এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > তৃণমূলের রদবদল: খোদ অনুব্রত মণ্ডলের ক্ষমতা “ছাঁটা” হতেই তীব্র গুঞ্জন শুরু দলের অন্দরেই!

তৃণমূলের রদবদল: খোদ অনুব্রত মণ্ডলের ক্ষমতা “ছাঁটা” হতেই তীব্র গুঞ্জন শুরু দলের অন্দরেই!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –বৃহস্পতিবার তৃণমূলের ব্যাপক সাংগঠনিক রদবদল অনুষ্ঠিত হয়েছে। কমবেশি প্রতিটি জেলাতেই ব্যাপক অদলবদল ঘটিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এক্ষেত্রে বীরভূম জেলায় অনুব্রত মণ্ডলের উপরেই ভরসা রেখেছেন তিনি। কিন্তু অনুব্রত মণ্ডলের ডানা যে একেবারেই ছাটা হয়নি, তা বলা যাবে না। বীরভূম জেলার সভাপতি হিসেবে অনুব্রত মণ্ডলকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহাল রাখলেও, পূর্ব বর্ধমান কেতুগ্রাম, আউসগ্রাম এবং মঙ্গলকোটের দায়িত্বে থাকা অনুব্রত মণ্ডলকে এদিন সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

যে জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ভাতারের তৃণমূল বিধায়ক সুভাষ মন্ডলকে। স্বাভাবিকভাবেই নেতা থেকে কর্মীরা সকলেই চাইছেন, অনুব্রত বাবুকে এই জায়গায় বসানো হোক। ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে দাবি তুলে এলাকার বেশকিছু তৃণমূল নেতাকর্মীরা দলের কাছে তাদের আবেদন জানাতে শুরু করেছেন। বস্তুত, বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি হওয়ার আগে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন এই অনুব্রত মণ্ডল। 2004 সালে বোলপুর লোকসভার অন্তর্গত ছিল আউসগ্রাম ও মঙ্গলকোট বিধানসভা।

অন্যদিকে বহরমপুর লোকসভার মধ্যে ছিল কেতুগ্রাম বিধানসভা। গত 2008 সালে অনুব্রত মণ্ডলের তত্ত্বাবধানে গুসকরা পৌরসভা তৃণমূল কংগ্রেস দখল করে। পরবর্তীতে 2009 সালে এই কেতুগ্রাম, আউসগ্রাম এবং মঙ্গলকোট বিধানসভা বোলপুর লোকসভার মধ্যে চলে আসলে, তার সম্পূর্ণরূপে দেখাশোনা করতেন অনুব্রত মণ্ডল।

আর সেই সময় তৎকালীন শাসকদল বামেদের দাপুটে তৃণমূলের অনেক কর্মী-সমর্থকদেরকে মাঝে মধ্যেই আক্রমণের শিকার হতে হত বলে অভিযোগ। আর এহেন দুর্দিনে অনুব্রত মণ্ডলকেই সবথেকে বেশি পাশে পেয়েছেন তৃনমূলের কর্মী-সমর্থকরা। তাই এখন সেই অনুব্রত মণ্ডলকেই তিন বিধানসভার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ায় কর্মীসমর্থকরা চাইছেন, কেষ্টদাকেই আবার পাশে পেতে।

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সূত্রের খবর, শুক্রবার বিকেলে গুসকরা তৃণমূল শহর এবং আউসগ্রাম 1 ব্লক নেতৃত্বের পক্ষ থেকে একটি সভা করা হয়‌। যেখানে তিন বিধানসভা কেন্দ্রে যেমন অনুব্রত মণ্ডল দায়িত্বে ছিলেন, ঠিক তেমনই তাকেই দায়িত্বে রাখা হোক বলে দাবি জানানো হয়। এদিন এই প্রসঙ্গে গুসকরা শহর তৃণমূল সভাপতি কুশল মুখোপাধ্যায় বলেন, “আগের নেতৃত্বের সঙ্গে আমাদের একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। 2008 সালের আগে থেকে নেতৃত্বের নির্দেশে একের পর এক ফল এসেছে। আমরা সেই সম্পর্কে ছেদ চাইছি না।” একইভাবে অনুব্রতবাবুকেই এই তিন জায়গার দায়িত্বে রাখা হোক বলে জানিয়েছেন আউসগ্রাম ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সালেক রহমান।

