অপেক্ষা বিকেল ৩:৩০ টের, তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা নিয়ে জল্পনা চরমে কলকাতা রাজ্য March 12, 2019 গত রবিবার বিকেলে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে দেশের জাতীয় নির্বাচন কমিশন নির্বাচন। আর কমিশনের এই ঘোষণার পর বিন্দুমাত্র সময় না নিয়ে এতদিন তড়িঘড়ি নিজের দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিতেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এবার সেক্ষেত্রে কিছুটা বদল ঘটিয়ে অবশেষে সেই নির্বাচনী নির্ঘন্ট ঘোষণা দুদিন পর অর্থাৎ আজ মঙ্গলবার বিকেলে কালীঘাটে নিজের বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের 42 টি কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করতে চলেছেন তিনি। একাংশের মতে, প্রার্থী ঘোষণার দিন হিসেবে এতদিন বুধ অথবা শুক্রবারকেই শুভ দিন হিসেবে মনে করতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাহলে হঠাৎ মঙ্গলবার দিন প্রার্থী ঘোষণা করছেন কেন তিনি? অনেকে বলছেন, খনার বচনে বলে “মঙ্গলে ঊষা বুধে পা, যথা ইচ্ছা তথা যা।” মা-মাটি-মানুষের আশীর্বাদই তার মুল প্রেরণা। আর তাই সেই খনার বচনকে শিখন্ডী করেই এবার মঙ্গলবারই প্রার্থী ঘোষণা শুভ বলে মনে করে আজ বিকেল দুপুর একটা থেকে রাজ্যের সমস্ত জেলার তৃণমূল সভাপতিদের নিয়ে বৈঠক করে বেলা সাড়ে তিনটার সময় 42 টি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী ঘোষণা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগেই ঠিক কে কে এবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়তে চলেছে তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে ছড়িয়ে পড়েছে নানা জল্পনা। দলীয় সূত্রের খবর, ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে এবার দীনেশ ত্রিবেদীকে দাঁড় করালে সেখানে বেঁকে বসতে পারেন ভাটপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহ-এইরুপ জল্পনা সামনে আসতেই গতকালই নবান্নে সেই দীনেশ ত্রিবেদী এবং অর্জুন সিংহকে ডেকে নিয়ে দীর্ঘক্ষন বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দীনেশকে জেতাতে অর্জুন প্রচারের প্রধান মুখ হবে বলেও জানিয়ে দেন তৃণমূল নেত্রী। অন্যদিকে নেত্রীর নির্দেশ তিনি দলের অনুগত সৈনিকের কাজ করবেন বলেও জানিয়ে দেন অর্জুন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অর্জুনের গেরুয়াকরন রুখে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যারাকপুর আসনে আদৌ দীনেশ ত্রিবেদীকে জেতাতে পারবেন কিনা তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে উঠতে শুরু করেছে নানা প্রশ্ন। কেননা তৃণমূলে এই ট্র্যাডিশন রয়েছে যে, জেলার নেতাদের দলীয় প্রার্থী অপছন্দ হলেই তারা বিভিন্নভাবে অন্তর্ঘাত করে তাদের হারিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। ফলে সেই দিক থেকে অর্জুন এবং দীনেশের মধ্যে এহেন লড়াই তৈরি হয় কি না তা নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রবল ধন্দ। তবে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র নিয়েই শুধু জটিলতায় নয়, গতকাল সন্ধ্যায় তড়িঘড়ি নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তলবের মুখে পড়তে হয় তৃণমূলের তিন মহিলা সাংসদ অপরূপা পোদ্দার, উমা সোরেন এবং সন্ধ্যা রায়কে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই তিন সাংসদকে এবার প্রার্থী তালিকা থেকে ছেটে ফেলছেন তৃণমূল নেত্রী। এমনকি এই তৃণমূল সাংসদরা নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে দেখা করে যখন বেরিয়ে আসছিলেন, তখন তাদের শরীরী ভাষাও খুব একটা সুবিধাজনক ছিল না বলে খবর। তৃণমূল সূত্রের খবর, ঝাড়গ্রামে এবার উমা সোরেনের জায়গায় রাজ্যের আদিবাসী আন্দোলনের অন্যতম মুখ রবীন টুডুর স্ত্রী বীরবাহা টুডু, আরামবাগে অপরুপা পোদ্দারের জায়গায় মহিলা কমিশনের এক প্রাক্তন কত্রী এবং মেদিনীপুরের রাজ্যসভার সদস্যের নাম উঠে আসছে। অন্যদিকে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের ইদ্রিশ আলীর জায়গায় সিপিএম নেতার বড় ছেলে বা বাংলা সিনেমার এক জনপ্রিয় অভিনেত্রীকে পার্থী করার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে শাসক দলের অন্দরে। তৃনমূলের অনেকে বলছেন, নেত্রীর টেবিলে জমা পড়া অনেক কাগজই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাকে মনে ধরবে নেত্রীর এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। এদিন নবান্ন থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আসন্ন লোকসভা নির্বাচন বাংলায় সাত দফায় অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেন তৃণমূল নেত্রী বলেন, “বিহার উত্তরপ্রদেশ ও বাংলায় সাত দফায় ভোট হচ্ছে। আমি নির্বাচন কমিশনকে সম্মান করি। কিন্তু এটা বিজেপির কৌশল। তবে ওদের এই চেষ্টা এবার ব্যর্থ হবেই।” সব মিলিয়ে এক দিকে বাংলায় সাত দফা ভোট নিয়ে গেরুয়া শিবিরকে কটাক্ষ আর অন্যদিকে নিজের দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ দিনভর সকলেরই নজর কলকাতার 30 বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের দিকে। আপনার মতামত জানান -