এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বাড়ছে জনরোষ, তৃনমূল নেতাকে দুর্নীতির দায়ে সর্বসমক্ষে কান ধরে চাইতে হল ক্ষমা, জোর শোরগোল!

বাড়ছে জনরোষ, তৃনমূল নেতাকে দুর্নীতির দায়ে সর্বসমক্ষে কান ধরে চাইতে হল ক্ষমা, জোর শোরগোল!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সম্প্রতি রাজ্যের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আমপান ঝড়ের দাপট। যার ফলে বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর মানুষের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরবর্তীতে সরকারের পক্ষ থেকে সেই সমস্ত ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক ভাবে সাহায্য করা হচ্ছে। কিন্তু এই ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে ক্রমাগত উঠছে দুর্নীতির অভিযোগ। যেখানে শাসক থেকে বিরোধী যে পঞ্চায়েত যার দখলে আছে, সেখানে সেই রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা নিজের আত্মীয় স্বজনদের ক্ষতিপূরণের টাকা পাইয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে সেদিক থেকে এই অভিযোগ সবথেকে বেশি উঠেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। আর এবার ফের এই ‌তালিকা নিয়ে অস্বস্তিতে পড়ল শাসকদল।

জানা গেছে, দক্ষিণ 24 পরগনার রায়দিঘির নন্দকুমার পঞ্চায়েত এলাকায় ঘরবাড়ির ক্ষতিপূরণের তালিকায় প্রায় সাড়ে 6 হাজার মানুষের নাম রয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন মাত্র 380 জন মানুষ। যার মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পঞ্চায়েত সদস্যদের নিকটাত্মীয়রা রয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, যাদের বাড়ি দেওয়া হয়েছে, তাদের বাড়ি ঝড়ে সম্পূর্ণ অক্ষত রয়েছে। শুধু তাই নয়, তাদের প্রত্যেকেরই বাড়ি দোতলা এবং তিনতলা বাড়ি।

ফলে মূল ক্ষতিগ্রস্তরা এই টাকা না পেয়ে তৃণমূল নেতাদের দৌলতে তাদের কোটিপতি আত্মীয়রা সরকারি সাহায্য পাওয়ায় রীতিমত প্রশ্ন উঠছে পঞ্চায়েতের ভূমিকা নিয়ে। আর সাধারণ বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে এবার অভিযুক্ত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন ঘাটুকে রীতিমত সকলের সামনে কান ধরে ক্ষমা চাওয়ার দাবি উঠল। জানা গেছে, এদিন ক্ষতি পূরণের তালিকায় ব্যাপক দুর্নীতির প্রতিবাদে রায়দিঘি বলেরবাজার মোড়ের কৈলাসপুর-হরিয়ানা মোড়ে প্রায় তিন ঘন্টা ধরে অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা দাবি জানান, অবিলম্বে স্বপন ঘাটুকে এই কৃতকর্মের জন্য কান ধরে ক্ষমা চাইতে হবে। পরবর্তীতে বিডিও এলাকায় এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

 

এদিন এই প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা হরেন মন্ডল, সুখেন হালদার বলেন, “আমাদের বাড়ি ঘর ভেঙেছে, আর আমরা টাকা পেলাম না। অথচ পঞ্চায়েত সদস্যের পরিবারের তিনজন পেয়েছে বলে শুনেছি। ওর ঘনিষ্ঠ আরও কিছু লোক, যাদের কোনো ক্ষতি হয়নি। তারাও পেয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলনে নেমেছি।” কিন্তু যখন সাধারণ বাসিন্দারা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তখন কেন একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে স্বপনবাবু এই কাজ করলেন! কেন তিনি তার আত্মীয়, পরিজনদের ক্ষতিপূরণের টাকা দিলেন! এর ফলে সাধারণ বাসিন্দাদের দাবি অনুযায়ী তাকে যে প্রকাশ্যে কান ধরে ক্ষমা চাইতে হল, তাতে তো তার লজ্জা আরও বাড়ল! তিনি এরপর জনমানসে মুখ দেখাবেন কি করে?

এদিন এতসব ঘটনা ঘটা সত্বেও, স্বপনবাবু নিজের অবস্থানে অনড়। তিনি বলেন, “দ্রুত তালিকা তৈরি করতে গিয়ে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। তবে যাদের নাম তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে, তাদের নাম যুক্ত করে নতুন করে তালিকা তৈরি করা হবে। পরিস্থিতির চাপে পড়ে এবং পুলিশের নির্দেশ মেনে কান ধরেছি।” এদিকে দলের পঞ্চায়েত সদস্যদের বিরুদ্ধে এই রকম অভিযোগ ওঠায় তৃণমূল যে ব্যাপক অস্বস্তিতে পড়েছে, তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।

এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূল নেতা শান্তনু বাপুলি বলেন, “ওই পঞ্চায়েত সদস্যকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। প্রশাসনকে বলা হয়েছে তদন্ত করে দেখার জন্য।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের সাহায্যের টাকা সাধারণ মানুষদের কাছেই যাওয়া উচিত। বারবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের জনপ্রতিনিধিদের এই ব্যাপারে যাতে কোনো দুর্নীতি না হয়, তার জন্য কড়া বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও যেভাবে দক্ষিণ 24 পরগনার এই পঞ্চায়েতে অনিয়মের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে এবং তাকে প্রকাশ্যে কান ধরে ক্ষমা চাইতে হল, তাতে তৃণমূল ব্যাপক অস্বস্তিতে পড়ল বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। এখন এই ঘটনাকে ইস্যু করে বিরোধীরা যে ময়দানে নামবে, তাতেও নিশ্চিত সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!