অন্যদিকে এই ব্যাপারে কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ শাহনেওয়াজ বলেন, “কেষ্টদাই সংগঠনটা দেখতেন। বিপদে-আপদে পাশে থাকতেন। সাহায্য করতেন। এতে সংগঠনের লাভ হয়েছে। তবে দলের নির্দেশই শেষ কথা।” অর্থাৎ তিন বিধানসভার দায়িত্বে থাকা অনুব্রত মণ্ডলকে সরিয়ে দিয়ে সুভাষবাবুকে দায়িত্ব দিলেও সেখানকার নেতৃত্বরা অনুব্রত মণ্ডলকেই আবার ফিরে পেতে চাইছেন। তবে এক্ষেত্রে তৃণমূলের অন্দরমহলে কান পাতলে আবার বিরুদ্ধ মতও শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। যেমন, এই ব্যাপারে মঙ্গলকোটের তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেন, “দলনেত্রী ভালো কিছু বুঝছেন। তাই পর্যবেক্ষক পদ থেকে ওনাকে সরিয়ে দিয়েছেন।”

অন্যদিকে যোগ্য এবং দক্ষ মানুষকেই আউসগ্রামের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন গুসকরা পৌরসভার বিদায়ী কাউন্সিলার নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু কিছু কিছু নেতা একথা বললেও, এই তিন বিধানসভার তৃণমূলের অনেক নেতা এবং কর্মীরা যেভাবে অনুব্রত মণ্ডলকে বহাল রাখার কথা বলছেন, তাতে কি সুভাষ মন্ডলের কাজ করতে অসুবিধে হবে না? এদিন এই প্রসঙ্গে সুভাষবাবু বলেন, “আমি প্রায় 16 বছর জেলার যুব সভাপতি ছিলাম। দল কো অর্ডিনেটরের দায়িত্ব দিয়েছে। আমি এখন কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রে রয়েছি। সেজন্য এখনই কিছু ভাবছি না।”

অন্যদিকে তিনি এতদিন দায়িত্বে থাকলেও, যেভাবে তাকে এই তিন বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল, তাতে কর্মী-সমর্থকরা আবার তাকে ফিরে পাওয়ার দাবি জানাচ্ছে! তাতে তার প্রতিক্রিয়া কি? এদিন এই প্রসঙ্গে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “এখনই এই ব্যাপারে কোনো কিছু বলার সময় আসেনি।” তবে গোটা ঘটনায় দুটো বিষয় পরিষ্কার রাজনৈতিক মহলের কাছে‌। অনেকে বলছেন, অনুব্রত মণ্ডলের নানা সময় নানা বেলাগাম মন্তব্য হয়ত দলকে কিছুটা অস্বস্থিতে ফেলেছে।

তাই বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুধুমাত্র বীরভূম জেলায় ভালো করে মনোযোগ দেওয়ার জন্যই অনুব্রত মণ্ডলকে তিন বিধানসভার পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে দল তাকে বার্তা দিতে চাইল। তবে সেখানকার কর্মীরা যেভাবে আবার অনুব্রত মণ্ডলকে ফিরে পাওয়ার দাবি জানিয়েছে, তাতে সেই জায়গার নতুন পর্যবেক্ষক সুভাষ মন্ডল কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে কতটা ভালোভাবে কাজ করতে পারেন, তা অবশ্যই সংশয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সকলের কাছে। সব মিলিয়ে এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!