এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > NIOS প্রশ্নফাঁস কান্ডে মর্মান্তিক পরিণতি, প্রাথমিক শিক্ষক তথা পরীক্ষার্থীর মৃত্যু

NIOS প্রশ্নফাঁস কান্ডে মর্মান্তিক পরিণতি, প্রাথমিক শিক্ষক তথা পরীক্ষার্থীর মৃত্যু


রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের এক বৃহদংশের অভিযোগ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওপেন স্কুলিং বা NIOS কর্তৃপক্ষের অমানবিক ও অনৈতিক সিদ্ধান্তে, বর্তমানে রাজ্যের ১ লক্ষ ৬৯ হাজার প্রাথমিক, এস.এস.কে, এম.এস.কে ও বেসরকারী চাকুরীরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জীবন-জীবিকা আজ বিপন্ন। আর তাই, প্রশ্নফাঁস কাণ্ডের জেরে কর্তৃপক্ষের দুই ‘অমানবিক’ সিদ্ধান্তে চাকরি খোয়ানোর আতঙ্কে ভুগছেন রাজ্যের হাজার হাজার শিক্ষক। এই নিয়ে প্রথম থেকেই সরব শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ – ইতিমধ্যেই NIOS কর্তৃপক্ষের কাছে ডেপুটেশন দেওয়া হোক বা আদালতে মামলা বা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে ডেপুটেশন দেওয়া – সব পদক্ষেপই নিয়েছে সংগঠনটি।

কিন্তু, আজ বোধহয় প্রশ্নফাঁস কান্ডে সবথেকে মর্মন্তুদ ঘটনাটি ঘটে গেল। প্রশ্নফাঁস কাণ্ডের জেরে চাকরি হারাবার ভয়ে মারা গেলেন এক প্রাথমিক শিক্ষক তথা পরীক্ষার্থী। সূত্রের খবর, ভাঙর ১ নম্বর চক্রের দক্ষিণ কাশীপুর অঃপ্রাঃ বিদ্যালয়ের শিক্ষক হেমচন্দ্র নস্কর, বয়স ৫৫ বছর – গত ২১ শে জানুয়ারী রাত্রে মারা যান ৷ তিনি NIOS-র মাধ্যমে চাকুরী বাঁচাতে বাধ্যতামুলক প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন বাড়ী থেকে ৭০ কিমি দুরে প্রতাপনগর হাইস্কুল স্টাডি সেন্টারে। NIOS-র সিদ্ধান্ত ও পরীক্ষা বাতিলের বিপক্ষে উনি গত ২১ শে জানুয়ারী বিকাশভবন অভিযানে সামিলও হতে চেয়েছিলেন বলে তাঁর পরিবারের দাবি৷

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এই প্রসঙ্গে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক মইদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গত ২৫ শে ডিসেম্বর ৫০৬ ও ৫০৭ পরীক্ষা বাতিলের ফলে এবং পুনরায় একই দিনে ৬ ঘন্টা পরীক্ষাসূচী ঘোষণা হতে খুবই চিন্তিত ছিলেন হেমচন্দ্রবাবু। তিনি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে জানিয়েছিলেন, কোনোমতেই বাংলার শিক্ষকদের প্রতি এই বঞ্চনা তিনি মেনে নেবেন না। ফলে, এই নিয়ে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের প্রতিবাদে তিনি প্রথম থেকেই শামিল ছিলেন। কিন্তু, গত কয়েকদিন যাবৎ মানসিকভাবে প্রচন্ডরকম চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। রাস্তাঘাটে, বিদ্যালয়ে বা বাড়িতে – শুধুমাত্র এই বিষয়েই সকলের সাথে কথা বলতেন।

মইদুলবাবু আরও জানান, আমার সাথে শেষ কথা বলেছিলেন গত ২০ শে জানুয়ারী এবং গত ২১ তারিখে, বিকাশ ভবন অভিযানে সবার সাথে আসবে বলে কথাও দিয়েছিলেন। কিন্তু, জীবিকা হারাবার ভয়ে এতটাই চিন্তিত হয়ে পড়েন যে, হেমচন্দ্রবাবু গত ২১ শে জানুয়ারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারফলে, কর্মসুচীতেও আসতে পারেন নি। পরে গত ২১ শে জানুয়ারী রাতে হেমচন্দ্রবাবুর মৃত্যু হয়। তাঁর পরিবার এই অকালমৃত্যুর জন্য NIOS-র তুঘলকী সিদ্ধান্তকে দায়ী করছেন। একই সাথে ওনার এম.এ পাঠরতা কন্যা জানিয়েছেন, আর যাতে কোনো শিক্ষকের এই রকম মর্মান্তিক পরিণতি না হয়। সামগ্রিক ঘটনায় আমরা বাকরুদ্ধ, মর্মাহত।

হেমচন্দ্রবাবুর আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের তরফে তাঁর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস জানানো হয়েছে। সংগঠনের তরফে আজ সংগঠনের সভাপতি সুজিত দাস, রাজ্য সম্পাদক মইদুল ইসলাম, রাজ্য সহ সম্পাদক রতন দে,পারমিতা বড়ুয়া ,চৈতালী ঘোষ সহ আরও অনেকেই ওনার পরিবারের সাথে দেখা করতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এই মর্মান্তিক ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের তরফে অঙ্গীকারবদ্ধ প্রতিশ্রুতি – হেমচন্দ্রবাবুর ‘অধুরা লড়াই’ শিক্ষক স্বার্থে সফল করবই। পাশাপাশি রাজ্যের ১ লক্ষ ৬৯ হাজার শিক্ষক সহ রাজ্যের সকল শিক্ষক সংগঠন ও সুশীল সমাজকে হেমচন্দ্রবাবুর পরিবারের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!