এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > রাজ্যে সবুজ ঝড় বইলেও পরাজিত মমতা, নন্দীগ্রাম নিয়ে নাটকীয় টানাপোড়েন!

রাজ্যে সবুজ ঝড় বইলেও পরাজিত মমতা, নন্দীগ্রাম নিয়ে নাটকীয় টানাপোড়েন!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – প্রথম থেকেই গোটা রাজ্য শুধু নয়, গোটা দেশের নজর ছিল নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের দিকে। রাজ্যে পরিবর্তন হবে কিনা, তার দিকে যেমন তাকিয়েছিলেন সকলে, ঠিক তেমনি নন্দীগ্রামে যে দলের প্রার্থী জয়লাভ করবেন, তারাই রাজ্যের ক্ষমতা দখল করবে বলে মনে করেছিল বিশেষজ্ঞরা। সেইমত ভোটের ফলাফল প্রকাশের দিন সকলে কৌতূহলবশত কারা রাজ্যের ক্ষমতা দখল করছে, তার দিকে তাকিয়ে ছিলেন, ঠিক তেমনই নন্দীগ্রামের ফলাফলের দিকে নজর ছিল প্রত্যেকের।

প্রথমদিকে নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারী এগিয়ে থাকলেও, কিছু রাউন্ড পরেই এগিয়ে যেতে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মাঝে তৈরি হয় নাটকীয় পরিস্থিতি। হঠাৎ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পেছনে ফেলে 6 ভোটে এগিয়ে যান শুভেন্দু অধিকারী। আর এরপরই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শুরু হওয়া নন্দীগ্রাম নিয়ে গোটা রাজ্য তোলপাড় হয়ে যায়। অবশেষে বেশ কিছুক্ষণ পর টেলিভিশন মিডিয়ায় দেখতে পাওয়া যায় নন্দীগ্রামে বারোশো ভোটে জয়লাভ করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

স্বাভাবিক ভাবেই এর ফলে শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার যে কার্যত প্রশ্নের মুখে পড়ে গেল, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল সকলেই। কিন্তু সন্ধ্যে গড়াতে না গড়াতেই ফের একটি খবর সামনে আসে। যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নয়, বরঞ্চ 1953 ভোটে তৃণমূল নেত্রীকে হারিয়ে জয়লাভ করেছেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী বলে খবর পাওয়া যায়। আর এরপরই নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমে জয়লাভ করার পরেও, কেন আবার শুভেন্দু অধিকারীকে জয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হল?

ইতিমধ্যেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে গোটা ঘটনায় কারচুপি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে সন্ধ্যে থেকে নন্দীগ্রাম নিয়ে টানাপোড়েন চললেও, সার্ভারের সমস্যা থাকায় সঠিক তথ্য কমিশনের পক্ষে তুলে ধরা সম্ভব হচ্ছিল না বলে খবর। শেষমেষ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ নন্দীগ্রাম নিয়ে তথ্য প্রকাশ করেন রিটার্নিং অফিসার। যেখানে তিনি জানিয়ে দেন, নন্দীগ্রামে 1 লক্ষ 09 হাজার 673 টি ভোট পেয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।

অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পেয়েছেন 1 লক্ষ 07 হাজার 937 টি ভোট। আর মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় পেয়েছেন 6 হাজার 198 টি ভোট। অর্থাৎ প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে শুভেন্দু অধিকারী এগিয়ে। তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে যখন নন্দীগ্রাম নিয়ে পুনর্গণনার দাবি করা হচ্ছে, ঠিক তখনই তা সম্পূর্ণরূপে খারিজ করে দিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার।

জানা গেছে, এদিন নন্দীগ্রাম নিয়ে যখন দোলাচল শুরু হয়েছে, তখন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব জানিয়ে দেন, আপাতত সেখানে শুভেন্দু অধিকারী জয়লাভ করেছেন। তবে পুনর্গণনার আবেদন তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে করা হতে পারে বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। আর তখনই জানা যায়, যদি কোনো পুনর্গণনার আবেদন জমা পড়ে, তাহলে সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন রিটার্নিং অফিসার। আর এর কিছুক্ষণ পরেই রিটার্নিং অফিসার তথ্য পেশ করে জানিয়ে দেন, নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে জয়লাভ করেছেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী।

স্বাভাবিক ভাবেই রিটার্নিং অফিসার পুনর্গণনার দাবিকেও এবার খারিজ করে দেওয়ায় তৃণমূল কোন পদ্ধতি অবলম্বন করে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। কেননা গোটা রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ব্যাপক ভোটে জয়লাভ করলেও, তাদের মনে নন্দীগ্রাম নিয়ে যন্ত্রণা যে ক্রমশ বাড়ছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

প্রথমদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়ী বলে খবর সামনে আসার পরেও, যেভাবে শুভেন্দু অধিকারী জয়লাভ করলেন, তাতে তৃণমূলের একাংশ গোটা ঘটনায় কারচুপির অভিযোগ করতে শুরু করেছেন। পাশাপাশি পুনর্গণনার দাবি জানানো হলেও, যেভাবে তা খারিজ হয়ে গেল, তাতে শেষ পর্যন্ত তৃণমূল নন্দীগ্রাম নিয়ে বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।

ইতিমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি পরাজিত হয়েছেন নন্দীগ্রামে। তবে গণনায় কারচুপি হয়েছে বলে তার কাছে খবর পৌঁছেছে। তাই এর বিরুদ্ধে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হবেন। তৃণমূলের একাংশ বলছেন, রাজ্যে প্রচুর আসন দখল করেছে দল। কিন্তু মনের ভেতর একটা খটকা কাজ করছে, দিদি পরাজিত।

জয়ের আনন্দে সবাই মাতোয়ারা থাকলেও, একটা আসনে পরাজয় আমাদের সেই জয়ের আনন্দকে ফিকে করে দিচ্ছে। বিজেপির বিরোধী দলনেতার মুখ নেই। তাই জোর করে নন্দীগ্রামকে জেতানোর জন্য পরিকল্পনা করা হল। সব মিলিয়ে এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, রিটার্নিং অফিসার পুনর্গণনার দাবি খারিজ করে দিলেও কি করে তৃণমূল কংগ্রেস, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!