এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > বিজেপি > সুকান্ত-দিলীপের ঝগড়া চরমে! শুভেন্দুর হাতে দায়িত্ব কবে? তুঙ্গে জল্পনা!

সুকান্ত-দিলীপের ঝগড়া চরমে! শুভেন্দুর হাতে দায়িত্ব কবে? তুঙ্গে জল্পনা!

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-বিজেপির মত দলে এতদিন আড়ালে, আবডালেই ছিল সমস্ত দ্বন্দ্ব। কিন্তু এবার একেবারে তা প্রকাশ্যে চলে এলো। বিজেপির রাজ্য দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ, রাজ্য সভাপতির ছবিতে লাথি দেওয়া থেকে শুরু করে কিছুই বাকি রাখলেন না কর্মীরা। কিন্তু পরিস্থিতি সামলানো তো দূরের কথা, যত সময় যাচ্ছে, ততই জটিলতা বাড়তে শুরু করেছে। এতদিন গোপনেই ছিল দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বনিবনা না হওয়ার বিষয়টি। কিন্তু এবার চরম কর্মী বিক্ষোভের পরে তা কার্যত প্রকাশ্যে চলে এলো। প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মধ্যে দিয়ে দাবি করলেন, আগে তো এইসব হয়নি। এখন কেন হচ্ছে? অনেকের মনে কষ্ট রয়েছে। সকলের কথা শোনা উচিত। অর্থাৎ এক কথায় তিনি নিজের মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে বর্তমান রাজ্য নেতৃত্বকে দায়ী করতে চাইলেন। বিজেপির একাংশ অবশ্য তেমনটাই বলছে। তবে প্রাক্তন এবং বর্তমান রাজ্য সভাপতির এই দ্বন্দ্ব সামনে চলে আসায় বিজেপি কর্মীরাও রীতিমতো হতাশ। তারা এবার বলছেন, সঠিকভাবে দলের কর্মীদের জন্য ভাবা কাউকে এবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বাংলার জন্য দায়িত্ব দিতেই হবে। তা না হলে এই দ্বন্দ্ব চলতেই থাকবে। আর তাতে আখেরে দলীয় সংগঠনেরই ক্ষতি হবে।

বিজেপি কর্মীদের একাংশের দাবি, আর বুঝতে বাকি নেই, বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের একটা সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। যখন কর্মীদের বিক্ষোভ চলছে, তখন বর্তমান রাজ্য সভাপতি বলছেন, কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি বলছেন, কথা শুনতে হবে। কড়া ব্যবস্থা নিয়ে কিছু হবে না। আগে তো এইরকম পরিস্থিতি ছিল না। এখন কেন হচ্ছে? আর দুই নেতার এই তরজা দেখে বিজেপি কর্মীরা রীতিমতো হতবাক। তারা বলছেন, কি হচ্ছে রাজ্য বিজেপিতে? শুভেন্দু অধিকারীকে দেখে কেন বাকি নেতারা শিক্ষা নিচ্ছেন না? শুভেন্দুবাবু তো এলাকার সংগঠনকে যেমন শক্তিশালী করছেন, তেমনই তৃণমূলের বিরুদ্ধে গোটা রাজ্যে বিরোধী দলনেতা হিসেবে লড়াই করছেন। তিনি কিন্তু কর্মী বিক্ষোভ, কর্মী অসন্তোষ এই সমস্ত কিছুর ঊর্ধ্বে উঠতে সক্ষম হয়েছেন। তার কাছে একটাই লক্ষ্য, তৃণমূলকে সরাতে হবে। ফলে সংগঠনের প্রতি নিষ্ঠাবান এইরকম ব্যক্তিকেই এবার দলের দায়িত্ব দেওয়া উচিত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি। তেমনই দাবি করছেন বিজেপির নিচু তলার কর্মীরা।

অনেকে আবার এটাও বলছেন, বঙ্গ বিজেপিকে নিয়ে কি আদৌ সিরিয়াস বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব? যদি তারা সিরিয়াস থাকবেন, তাহলে এই নেতায়, নেতায় চুলোচুলো কি তাদের নজরে আসছে না? তারা কি টিভি, মিডিয়াতে চোখ রাখেন না! নাকি দেখেও না দেখার ভান করছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা? তারা কি পেছনের দরজা দিয়ে তৃণমূলের হাতে আগামী লোকসভায় এই বাংলাকে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করে নিয়েছেন! তা না হলে যেখানে শুভেন্দু অধিকারীর মতো ব্যক্তি রয়েছেন, তাকে কেন দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না? শুভেন্দু অধিকারী তো বিজেপিতে এসে নিজেকে পরীক্ষার মুখে ফেলেছেন এবং সেই পরীক্ষার সফল হয়েছেন। তা না হলে বিজেপির কোনো নেতা যা পারেননি, তা করে দেখিয়েছেন এই শুভেন্দু অধিকারী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নন্দীগ্রামের মতো জায়গায় হারিয়ে দিয়ে বিজেপির রক্ষাকবচ হয়ে উঠেছেন তিনি। ফলে আর কত সময় নিয়ে সেই শুভেন্দু অধিকারীকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য চিন্তা-ভাবনা করবে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন সমালোচকরা।

পর্যবেক্ষকদের দাবি, বিজেপির মত দলে এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং তা প্রকাশ্যে চলে আসা সত্যিই কাঙ্খিত নয়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কি করে এত বিশৃঙ্খলা বাংলাকে নিয়ে হজম করছে! এটাই একটা বড় প্রশ্ন। তাই যিনি নিরপেক্ষ, যিনি সংগঠনের জন্য প্রাণপাত করছেন দিনরাত, তাকেই এবার সংগঠনের দায়িত্ব দিতে হবে। আর বাংলায় এই হাল ধরার মতো একটাই লোক রয়েছেন, তার নাম শুভেন্দু অধিকারী। ফলে এই সময় সুকান্ত মজুমদার এবং দিলীপ ঘোষের এই দ্বৈরথ বিজেপি কর্মীরা মেনে নিতে পারছেন না। তাই যিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই দিতে পারেন, যিনি এক মনে লড়তে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে, তাকেই এবার দায়িত্ব দিতে হবে। দিনের শেষে তেমনই আওয়াজ তুলছে বঙ্গ বিজেপির ঘনিষ্ঠরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!