এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > রাজ্যপালের কথা শুনলেই বন্ধ বেতন, শিক্ষক দিবসে শিক্ষকদের চরম অপমান মমতার!

রাজ্যপালের কথা শুনলেই বন্ধ বেতন, শিক্ষক দিবসে শিক্ষকদের চরম অপমান মমতার!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে রাজভবনের বিজ্ঞপ্তিতে যে রাজ্য খুশি নয়, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তবে সেই ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে শিক্ষক দিবসের দিনেই যে শিক্ষকদের চরম অপমান করবেন মুখ্যমন্ত্রী, তা সত্যিই কল্পনার অতীত ছিল সকলের কাছে। রাজ্যপালের বিজ্ঞপ্তি মুখ্যমন্ত্রী নাই পছন্দ হতে পারে। কিন্তু শিক্ষক দিবসের মঞ্চ বেছে নিয়ে রাজ্যপালের কথা শুনলে যেভাবে বেতন বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান, তা দেখে রীতিমত হতবাক শিক্ষাবিদরা। অনেকে কটাক্ষ করে বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে এই ধরনের মন্তব্য নতুন কিছু নয়। এর আগেও তিনি অনেক রকম ফতোয়া দিয়েছেন। এবারেও তিনি আর এক নতুন ধরনের হুঁশিয়ারি দিলেন।

প্রসঙ্গত, এদিন শিক্ষক দিবসের মঞ্চ থেকে রাজ্যপালকে বেনজির আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমাদের এখানে একজন আছেন মাননীয় রাজ্যপাল। তিনিই কলেজ চালাবেন, স্কুল চালাবেন, বিশ্ববিদ্যালয় চালাবেন। আমি বলছি, চালান। কিন্তু নিয়ম করে চালান। বিজ্ঞপ্তি তৈরি করেছেন দুটো। আমিও বলছি, যদি কেউ রাজ্যপালের সেই বিজ্ঞপ্তি মানে এবং সেই অনুযায়ী কাজ হয়, তাহলে আমিও কিন্তু অর্থনৈতিক বাধা তৈরি করব। তারপর আপনি কি করে বেতন দেন, সেটাও আমি দেখব।” আর মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যে রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

বলা বাহুল্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ থেকে শুরু দুটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজভবন। যার মধ্যে অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যরাই শেষ কথা বলবে। এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কথা শুনতে বাধ্য নয় বিশ্ববিদ্যালয় গুলো বলেও জানিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। আর এতেই ক্ষেপে উঠেছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব আনার ভাবনার কথা জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। আর তার মাঝেই এবার শিক্ষক দিবসের মঞ্চ থেকে রাজ্যপালের কথা শুনলে বেতন বন্ধ করে দেওয়ার যে হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রী দিলেন, তা নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন একাংশ।

বিরোধীরা বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীর আসলে এখন বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি হওয়ার যোগার। ঘটা করে শিক্ষক দিবস পালন করছেন। কিন্তু শিক্ষকদের নিয়ে তার কি মনোভাব, তা তিনি মঞ্চ থেকে স্পষ্ট করে দিচ্ছেন। বুঝিয়ে দিচ্ছেন, তার কথা মতোই চলতে হবে শিক্ষক সমাজকে। তা না হলেই তাদের কণ্ঠরোধ করার মতো রাস্তাতে হাঁটতে দুবার ভাববে না রাজ্য সরকার। যাকে ফ্যাসিস্ট বলেই আক্রমণ করছেন বিরোধীরা।

পর্যবেক্ষকদের মতে, সংঘাত যে জায়গায় পৌঁছেছে, তাতে এমন একটা বিষয় যে হওয়ারই ছিল, তেমনটা আঁচ করেছিলেন সকলেই। কিন্তু বিষয়ের গভীরতা যে এত দূর পৌঁছে যাবে এবং মুখ্যমন্ত্রী যে এই শব্দ প্রয়োগ করবেন, তা হয়তো কট্টর বিরোধী নেতারাও ভাবনার মধ্যে আনেননি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সব কিছুকে এড়িয়ে গিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, রাজ্যে থাকলে, তার সরকারের বেতন নিলে, তার সরকারের কথা মতোই চলতে হবে। এক্ষেত্রে স্বাধীনচেতা মনোভাব যে তিনি এবং তার সরকার বরদাস্ত করবেন না, তা স্পষ্ট বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের। তবে শিক্ষক দিবসের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে এই উক্তি ভবিষ্যতে প্রশাসনিক পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে না তো! রাজ্যপাল এবার পাল্টা মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের জন্য কোনো বড় পদক্ষেপ নেবেন না তো! তা নিয়ে তৈরি হয়েছে তর্ক, বিতর্ক।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!