এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > শুভেন্দু ইস্যুতে প্রশান্ত কিশোর ও ব্যর্থ, শেষ ভরসা মমতার দিকে তাকিয়ে দলের নেতা কর্মীরা

শুভেন্দু ইস্যুতে প্রশান্ত কিশোর ও ব্যর্থ, শেষ ভরসা মমতার দিকে তাকিয়ে দলের নেতা কর্মীরা


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – তৃণমূলের প্রায় প্রত্যেকেই আড়ালে-আবডালে হলেও স্বীকার করে নেন, মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পর দলে যদি কারও জনপ্রিয়তা সবথেকে বেশি থাকে, তাহলে তার নাম শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু সেই শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে বর্তমানে ব্যাপক জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজ্যজুড়ে। যেভাবে দল এবং সরকারের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করছেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী, তাতে তিনি বড়সড় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে দাবি করছেন একাংশ।

বিভিন্ন অরাজনৈতিক সভাতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর নানা ধরনের মন্তব্য ইঙ্গিতের সৃষ্টি করছে রাজনৈতিক মহলে। আর এই পরিস্থিতিতে সেই শুভেন্দু অধিকারীর মানভঞ্জন করতে এবং দলের সঙ্গে তার দূরত্ব কমাতে সম্প্রতি তার বাড়িতে গিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর। তবে প্রশান্ত কিশোর শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা বলতে তার বাড়িতে গেলেও, সেখানে শুভেন্দুবাবুর দেখা পাওয়া যায়নি। উল্টে তার বাবা শিশির অধিকারীর সঙ্গে কথা বলে ফিরে আসতে হয়েছে তৃণমূলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতাকে।

আর এরপর আশা করা হয়েছিল, তৃণমূলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা যেহেতু শুভেন্দু অধিকারীর বাড়িতে গিয়েছেন, সেহেতু শুভেন্দুবাবু এবার ধীরে ধীরে আবার সক্রিয় হয়ে উঠতে পারেন। কিন্তু সেরকম কোনো পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। উল্টে বিভিন্ন কালীপুজোর উদ্বোধন করতে গেলেও দল সম্পর্কে বিন্দুমাত্র মন্তব্য করতে দেখা যাচ্ছে না রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রীকে। নিজের মত করে পুজোর উদ্বোধন করে বিভিন্ন ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য রাখছেন তিনি। যাকে কেন্দ্র করে জল্পনা ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে।

আর এখানেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, তাহলে কি শেষ পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারীর মানভঙ্গ করতে ব্যর্থ হলেন প্রশান্ত কিশোর! কিন্তু এবার কি করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! শুভেন্দু অধিকারীর মত শীর্ষ নেতা যদি দলত্যাগের মত সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে তৃতীয় বারের জন্য রাজ্যের ক্ষমতা দখল করা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে বলে দাবি করা হচ্ছে। তাই এই পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেন্দু অধিকারীর মানভঙ্গ করতে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেন কিনা, সেদিকেই নজর রয়েছে গোটা রাজনৈতিক মহলের।

ইতিমধ্যেই রামনগরে একটি কালীপুজোর উদ্বোধনী গিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। যেখানে তিনি বলেছেন, “যা করতে হয়, তা বলতে নেই।” অর্থাৎ তিনি যে ভবিষ্যতে এমন কিছু করতে পারেন এবং সেই ব্যাপারে যে তিনি এখন কিছুই বলতে চান না, তা কার্যত নিজের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী। আর এই পরিস্থিতিতে এবার শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে নতুন করে শাসকদলের অন্দরমহলে জল্পনা তৈরি হয়েছে।

একাংশ বলছেন, প্রশান্ত কিশোরের জন্য দলের সঙ্গে আরও দূরত্ব তৈরি করেছেন রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী। কেননা এই প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে এসেছেন তৃণমূল যুবর সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপরই নানা সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যাচ্ছে সেই প্রশান্ত কিশোরকে। তার সুপারিশের ভিত্তিতে বিভিন্ন জেলায় সাংগঠনিক রদবদল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

সম্প্রতিককালে শুভেন্দু অধিকারীর মত গুরুত্বপূর্ণ নেতার দায়িত্ব অনেকটাই ছেটে দেওয়া হয়েছে। আর এর ফলেই শুভেন্দুবাবু অনেকটা ক্ষুব্ধ বলে খবর। যার পরবর্তী সময় কালে তিনি দলের সঙ্গে আরও বেশি করে দূরত্ব স্থাপন করতে শুরু করেছিলেন‌। তবে সেই শুভেন্দু অধিকারীর মানভঞ্জন করতে সম্প্রতি তার বাড়িতে প্রশান্ত কিশোর নিজে উপস্থিত হলেও লাভের লাভ কিছুই হয়নি। তাই এখন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে গেলে হাল ধরতে হবে বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অনেকে আবার বলছেন, দলে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিস্তার মতপার্থক্য রয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে দ্রুতগতিতে উত্থান নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর মত নেতারা অনেকটাই ক্ষুব্ধ। তাই তিনি দলের সঙ্গে এখন দূরত্ব স্থাপন করতে শুরু করেছেন। মূলত এই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো।

স্বাভাবিকভাবেই রক্তের সম্পর্ক থাকা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের শীর্ষ স্থানে থাকলেও, শুধুমাত্র শুভেন্দু অধিকারীর মানভঞ্জনের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডানা ছাটবেন কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে সমালোচক মহলের একাংশের। অন্যদিকে অপরপক্ষ আবার বলতে শুরু করেছে, যদি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এভাবেই গুরুত্ব দিতে থাকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারীর মানভঞ্জন না করেন, তাহলে পরিস্থিতি বেগতিক হয়ে উঠতে পারে।

কেননা এই শুভেন্দু অধিকারীর গোটা রাজ্যজুড়ে প্রভাব রয়েছে। তাই তিনি যদি দলবদলের মত কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, তাহলে তৃণমূলের অনেক বিধায়ক থেকে শুরু করে অনেক হেভিওয়েট নেতা কর্মী তার পথ অনুসরণ করতে পারেন। যার ফলে তৃতীয়বারের জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের ক্ষমতা দখল করা কার্যত দিবাস্বপ্ন হয়ে যাবে বলেই দাবি করছে একাংশ। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আদৌ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীর মানভঞ্জন করতে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেন কিনা, এখন সেদিকেই নজর গোটা রাজনৈতিক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!