এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির সংগঠনে আসাতেই গ্রেপ্তার? দুর্নীতি মামলায় সঞ্জীবের ৪ দিনেই জামিনে প্রশ্ন!

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির সংগঠনে আসাতেই গ্রেপ্তার? দুর্নীতি মামলায় সঞ্জীবের ৪ দিনেই জামিনে প্রশ্ন!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার মাত্র চারদিনের মাথাতেই জামিন পেয়ে গেলেন সরকারি কর্মচারী পরিষদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা সঞ্জীব পাল। আর তারপরেই রাজ্য-রাজনীতিতে আরও বড় করে উঠে এল ‘প্রতিহিংসার’ প্রসঙ্গ। গেরুয়া শিবির তো এই নিয়ে ইতিমধ্যেই ঝড় তুলতে শুরু করে দিয়েছে। আর পুজোর আগে এই নিয়ে ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ ই অক্টোবর বড়সড় আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল বিজেপি প্রভাবিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনের নেতা সঞ্জীব পালকে। রাজ্য পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখার অফিসাররা শুক্রবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করেন। দুর্নীতি দমন শাখাসূত্রে সেই সময় জানা গিয়েছিল, ভুড়ি ভুড়ি অভিযোগ উঠছিল সঞ্জীববাবুর বিরুদ্ধে। আর তাই, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়।

সেখানে সদর্থক উত্তর না পেয়ে সঞ্জীববাবুকে গ্রেপ্তারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এরপর আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তাঁকে নিজেদের হেফাজতে চাইলে আদালত ৪ দিনের জন্য তা মঞ্জুর করে। এরপরে গতকাল তাঁকে আদালতে পেশ করে পুলিশ আরও কিছুদিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চাইলে, তা নাকচ হয়ে যায়। বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন এই মামলায় এমন কোনো গুরুতর বিষয় নেই যে, সঞ্জীববাবুকে আরও কিছুদিন হেফাজতে রাখার প্রয়োজন আছে।

এরপরেই ব্যক্তিগত ১০ হাজার টাকার বন্ডে তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়ে যায়। সঙ্গে তাঁকে সপ্তাহে ১ দিন করে থানায় হাজিরা দেওয়ার পাশাপাশি, তদন্তে দুর্নীতিদমন শাখাকে সাহায্যের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। আর আদালতের এই রায়ের পরেই কার্যত সরব হয়েছে গেরুয়া শিবির। তাদের বক্তব্য, একদা খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীর অত্যন্ত স্নেহধন্য ছিলেন সঞ্জীব পাল। ছিলেন তৃণমূলের সরকারি কর্মচারী সংগঠনের কোর কমিটির মেম্বার। বসতেন মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে।

গেরুয়া শিবিরের আরও বক্তব্য, কিন্তু তৃণমূল সরকারের সরকারি কর্মচারী বিরোধী পদক্ষেপ ও মানসিকতার বিরুদ্ধে তৃণমূলে থাকতেই সরব হয়েছিলেন সঞ্জীববাবু। আর তাই নাকি ‘শাস্তিমূলক’ পদক্ষেপ হিসাবে তাঁকে নবান্ন থেকে সুদূর হলদিয়ায় বদলি করে দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরেও ‘চুপ থাকেননি’ সঞ্জীববাবু। আর তাই তাঁর বদলি হয়ে যায় সুদূর আলিপুরদুয়ারে। আর এরপরেই তৃণমূল শিবিরের মায়া কাটিয়ে গত বছর আগস্ট মাসে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান সঞ্জীববাবু।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

গেরুয়া শিবিরের বক্তব্য, এরপর থেকেই সঞ্জীববাবুকে বিভিন্নভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যার শেষতম পর্যায় ছিল এই দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার। এই ব্যাপারে সঞ্জীববাবু যে কর্মচারী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, সেই সরকারি কর্মচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশীষ শীলের সঙ্গে প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার তরফে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি আগেও বলেছি, আবারো বলছি – সঞ্জীব পালের বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তা সম্পূর্ণরূপে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগতস্তরে। সুতরাং ব্যক্তিগতভাবেই তাঁকে নিজেকে নির্দোষ প্রমান করতে হবে।

