শুভেন্দু-দিলীপের খাসতালুকেও এবার দ্রুত সংগঠন বাড়াচ্ছে মিম, নতুন সমীকরণ রাজ্য-রাজনীতিতে? জাতীয় তৃণমূল বিজেপি মেদিনীপুর রাজনীতি রাজ্য December 28, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যেই এবারের বিধানসভা নির্বাচনে যে জোরদার লড়াই হবে, একথা প্রায় প্রত্যেকেরই জানা। কিন্তু তার মাঝেই হায়দ্রাবাদের রাজনৈতিক দল এআইএমআইএমের বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা সবথেকে বেশি চাপে রেখেছিল তৃণমূল কংগ্রেসকে। কেননা রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোটের অধিকাংশ তৃণমূলের দখলে। সেদিক থেকে এই রাজনৈতিক দলটি যদি বাংলায় সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় প্রার্থী দিতে শুরু করে, তাহলে তৃণমূলের ভোটব্যাংকে ফাটল ধরতে শুরু করবে। আর এই ভোট কাটাকাটিতে শেষ পর্যন্ত ফায়দা তুলে নিতে পারে গেরুয়া শিবির। সূত্রের খবর, শনিবার মেদিনীপুরে এই এআইএমআইএমের পক্ষ থেকে একটি কর্মী বৈঠক করা হয়েছে। যেখানে রাজ্য নেতৃত্বরা উপস্থিত ছিলেন। আর সেখানেই আগামীদিনে কিভাবে সংগঠনের কাজকর্ম করা হবে এবং নির্বাচনে লড়াই হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে খবর। আর আশ্চর্যের বিষয়, এদিনের এই বৈঠকটি মেদিনীপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই যে মেদিনীপুরের রাজনৈতিক সমীকরণ নিয়ে এখন কার্যত টালমাটাল বঙ্গ রাজনীতি, সেই মেদিনীপুরে হায়দ্রাবাদের এই রাজনৈতিক দলের বৈঠক নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বস্তুত, মেদিনীপুর তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি হিসেবেই পরিচিত। যেখানে কিছুদিন আগেই অধিকারী গড়ের নেতা শুভেন্দু অধিকারী যোগ দিয়েছেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে। আর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সাথে সাথেই দিলীপ ঘোষ এবং তিনি মিলে অবিভক্ত মেদিনীপুরের 35 টি আসন বিজেপির হাতে তুলে দেবেন বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসকে। আর এই পরিস্থিতিতে সেই মেদিনীপুরে হায়দ্রাবাদের রাজনৈতিক দল এআইএমআইএমের বৈঠক বিজেপি তৃণমূল উভয় দলকেই চাপে রাখতে শুরু করল বলে মনে করছেন একাংশ। এদিন এই প্রসঙ্গে মিমের রাজ্য নেতা আনিসুর রহমান বলেন, “আমরা আমাদের কর্মীদের শক্তিকে সমৃদ্ধ করছি। মেদিনীপুরে বৈঠক হয়েছে। আমরা প্রার্থী অবশ্যই দেব। তবে কতগুলো আসনে প্রার্থী দেওয়া হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। সঠিক সময়ে তা ঠিক হবে।” অনেকে বলতে শুরু করেছেন, এই মিম যদি প্রার্থী দিতে শুরু করে, তাহলে তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোট অনেকটাই সংকটের মুখে পড়ে যাবে। সেদিক থেকে বিজেপির থেকেও সবথেকে বেশি চাপে পড়বে তৃণমূল কংগ্রেস বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিকে মিমের এই বৈঠক নিয়ে বিজেপি এবং তৃণমূলের দ্বন্দ্ব এখন চরম আকার ধারণ করেছে। এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “তৃণমূলের সঙ্গে মানুষ রয়েছে। যে কেউ ভোটে লড়তে পারে। তবে তৃণমূলের কোনো ক্ষতি করতে পারবেন না।” একইভাবে বিজেপির পক্ষ থেকেও মিমকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এদিন এই প্রসঙ্গে মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপি সভাপতি সমিত দাশ বলেন, “ওদের কোনো সংগঠন নেই। ওরা এই জায়গায় প্রভাব ফেলতে পারবে না।” একই কথা বলতে শোনা গেছে ঘাটাল জেলা বিজেপির সভানেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্যকে। তিনি বলেন, “জেলায় এই দল কোনো ফ্যাক্টর হবে না।” কিন্তু মুখে তৃণমূল থেকে বিজেপি যে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে যে কথাই বলা হোক না কেন, দুজনের কপালেই যে এআইএমআইএমকে নিয়ে চিন্তা বাড়তে শুরু করেছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা। কেননা বিজেপি এবং তৃণমূল দুই দলই সংখ্যালঘুদের সমর্থন নিজেদের দিকে টানতে তৎপর। সেদিক থেকে এতদিন তৃণমূলের দিকে সংখ্যালঘুদের সমর্থন থাকলেও, যদি হায়দ্রাবাদের এই রাজনৈতিক দলটি প্রার্থী দেয়, তাহলে তাদের দিকেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সমর্থন যেতে শুরু করবে। যার ফলে তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটে ফাটল ধরতে পারে। আর যদি এই প্রবণতা বাস্তব হয়, তাহলে বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি অনেকটাই ফায়দা তুলতে সক্ষম হবে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। সব মিলিয়ে বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী বা দিলীপ ঘোষের শক্ত ঘাঁটিতে বৈঠক করে রীতিমত শোরগোল ফেলে দিল এআইএমআইএম। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -