এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > উপনির্বাচনের ভরাডুবিতে চূড়ান্ত অবিশ্বাসের পরিবেশ! বিজেপিতে বাড়ছে অন্তর্দ্বন্দ্ব থেকে ডামাডোল

উপনির্বাচনের ভরাডুবিতে চূড়ান্ত অবিশ্বাসের পরিবেশ! বিজেপিতে বাড়ছে অন্তর্দ্বন্দ্ব থেকে ডামাডোল

গত লোকসভা নির্বাচনে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে 57 হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী। কিন্তু তার কয়েক মাস কাটতে না কাটতেই কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে কার্যত ভরাডুবির মুখ দেখতে হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টিকে। এই নিয়ে বিজেপির মধ্যে জল্পনার শেষ নেই। নির্বাচনে পরাজয়ের ছবি সামনে আসতেই উত্তর দিনাজপুরে ভারতীয় জনতা পার্টির চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে।

পরিস্থিতি এমনই যে দলের শীর্ষ নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে সরব হচ্ছে। সম্প্রতি কয়েকদিন আগে তিনটি বিধানসভা উপনির্বাচনে হারের কারণ অন্বেষণ করার জন্য রাজ্যের তিন জন সাধারণ সম্পাদককে পরাজিত তিনটি কেন্দ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য কমিটি। সেই মোতাবেক উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে পরাজয়ের কারণ অন্বেষণ করার জন্য ইতিমধ্যেই জেলায় পা রেখেছেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়।

আর জেলায় পা রাখতেই সাংগঠনিক দুর্বলতার ছবি তার কাছে একমাত্র পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জে পা দেওয়ার সাথে সাথেই জেলার শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাজুবাবু। কিছু নেতাদের সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে আলোচনা করতেও দেখা যায় রাজ্যের এই সাধারণ সম্পাদককে। জানা গেছে, কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা এলাকায় হারের কারণ অন্বেষণের পাশাপাশি দলের অভ্যন্তরীণ অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণেই পরাজয় কিনা, তারও পর্যবেক্ষণ করবেন রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়।

গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যদি দল বিরোধী কার্যকলাপ কোনো নেতার বিরুদ্ধে প্রমাণিত হয়, তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” যদিও ইতিপূর্বেই দেখা গিয়েছে, উত্তর দিনাজপুর জেলার প্রাক্তন সভাপতি তথা মালদা জেলার ভারতীয় জনতা পার্টির পর্যবেক্ষক শংকর চক্রবর্তী সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু মন্তব্য করেছেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এই বিষয়ে রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “তার সঙ্গে আমি কথা বলব। যদি দলের কোনো নেতা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেন, তবে তিনি যে স্তরেরই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” এদিকে উত্তর দিনাজপুরে দলের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়াতে শুধু যে শংকরবাবু সরব হয়েছেন, তাই নয়। উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ সেনও এর আগে সোশ্যাল মিডিয়াতে এমন কিছু পোস্ট করেছিলেন। যার ফলে দলীয় গোষ্ঠী কোন্দলের জল্পনা ছড়িয়ে ছিল।

তাছাড়াও এমনিতেই মন্ডল সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভারতীয় জনতা পার্টি রাজ্য জুড়ে কম বিক্ষোভ হয়নি। উত্তর দিনাজপুর জেলাও তার ব্যতিক্রম নয়। ইতিমধ্যেই সম্ভাব্য মন্ডল সভাপতি এবং জেলা সভাপতির নামকে কেন্দ্র করেও দলের মধ্যে ক্রমাগত চাপা উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই উত্তেজনা অন্যান্য জেলার মত দলীয় অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি থেকে বাইরে বেরিয়ে এসে রাস্তায় প্রকাশ পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি সূত্রে।

সেজন্যই শেষ পর্যন্ত উত্তর দিনাজপুরের ভারতীয় জনতা পার্টির সাংগঠনিক নির্বাচনের প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সেই কারণে ইতিমধ্যেই জেলা সফরে এসে উত্তরবঙ্গে ভারতীয় জনতা পার্টির পর্যবেক্ষক এবং রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে জেলা সভাপতি এবং অন্যান্য পদাধিকারী নিয়ে বৈঠক করেন। জানা যাচ্ছে, আজ শুক্রবার কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে যাবেন রাজুবাবু।

পরাজয়ের পরে সেখানে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই যে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে, তাকে দূরীভূত করতে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে বেশকিছু সময় দিতে হবে রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলে খবর। তবে উপনির্বাচনের পরাজয়ের কারণে দলীয় কর্মী সমর্থকদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “তিনটি উপনির্বাচন নিয়ে এমন ভাবার কারণ নেই। লোকসভা ভোটে উপনির্বাচনকে এক করে ভাবার কোনো কারণ নেই।”

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কালিয়াগঞ্জে ভারতীয় জনতা পার্টির পরাজয়ের পেছনে মূল্যবৃদ্ধি থেকে শুরু করে এনআরসি ইত্যাদি একটা বড় কারণ হলেও আসল কারণ কিন্তু দলীয় গোষ্ঠী কোন্দল। কারণ উত্তর দিনাজপুরে ভারতীয় জনতা পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে রীতিমতো বনিবনার অভাব রয়েছে। কাজেই 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে যদি দলীয় কোন্দল মেটাতে সক্ষম না হয় ভারতীয় জনতা পার্টি, সেক্ষেত্রে কিন্তু নিজেদের শক্ত ঘাঁটিগুলোতে বিজয় অধরাই থেকে যেতে পারে মনে করছেন একাংশ।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!