বিজেপিকে আটকে পরিযায়ীদের মন জিতেই কি বিধানসভায় বাজিমাতের পরিকল্পনায় তৃণমূল? বাড়ছে জল্পনা কলকাতা রাজ্য June 15, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – লকডাউনের কারণে ভিন রাজ্যে আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকরা এখন রাজ্যে ফিরতে শুরু করেছেন। আর এই পরিযায়ী শ্রমিকদের মন পেতেই এখন তৎপর শাসক থেকে বিরোধী প্রতিটা রাজনৈতিক দল। শ্রমিকদের থাকার জন্য নিভৃত বাস কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করতে গিয়ে এখন তৃণমূল এবং বিজেপির লড়াই চোখে পড়ার মত। বিজেপির পক্ষ থেকে যেমন সেই সমস্ত শ্রমিকদের খোঁজখবর নিতে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, ঠিক তেমনই তৃণমূল চেষ্টা করছে, সেই সমস্ত কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রগুলোর কাছে থাকতে। যাতে বিজেপি এসে কোনভাবেই সুবিধে করতে না পারে। অর্থাৎ স্ব স্ব ক্ষেত্রে বিরোধী থেকে শাসক, প্রতিটা রাজনৈতিক দল এখন সেই সমস্ত শ্রমিকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিজেদের ভোটব্যাংককে শক্তিশালী করার আপ্রাণ চেষ্টা করছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বস্তুত, কিছুদিন আগেই রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার নবদ্বীপের একাধিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টার পরিদর্শন করতে গেলে তাকে কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু একইভাবে নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমান সাহা সেই কোয়ারেন্টাইন সেন্টার পরিদর্শন করতে গেলেও, তাকে কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি। শুধু তাই নয়, কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল নেত্রী তথা সাংসদ মহুয়া মৈত্র একাধিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টার পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এক্ষেত্রে শুধুমাত্র বিজেপি সাংসদকে আটকে রাখা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। তাদের দাবি, সামনে বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুধুমাত্র শ্রমিকদের পাশে থাকতে তৃণমূল এই চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে বিজেপি সাংসদদের আটকে রাখার প্রয়াস চালাচ্ছে তারা। কিন্তু এভাবে লাভের লাভ কিছুই হবে না। মানুষ সব ধরে ফেলেছে। এদিন এই প্রসঙ্গে এক বিজেপি নেতা বলেন, “জগন্নাথদা সাংসদ। দাপুটে নেতা। তাকে ঘরে আটকে রাখতে পারা কঠিন। কিন্তু আমরা ছোটখাটো লোক। আমাদের ক্ষেত্রে তো সেটা হবে না। জোর করে ঘরে 14 দিন থাকতে বাধ্য করবে। পুলিশ প্রশাসনকে দিয়ে হয়রানি করবে। তাই ইচ্ছা থাকলেও অনেক জায়গায় যেতে পারছি না।” একইভাবে এই ব্যাপারে সরব হয়েছেন বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। তিনি বলেন, “কেন্দ্র পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য প্রচুর টাকা পাঠিয়েছে। সেই টাকা তাদের জন্য খরচ করা হচ্ছে না। আমরা সেই প্রশ্নগুলো তুলে ধরছি বলেই আমাদের আটকে দেওয়া হচ্ছে।” তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য বিজেপির তোলা এই অভিযোগকে সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করা হয়েছে। এদিন এই প্রসঙ্গে কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক তৃণমূল সভাপতি লক্ষণ ঘোষ চৌধুরী বলেন, “বিজেপির লোকেরা একেবারেই সচেতন নয়। সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করছেন না। আমরা করছি। তাই আমাদের কিছু বলার প্রয়োজন হচ্ছে না।” তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে একথা বলা হলেও, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামনে বিধানসভা নির্বাচন। আর বিজেপি বাংলাকে টার্গেট করে ফেলেছে। যেন-তেন প্রকারেণ বাংলার ক্ষমতা দখল করা তাদের কাছে এখন প্রধান লক্ষ্য। সেদিক থেকে তারা ঘুটি সাজাতে শুরু করেছে। আর এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল চাইছে, ভয়াবহ দুর্যোগের সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের মন জয় করে তাদের ভোটব্যাংকে নিজেদের দিকে টানতে। তাই এখন বিজেপিকে কিছুটা চাপে রেখে তৃণমূল কংগ্রেসের পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগী হয়েছে। তবে এতসব সত্ত্বেও যেভাবে বিজেপির পক্ষ থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতি করার অভিযোগ উঠেছে, তাতে তৃণমূলের শ্রমিক ভোটব্যাঙ্ক শক্ত করার কৌশল আদৌ কতটা কার্যকরী হবে, তার দিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের। আপনার মতামত জানান -