গত কয়েকদিন ধরেই ভারতের কাশ্মীর ইস্যুকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুল আনতে পাকিস্তান বিভিন্ন দেশের দরজায় ঘুরছে আর সাথ দিচ্ছে চীন। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলে এই দুই দেশের মিলিত প্রচেষ্টা এখনও পর্যন্ত সেভাবে কাজে আসে নি। প্রায় প্রত্যেক শক্তিশালী দেশই কাশ্মীর ইস্যুকে ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। আর এর পিছনে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দুর্দান্ত বিদেশ নীতিই – বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আর এবার ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ইসলামাবাদকে পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিলেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নিয়ে নাক না গলাতে। কাশ্মীর কোনোদিনই পাকিস্তানের ছিল না – তাই এই ব্যপারে যেন তারা নাক না গলায় – এই বার্তায় স্পষ্ট করে দিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার লাদাখে, ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (ডিআরডিও) একটি অনুষ্ঠান থেকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী কটাক্ষ করে পাকিস্তানকে বললেন, ‘আমি পাকিস্তানের কাছে প্রশ্ন করতে চাই, জম্মু ও কাশ্মীর কবেই বা পাকিস্তানের ছিল যে আপনারা এ নিয়ে কান্নাকাটি করেন?’

দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রীতিমত আক্রমণাত্মক সুরে জানান, ‘পাকিস্তান তৈরি হওয়ার পর থেকেই আমরা তার পরিচয়কে সম্মান করেছি। সেখানকার মানুষকে মর্যাদা দিয়েছি। কাশ্মীর সব সময়ই ভারতের অংশ। পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিবেশীসুলভ সুসম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী ভারত। কিন্তু তার জন্য ভারতে সন্ত্রাস ছড়ানো বন্ধ করতে হবে পাকিস্তানকে।’ প্রসঙ্গত, যেদিন থেকে ৩৭০ ধারা রদ হয়ে জম্মু কাশ্মীরের বিশেষ অধিকার খর্ব হলো, পাকিস্তান কার্যত সেদিন থেকে কাশ্মীর ইস্যুকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তোলার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তবে এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপুঞ্জের সমর্থন চাইতে গেলে তাদেরই মুখ পোড়ে। কারণ রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রায় সব দেশ জানিয়ে দেয় কাশ্মীর ইস্যু একান্তই ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। কিন্তু তাতেও পাকিস্তান না দমে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনে ভারতকে কাশ্মীর ইস্যুতে দোষী সাব্যস্ত করার। এই নিয়ে রাজনাথ সিং বলেন, “মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এস্পার আমাকে টেলিফোনে জানিয়েছেন, সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরের ‘বিশেষ সুবিধা’ তুলে নেওয়ার বিষয়টি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। শুধু তাই নয়, এই ইস্যুতে পাকিস্তানের পাশে কোনও দেশ নেই।”

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার পর, উপত্যকা একদম স্বাভাবিক অবস্থায় পৌঁছে গেছে। খুলে গেছে সেখানকার স্কুল, কলেজ, অফিস। থেমে গেছে গোলাগুলি, মিলিটারি বুটের কুচকাওয়াজ। এ ব্যাপারে সইদ শেহরিশ আসগর যিনি জম্মু ও কাশ্মীরের তথ্য ও জনসংযোগ দফতরের অধিকর্তা, তিনি জানান, “প্রতি দিনই কাশ্মীরের পরিস্থিতি ভাল হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ৩,০৩৭ টি প্রাথমিক এবং ৭৭৪টি মাধ্যমিক স্কুল সেখানে ফের চালু হয়েছে। হাইস্কুলগুলিও খুলতে চলেছে। এলাকাগুলিতে দোকান খোলার জন্য ব্যবসায়ীদের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে।”