রাজ্য সরকার ত্রাণ থেকে ভোটের ফান্ড জোগাড় করছে! ভয়ঙ্কর অভিযোগ রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের কলকাতা রাজ্য November 17, 2019 বিগত কয়েকদিন যাবত বুলবুল সংক্রান্ত ব্যাপারে তৃণমূল সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি সমালোচনায় মুখর হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি অভিযোগ করেছেন ত্রাণ নিয়ে। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল এলাকা পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট দিলেই রাজ্য সরকারকে টাকা পাঠানো হবে। কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আসায় রাজ্যের তরফ থেকে তৃণমূল সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখিয়েছে বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে রাজ্য বিজেপি। এদিন আবারো রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ শাসক শিবিরের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিলেন। শনিবার দুপুরে রাজ্য বিজেপি দপ্তরের সাংবাদিক বৈঠক করে দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করেন, বুলবুলের ক্ষতিপূরণ থেকে তৃণমূল আগামী ভোটের ফান্ড জোগাড় করার চেষ্টায় রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের যে তালিকা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো হচ্ছে, তা থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা যাবে বলে দাবি করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। এদিন তৃণমূলকে আক্রমণ করতে গিয়ে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘বুলবুলের ত্রাণ নিয়ে রাজনীতি করছে তৃণমূল। বিজেপি কর্মীদের ত্রাণ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বিডিও বলছেন, লিস্টে নাম নেই। আমাদের মনে হচ্ছে, বুলবুল নিয়ে তথ্য লুকাতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই হয়তো রাজ্যপালকে তথ্য জানাচ্ছেন না। তারপর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের আটকানো হচ্ছে। এতেও মনে হচ্ছে তথ্য লুকানোর চেষ্টা হচ্ছে। এছাড়া ত্রাণসামগ্রী নিয়েও দলবাজি হচ্ছে।” এরপর তিনি মুখ্যমন্ত্রীর দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেছেন যে, “মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্ন করতে চাই, উনি কি শুধু তৃণমূলের মুখ্যমন্ত্রী? মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, 5 লক্ষ বাড়ি ভেঙেছে। কিন্তু দিল্লির মিটিংয়ে রাজ্যের প্রতিনিধিরা বলছেন এক লক্ষের কিছু বেশি। আমরা দাবি করছি, ক্ষতিগ্রস্তদের ও ক্ষয়ক্ষতির তালিকা বিডিও অফিস থেকে জানানো উচিত। দুই 24 পরগণা, মেদিনীপুর, দাঁতন, কাঁথি, দিঘাতে সার্ভে করে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ির ছবি বিডিও অফিসে রাখা হোক না হলে প্রাণ বন্টন ঠিকমতো হবে না। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির তালিকা বাড়িয়ে বলে ভোটের জন্য কি ফান্ড জোগাড় করছে তৃণমূল?’ এদিন রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের বিরোধিতা প্রসঙ্গেও দিলীপ ঘোষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘রাজ্যপাল বেরোলে অনেক অপ্রিয় সত্য সামনে এসে পড়বে। তাই তৃণমূল রাজ্যপালকে আটকে রাখতে চাইছে। রাজ্যপালকে হেলিকপ্টার না দেওয়ার কি আছে? মেলা, খেলা, রসগোল্লা উৎসবেও তো কত খরচ হয়। মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টার থেকে বাড়ি গুনে নিলেন। উনি যদি হাওয়া খেতে পারেন রাজ্যপালের না খাওয়ার কি আছে।’ আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন সকালে সল্টলেকে পার্শ্ব শিক্ষকদের অবস্থান বিক্ষোভে পৌঁছেছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেখানে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বারবার এনাদের সঙ্গে অমানবিক ব্যবহার করেছে সরকার। অধিকার তো দিচ্ছেই না আন্দোলন করার অধিকারটাই ছিনিয়ে নিচ্ছে। তাঁরা হাইকোর্ট থেকে জাজমেন্ট নিয়ে এসেছেন আন্দোলন করার অধিকার নিয়ে। প্রাথমিক সুবিধাগুলি দেওয়া নিয়ে হাইকোর্ট বলেছে, তা সত্বেও তাঁদের জন্য শৌচালয় ও জলের ব্যবস্থা কিছু করেনি। আমাদের বিজেপির হেলথ সেল ও টিচার সেল যতটা পারছে সাহায্য করছে। আগামীতেও আমরা যতটা পারব করব। সরকার তাঁদের অধিকার কবে দেবে জানিনা। তবে আমি আশা করব অন্তত আন্দোলন করার অধিকারটা যাতে তাঁদের দেওয়া হয়।’ এদিন পার্শ্বশিক্ষকদের অবস্থান-বিক্ষোভ থেকে দিলীপ ঘোষকে জানানো হয় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁদের সমস্যা সমাধানের জন্য কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করার কথা বলেছেন। একথা শুনে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমি এখানকার শিক্ষকদের হয়ে দিল্লিতে যাব। উনি তো দিল্লিতে পৌঁছাতে পারেন না। এখানে বন্দী হয়ে আছেন। উনি কমপক্ষে কেন্দ্রীয় সরকার পার্শ্ব শিক্ষকদের জন্য যে 60 শতাংশ টাকা দিচ্ছে তা দিয়ে দিন। ওখান থেকে পার্থবাবু যেন কাটমানি না খান।’ রাজ্য বিজেপির সভাপতির অভিযোগের ভিত্তিতে এখনো পর্যন্ত তৃণমূলের তরফে কোন বিবৃতি রাখা হয়নি। তবে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে শাসকদলের পক্ষ থেকে। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, 2021 এর বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে ততই রাজনৈতিক শিবির থেকে এ ধরনের কথাবার্তা শোনা যাবে একে অপরের বিরুদ্ধে। আপাতত সবার নজর 2021 এর বাংলা দখলের লক্ষ্যে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বিজেপি এখন নিজেদের অবস্থানকে আরও সুবিধাজনক জায়গায় নিয়ে যেতে চলেছে। আপাতত সমগ্র পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে রাজনৈতিক মহল। আপনার মতামত জানান -