অতীতে বহুবার তাকে জেরা করার নামে নানা চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে দেখা যাচ্ছে রোজভ্যালি কর্তাকে। আর এবার সিবিআই এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের বিরুদ্ধে ফের আরও এক বিস্ফোরক অভিযোগ আনতে দেখা গেল সেই গৌতম কুন্ডুকে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রোজভ্যালি কর্তা গৌতম কুন্ডুকে জেরা করার প্রয়োজন রয়েছে বলে আদালতের কাছে আবেদন জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এবং ইডি। আর এরপরই সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে জেলে গিয়ে সেই গৌতম কুন্ডুকে জেরা করে আসা হয়। কিন্তু এই ঘটনার পরেই গত 26 জুন ব্যাঙ্কশাল আদালতে বিশেষ সিবিআই আদালতে বিচারকের কাছে 6 পাতার একটি চিঠি পাঠান গৌতম কুন্ডু।

জানা যায়, এই চিঠিতেই সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন তিনি। যেখানে তিনি লেখেন, গত 18 থেকে 21 জুনের মধ্যে সিবিআই তদন্তকারীরা তাকে জেরা করার সময় বেশ কিছু নামকরা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাম উল্লেখ করেন। যেখানে তাকে সেই সমস্ত রাজনৈতিক নেতাদের সাথে তার লেনদেন হয়েছিল বলে বয়ান দিতে চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু তার সঙ্গে সেই সমস্ত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ব্যবসা সংক্রান্ত কোনো লেনদেন ছিল না বলে জানিয়ে দিয়েছেন গৌতম কুন্ডু।

শুধু তাই নয়, সেই সমস্ত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নাম ইচ্ছাকৃতভাবে মামলায় ঢোকানোর জন্য তাকে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে চাপ দেওয়া হয় বলেও এদিন নিজের চিঠিতে অভিযোগ করেছেন রোজভ্যালি কর্তা। জানা যায়, বর্তমানে গৌতম কুন্ডু প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি রয়েছেন। আর প্রতিটি জেলের বন্দিরাই যাতে তাদের সমস্ত অভিযোগ জানাতে পারেন, তার জন্য প্রিজনার্স’ পিটিশন নামে একটা আলাদা কাগজ থাকে। আর সেই চিঠির মাধ্যমেই এদিন সিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্তাদের বিরুদ্ধে আদালতের কাছে বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন গৌতম কুন্ডু।

অন্যদিকে এদিন নিজের লেখা চিঠিতে অসুস্থ মা বিভাদেবীর সমস্ত নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী যাতে তিনি পৌঁছে দিতে পারেন তার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। আর যদি এটা না হয়, তাহলে তার মায়ের স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করতে তিনি বাধ্য হবেন বলেও গৌতম কুন্ডু জানিয়ে দিয়েছেন।

তবে সমালোচক মহলের একাংশ বলছেন, যে সিবিআই এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাদের বিরুদ্ধে এতদিন বিরোধীরা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করতেন, এদিন রোজভ্যালি কর্তা গৌতম কুন্ডুও সেই সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে জোর করে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নাম বলানোর অভিযোগ তুলে বিশেষ আদালতের কাছে চিঠি লেখায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কিছুটা হলেও যে ব্যাকফুটে পড়তে চলেছে, সেই ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা।