এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > তিন প্রভাবশালী নেতাকে নিয়ে একান্ত বৈঠকে মন্ত্রী, জল্পনা বাড়ছে শাসকদলের অন্দরেই

তিন প্রভাবশালী নেতাকে নিয়ে একান্ত বৈঠকে মন্ত্রী, জল্পনা বাড়ছে শাসকদলের অন্দরেই


গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে তৃণমূলে ব্যাপক ভরাডুবি হয়েছে। সম্প্রতি জলপাইগুড়ি জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে চলে আসে। যেখানে জলপাইগুড়ি পৌরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান মোহন বসুকে প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান না করার পরেই জেলা তৃণমূল সভাপতি কিষাণ কুমার কল্যাণীর বিরুদ্ধে সরব হন মোহন বসু। যার পর জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন বিজেপি নেতাদের সেই মোহন বসুর বাড়িতে যেতে দেখা যায় এমনকি মোহন বসুর রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়েও শুরু হয় জল্পনা।

আর গোটা পরিস্থিতি যখন হাতের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছিলেন সকলে, ঠিক তখনই এবার ময়দানে নামলেন উত্তরবঙ্গ তৃণমূলের কোর কমিটির চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী গৌতম দেব। সূত্রের খবর, এদিন জলপাইগুড়ি সার্কিট হাউসে পরপর দুটি বৈঠক করেন গৌতমবাবু। যেখানে উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি কিষাণ কুমার কল্যাণী, আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূল সভাপতি মৃদুল গোস্বামী, বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা।

আর হঠাৎ করে একদিকে আলিপুরদুয়ার এবং অন্যদিকে জলপাইগুড়ি জেলার তৃণমূল নেতৃত্বদের নিয়ে গৌতম দেবের এই বৈঠক ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে জল্পনা। অনেকে বলছেন, জলপাইগুড়ি জেলায় জেলা তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে যেভাবে সরব হয়েছেন প্রাক্তন জলপাইগুড়ি পৌরসভার চেয়ারম্যান, তাতে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়ছে। পাশাপাশি মোহন বসুর রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছে।

তাই এই পরিস্থিতিতে জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতির সাথে‌ মোহন বসুর দ্বন্দ্ব যাতে কমিয়ে দেওয়া যায়, তার জন্যই দলের তরফে এই বৈঠক করলেন গৌতম দেব‌। অন্যদিকে আলিপুরদুয়ার জেলার অবস্থাও খুব একটা ভালো নয়। সেখানেও যত দিন যাচ্ছে, তত গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বাড়ছে। তাই এই পরিস্থিতিতে সেই সমস্যার সমাধান করতেও ময়দানে নামতে দেখা গেল রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রীকে। কি কারনে এই বৈঠক?

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই প্রসঙ্গে গৌতম দেব বলেন, “নেত্রী বলেছেন সকলকে নিয়ে বসতে। তার নির্দেশ অনুসারে বসা হয়েছিল। আলোচনায় কি উঠে এল, তার নেত্রীকে জানানো হবে। অনেকের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে নেত্রীর কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠাব। আমাদের দলে কেউ ব্রাত্য নন। সকলেই বিভিন্ন স্তরে কাজ করেন‌। সকলকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, এটাই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই কঠিন অবস্থার মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ, মান-অভিমান পেরিয় গিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।”

গৌতমবাবু আরও জানান, “সবারই সংগঠনে অবদান আছে। সকলকেই কাজে লাগাতে হবে। জলপাইগুড়িতে সাময়িক সমস্যা হয়েছে। সকলকে এক সঙ্গে চলতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। তবে আমার কাজ হল, এদের সকলকে নিয়ে একটা সমন্বয় করা। এদিন সেটাই করা হল। পরবর্তীতে জেলার অন্য নেতাদের নিয়ে আবারও বৈঠক করা হবে।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গৌতম দেব যে কথাই বলুন না কেন, তার কথায় একটা বিষয় পরিষ্কার যে, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় তৃণমূলের বর্তমান অবস্থা খুব একটা ভালো নয়।

জলপাইগুড়ি জেলায় যেভাবে গোষ্ঠী কোন্দল বেঁধেছে, তাতে সামনের নির্বাচনে যদি তৃণমূল ভালো ফল করতে চায়, তাহলে অবিলম্বে তাদের এই বিবাদ মেটাতে হবে। অন্যদিকে যেভাবে গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি উত্তরবঙ্গের আটটি আসনের মধ্যে সাতটি আসন নিজেদের দখলে রেখেছে, তাতে সামনের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে ভালো ফল করতে গেলে আগে যে নিজের ঘর সামলাতে হবে – সে বিষয়ে কার্যত নিশ্চিত রাজনৈতিক মহলের সকলেই।

আর তাই এখন জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ার জেলার সমস্যা মেটাতে এবং গোষ্ঠী কোন্দলকে চিরতরে মিলিয়ে দিতে গৌতম দেবের এই বৈঠক বলে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা। কিন্তু, এর পাল্টা মতও ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছে উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে। বিশেষ করে মোহন বসুর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া বিজেপি নেতা – রাজ্য কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতেই দলবদলের জল্পনা আরও বেশি করে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। এখন এত কিছুর পরেও তৃণমূল নেতৃত্ব গোষ্ঠী কোন্দল সামলাতে কতটা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!