দেবাশীষবাবুর বক্তব্য, কিন্তু একই সঙ্গে বলব, সঞ্জীব পালকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী পরিষদে যোগ দেওয়ার মাশুল দিতে হচ্ছে। কোনোদিন শুনেছেন কোন দুর্নীতি মামলায় কেউ গ্রেপ্তার হওয়ার মাত্র চার দিনের মধ্যেই জামিন পেয়ে যাচ্ছেন? অর্থাৎ আদালতও বুঝে গেছে – এই মামলায় যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলি মোটেই গুরুতর নয়! গত সাত বছর কোনো অভিযোগ, কোনো তদন্ত নেই – কিন্তু যে মুহূর্তে সরকারি কর্মচারী পরিষদে যোগ দিল, সেই মুহূর্ত থেকে গ্রেপ্তারির চেষ্টা শুরু হয়ে গেল!

দেবাশীষবাবু আরও বলেন, সঞ্জীব পালকে এর আগেও বন্যপ্রাণী মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেপ্তারের চেষ্টা হয়েছিল, পারে নি। তাই এবারে অনেক আঁটঘাট বেঁধে আসরে নেমেছিল, কিন্তু তারও যে সারবত্তা নেই – মাত্র ৪ দিনেই আদালত জামিন মঞ্জুর করায় প্রমাণিত। আসলে, বাংলার বর্তমান সরকার চূড়ান্ত রকমের সরকারি কর্মচারীদের স্বার্থের পরিপন্থী। আর সেই সরকারের ঘুম উড়িয়ে দিচ্ছে সরকারি কর্মচারী পরিষদ। যার সবথেকে বড় প্রমান লোকসভা নির্বাচনে ৪২ টির মধ্যে ৩৯ টি আসনেই বিজেপি প্রার্থীরা পোস্টাল ব্যালটের ফলে জয়ী হন।

দেবাশীষবাবু জানিয়েছেন, বিভিন্ন সংগঠনের অন্যতম শীর্ষনেতারা বুঝতে পারেন এই সরকারের কাছ থেকে দাবিদাওয়া আদায়ে ঝড় তুলতে পারে একমাত্র পরিষদ। তাই দলে দলে তাঁরা যোগ দিচ্ছেন আমাদের সংগঠনে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীও খুব ভালোভাবে বুঝে গেছেন কর্মচারীদের স্বার্থে আপোষহীন লড়াই চালিয়ে যাবে পরিষদ। তাই তো প্রথমে আমাকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের চেষ্টা হল, আর এইবার সঞ্জীব পালকে। কিন্তু, এইভাবে কি আন্দোলন-প্রতিবাদ স্তব্ধ করা যায়?

দেবাশীষবাবু সুনির্দিষ্টভাবে বলেন, প্রশাসন যত এরকম প্রতিহিংসাপরায়ন মনোভাব দেখাবে, সরকারি কর্মচারী পরিষদের মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীরা তত বেশি ঐক্যবদ্ধ হবেন। ডিএ দেবে না, পে-কমিশনের নামে তীব্র বঞ্চনা হবে – আর আমাদের মুখ বুজে তা মেনে নিতে হবে? দেওয়াল লিখন স্পষ্ট, সরকারি কর্মচারীদের ভাতে মারার এই চক্রান্ত পরিষদ ব্যর্থ করে দেবেই। আর তাই বদলি সন্ত্রাস, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের চেষ্টার মাধ্যমে আমাদের মুখ বন্ধের চেষ্টা চলছে। কিন্তু, যতই দমনপীড়ন হোক – সরকারি কর্মীদের ন্যায্য পাওনা তাঁদের হাতে তুলে না দেওয়া পর্যন্ত সরকারি কর্মচারী পরিষদ থামছে না, থামবে না।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!