শিক্ষায় চরম নৈরাজ্য, ইস্তফার পথে হেভিওয়েট! এবার কি টনক নড়বে মমতার? তৃণমূল রাজনীতি রাজ্য September 24, 2023 প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় একের পর এক নৈরাজ্যের দৃশ্য সামনে আসছে। কিন্তু তারপরেও উন্নয়ন নিয়ে বড়াই থামছে না তৃণমূল সরকারের মুখে। রাজ্যপাল অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করতে উদ্যোগী হওয়ার সাথে সাথেই তাকে যা নয়, তাই ভাষায় আক্রমণ করেছেন সরকারের নেতা-মন্ত্রীরা। এমন একটা ভাব তারা দেখাতে শুরু করেছিলেন যেন, রে রে পড়ে গেল শিক্ষা ব্যবস্থায়। কিন্তু এবার শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের জন্যই যে ইস্তফা দিতে বাধ্য হচ্ছেন একের পর এক অধ্যক্ষ, তা স্পষ্ট হয়ে গেল। রবীন্দ্রভারতীর পর এবার শাসক দলের ছাত্র সংগঠনকে দায়ী করে নিজের ইস্তফা পত্র টিআইসির কাছে পাঠিয়ে দিলেন যোগেশচন্দ্র ল কলেজের অধ্যক্ষ। প্রসঙ্গত, এদিন গোটা পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন যোগেশচন্দ্র ল কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায়। নিজের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দেন, তিনি আর পেরে উঠছেন না এই শক্তির সঙ্গে। কিন্তু কারা সেই শক্তি? পঙ্কজবাবু জানিয়েছেন, শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের বাড়বাড়ন্ত চরমে পৌঁছে গিয়েছে। মানসিকভাবে তিনি নির্যাতনের শিকার। তাকে জলের পাউচ পর্যন্ত ছুড়ে মারা হয়েছে। ইতিমধ্যেই তিনি তার ইস্তফা পত্র টিআইসির কাছে পৌঁছে দিয়েছেন বলেও খবর। আর এখানেই প্রশ্ন, একজন অধ্যক্ষ কি এমনিই এমনিই পদ থেকে ইস্তফা দিতে চান, যদি সেখানে কোনো কারণ না থাকে! হয়তো নিশ্চয়ই এমন কোনো চাপের মুখে পড়তে হয়েছিল পঙ্কজবাবুকে, যার কারণে তিনি এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছেন। বিরোধীদের দাবি, রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে। দিকে দিকে কলেজগুলো তৃণমূল তাদের পার্টি অফিসে পরিণত করেছে। সেখানে তৃণমূলের দাদারা যা বলবে, সেটাই ঠিক। এমনকি অধ্যক্ষকে পর্যন্ত তারা চাপ দিয়ে সমস্ত বেআইনি কাজ করিয়ে নিচ্ছেন। আর অনেকেই শিরদাঁড়া উঁচু করে সেই কাজের বিরোধিতা করলেই তাদের কপালে জুটছে হুমকি। তাই সেই হুমকির কাছে মাথা নত না করে পঙ্কজবাবুর মতো বিশিষ্ট মানুষরা ইস্তফা দিতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে এই যদি শিক্ষাব্যবস্থা নগ্ন রূপ হয়, তাহলে শিক্ষা নিয়ে গর্ব করা বাংলা আগামী দিন কোথায় যাবে, তা নিয়ে হতাশ শিক্ষাবিদরা। পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিদেশ সফরে গিয়ে অনেক বড় বড় দাবি করেছেন। সবদিক থেকেই নাকি তার বাংলা এগিয়ে, এমন অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু বাংলায় তিনি পা রাখার সাথে সাথেই যেভাবে একটি কলেজের অধ্যক্ষ পরিস্থিতি কাছে মাথা নত করে ইস্তফা দিতে বাধ্য হলেন, তাতে কি বলবেন মুখ্যমন্ত্রী? যদিও বা অতীতের অনেক ঘটনার মতই হয়তো এই ঘটনাতেও তিনি বাচ্চা ছেলেদের দোষ দেখতে পাবেন না। যার ফলে হয়তো ক্ষমতার চোখ রাঙানির কাছে পরাজিত হতে হবে শিক্ষক সমাজকে। কিন্তু এভাবেই যদি চলতে থাকে, তাহলে ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করবে তৃণমূলকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য। যে নৈরাজ্যের পরিবেশ রাজ্যের শিক্ষা ক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে, তা থেকে বড়সড় আঘাত পাওয়ার জন্য যেন তৈরি থাকেন ক্ষমতার মোহে ডুবে থাকা শাসক নেতারা। দিনের শেষে অন্তত তেমনটাই বলছে সমালোচক মহল। আপনার মতামত জানান -