তিনি বলেন, “দীপু দাসের বাড়িতে সন্ধ্যার পরে মদের আসর বসে। এই নিয়ে আপত্তি জানিয়ে স্থানীয় কয়েকজন যুবক ঠেক ভাঙতে গিয়েছিলেন। আমার নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ভুল খবর ছড়ানো হচ্ছে। এই ঘটনার সঙ্গে দলের ভেতরে গোলমালের কোনো সম্পর্ক নেই।” যদিও দীপুবাবুর বাড়িতে এইভাবে হামলা করার কারণে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “দীপুর মা এবং স্ত্রীকে অন্যায়ভাবে মারধর করা হয়েছে। কেউ আমার সঙ্গে থাকলেই তাকে হেনস্থা মারধর করা হচ্ছে। আমরা একই রাজনৈতিক দলের সদস্য। আমাদের মধ্যে এই বিরোধ থাকা একেবারেই কাঙ্ক্ষিত নয়।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিধানসভা নির্বাচনের আগে যদি এভাবে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের কারণে সাধারণ কর্মীদের পরিবারকে আক্রমণের শিকার হতে হয়, তাহলে শাসক দলের প্রতি মানুষের ভরসা ক্রমশ উঠতে শুরু করবে। যেভাবে টালিগঞ্জে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এল, তাতে ঘাসফুল শিবিরের অস্বস্তি অনেকটাই বৃদ্ধি পেল। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -