রাজ্যপালের লাগাতার চাপের কাছে নতিস্বীকার প্রশাসনের! আজ সাক্ষাতে যাচ্ছেন 2 উচ্চপদস্থ আমলা কলকাতা রাজ্য December 18, 2019 সম্প্রতি ভারতবর্ষের সংসদভবনে পাশ হয়ে গেছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। যে বিল পাস হওয়ার সাথে সাথেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। যার ব্যতিক্রম নয় পশ্চিমবঙ্গও। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে সরব হয়ে একাংশ বিক্ষোভ সংগঠিত করেছেন। যার ফলে রাজ্যের কিছু অংশে তৈরি হয়েছে অচলাবস্থা। কোথাও স্টেশন পুড়িয়ে দেওয়া, ট্রেন অবরোধ, আবার কোথাও বা বাস অবরোধ করে পরিস্থিতিকে উত্তাল করে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। আর যত দিন যাচ্ছে, ততই রাজ্যের পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যেতে শুরু করেছে। আর এহেন পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে প্রথম থেকেই প্রশ্নচিহ্ন ছিল রাজভবনের মনে। যেভাবে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটছে, তার জন্য সোমবারই রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিকে রাজভবনে ডেকে পাঠিয়েছিলেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার। কিন্তু রাজ্যে সাংবিধানিক প্রধান এর আমন্ত্রণকে উপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছিল রাজ্যের দুই প্রশাসনিক কর্তাকে। পাল্টা এই অশান্তির ঘটনা নিয়ে আলোচনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজভবনে ডেকে পাঠান রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার। যার পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজ্যপালকে চিঠি দিতে দেখা যায় রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে। যা নিয়ে নবান্ন বনাম রাজভবনের সংঘাত আরও চরমে উঠতে শুরু করে। আর এই পরিস্থিতিতে এবার অবশেষে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - বস্তুত প্রথমে রাজ্যেরই অশান্তি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি কে নবায়ন রাজভবনে ডেকে পাঠানো হলেও তারা না আসায় সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী কে আলোচনার টেবিলে ডেকেছিলেন রাজ্যপাল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, মুখ্যমন্ত্রী আসবেন বলে আশা প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। যেখানে ট্যুইটে তিনি বলেছিলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। সেই কারণে গারুলিয়া প্রাক্তন চেয়ারম্যানের মৃত্যু বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যাচ্ছি না।” কিন্তু তা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রীকে রাজভবনে যেতে দেখা যায়নি। তবে এবার রাজ্যপালের চাহিদা মত 2 প্রশাসনিক কর্তাকে রাজভবনে পাঠাচ্ছে রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, আজ বুধবার বেলা তিনটেয় মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। এদিন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে রাজভবনে এই বার্তা পৌঁছানোর পরই এই বৈঠকের ব্যাপারে আশা প্রকাশ করতে দেখা যায় রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকারকে। ট্যুইটে তিনি লেখেন, “মুখ্যসচিব এবং ডিজিপি আসছেন। আমি এই বৈঠক সম্পর্কে আশাবাদী। সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের কাছ থেকে জানার পর সদর্থক কোনো পথ পাওয়া যাবে বলে আমি আশা করি।” বিশ্লেষকরা বলছেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাসের পর যেভাবে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি ছড়িয়েছে এবং যেভাবে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তাতে নিঃসন্দেহে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। তাই এই পরিস্থিতিতে প্রথম থেকেই রাজ্য সরকারের বিভিন্ন ব্যাপারে প্রশ্ন তোলা রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার এই অশান্তির ঘটনায় রাজ্যকে চেপে ধরেছিলেন। পাশাপাশি আলোচনায় বসারও আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তেমনভাবে সাংবিধানিক প্রধানের বক্তব্যকে গুরুত্ব না দিয়ে বরং সংঘাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে এবার রাজ্যের দুই প্রশাসনিক কর্তা রাজভবনে যাওয়ার কথা বলায় আশাবাদী অনেকেই। এখন রাজ্যপাল বনাম রাজ্য সরকারের এই আলোচনা কতটা সদর্থক হয় এবং এই আলোচনার পর রাজ্যের পরিস্থিতি শান্ত হয় কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। আপনার মতামত জানান -