এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন করতেই বড়সড় ভাঙনের মুখে শিবসেনা! হাসি ক্রমশ চওড়া হচ্ছে বিজেপির

মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন করতেই বড়সড় ভাঙনের মুখে শিবসেনা! হাসি ক্রমশ চওড়া হচ্ছে বিজেপির


মহারাষ্ট্রে ইতিমধ্যেই সরকার গঠন নিয়ে অনেক নাটকের সাক্ষী হয়েছে দেশ। একসময় হিন্দুত্বের রাজনীতি করতে সর্বশীর্ষে থাকত যে শিবসেনা, সেই শিবসেনাই ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গ ছেড়ে এনসিপি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠন করেছে। মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন শিবসেনা প্রমুখ উদ্ধব ঠাকরে। কিন্তু কেন এই ভাঙ্গন? বিজেপির সঙ্গ ছাড়ার সময় শিবসেনা প্রমুখ উদ্ধব ঠাকরে বলেছিলেন, “নির্বাচনের আগেই ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গে তাদের ফিফটি-ফিফটি সমঝোতা হয়েছিল।”

অর্থাৎ রাজ্যে এনডিএ সরকার গঠন হলে আড়াই বছর বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী এবং বাকি আড়াই বছর শিবসেনার মুখ্যমন্ত্রী থাকবে। কিন্তু নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতিতে ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে সেই চুক্তি না মানতে চাওয়াতেই জোট ভেঙে অন্যদের সঙ্গে জোট করে সরকার গড়তে বাধ্য হয়েছে শিবসেনা। তবে ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে কিন্তু উদ্ধব ঠাকরের এই মন্তব্যকে মেনে নেওয়া হয়নি।

তাদের তরফ থেকে স্পষ্ট অভিযোগ, সরকার গড়ার চাবিকাঠি শিবসেনার হাতে রয়েছে বুঝতে পেরেই শেষ মুহূর্তে ব্ল্যাকমেইল করা হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টিকে। যাইহোক, এসব ঘটনার যবনিকার পতন হয়ে ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রে গঠন হয়ে গেছে শিবসেনা, কংগ্রেস, এনসিপি জোট সরকার। কিন্তু হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি করা শিবসেনা কর্মীদের পক্ষে যে এই জোটকে মেনে নেওয়া সম্ভব হয়নি, তা প্রকাশ পাওয়া গেল বুধবার। শিবসেনার অস্বস্তি চরমভাবে বাড়িয়ে অন্ততপক্ষে 400 জন শিবসৈনিক যোগ দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টিতে।

সূত্রের খবর, বুধবার বিকেলবেলায় মুম্বইয়ের ধরাভি অঞ্চলের ভারতীয় জনতা পার্টি আয়োজিত একটি কর্মী সভায় উপস্থিত হয়ে দলবদল করেন 400 জন শিবসৈনিক। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইস্তফা দেওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ইস্তফা দেওয়ার সময়ই দেবেন্দ্র ফড়নবিশ ইঙ্গিত করেছিলেন, সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে থাকা যে তিনটি দল একত্রিত হয়ে জোট সরকার গঠন করল, তার মেয়াদ দীর্ঘদিনের হবে না। 26 নভেম্বর মুম্বইয়ের হোটেলে 162 জন বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে যদিও বিজেপির সব আশা-আকাঙ্ক্ষাতে জল ঢেলে দিয়েছিল শিবসেনা কংগ্রেস এবং এনসিপি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু সেই জয় যে তাদের সাময়িক জয়, তা বলতে বাকি রাখেনি ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্ব। আর বিজেপির সেই উক্তিকে সত্যি করেই এদিন 400 জন শিবসৈনিকের দলবদল যে মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে যথেষ্ট আলোচনার বিষয় হতে চলেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। রাজনৈতিক মহলের মতে, শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বাল ঠাকরে চিরকালই হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি করার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। বালাসাহেবের সবকটি সাক্ষাৎকারেই কংগ্রেসকে কার্যত “দেশদ্রোহী” বলে মন্তব্য করেছেন শিবসেনা প্রতিষ্ঠাতা।

শুধু তাই নয়, তিন তালাক থেকে শুরু করে সম নাগরিক সন্ধিকা, রাম মন্দির থেকে শুরু করে, ধারা 370 এর অবলুপ্তি, এছাড়াও ভারতীয় জনতা পার্টির নীতি মোতাবেক রাষ্ট্রীয় নাগরিকপঞ্জি পর্যন্ত সব বিষয়েই বিজেপির সঙ্গে একমত ছিলেন বালাসাহেব। একটি সাক্ষাৎকারে তাঁকে এও বলতে শোনা গিয়েছিল, “পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আরবের মত ইসলামিক দেশগুলোতে যে অধিকার হিন্দুরা পায় না, ভারতবর্ষের মাটিতে সেই অধিকার মুসলিমরাও পেতে পারে না।”

এইরকম চাল চরিত্রের শিবসেনা প্রতিষ্ঠাতা, মহারাষ্ট্রের মাটিতে “হিন্দুহৃদয় সম্রাট” বলে পরিচিত বালাসাহেব ঠাকরের দলের পক্ষে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে সরকার গঠন করাটা যে যথেষ্ট সমস্যার, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বস্তুত, উন্নয়নের কথা বলে উদ্ধব ঠাকরে কংগ্রেসের সঙ্গে চলার যুক্তি দেখালেও শিব সৈনিকদের পক্ষে যে তা মেনে নেওয়া যথেষ্ট কষ্টকর হচ্ছে, তা প্রকাশ পেয়েছে 400 কর্মীর ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দেওয়াতে।

ওয়াকিবহাল মহল এও মনে করছেন, যদি কোনো দল তার নিজস্ব নীতি-আদর্শ থেকে পেছনদিকে সরে যায়, সেক্ষেত্রে দলীয় কর্মীরা শুধুমাত্র ক্ষমতার মোহেই দলে টিকে থাকে। তিনটি বিপরীত মেরুর রাজনৈতিক দলকে নিয়ে যে সরকার গঠন হয়েছে, সেই সরকার যে কত দীর্ঘস্থায়ী হবে, সেই নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কারণ কংগ্রেসের ইতিহাসে আগে সমর্থন দিয়ে পরে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়ার মত দৃষ্টান্ত কম নেই। কাজেই সমস্ত পরিস্থিতির ওপর দৃষ্টি থাকবে বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!