তৃণমূলকে হারাতে তৃণমূলের ভরসা বিজেপি-কংগ্রেস! নতুন সমীকরণে তীব্র চাঞ্চল্য রাজ্য রাজনীতিতে! কংগ্রেস তৃণমূল বিজেপি মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম রাজনীতি রাজ্য July 3, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – তৃণমূলের সঙ্গে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল নতুন কিছু নয়। কিন্তু দলীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধানকে সরিয়ে দিতে বিরোধীদের সঙ্গে তৃণমূলের হাত মেলানোর ঘটনা সত্যিই বেনজির। আর এবার সেরকমই একটি ঘটনা ঘটল বাংলায়। যেখানে বিজেপি এবং কংগ্রেসের সাহায্য নিয়ে আস্থাভোটে পঞ্চায়েতের উপসমিতি থেকে দলীয় সদস্যকে সরিয়ে দিলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা। যার ফলে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে কালিয়াচক 2 ব্লকের মোথাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মোথাবাড়ি পঞ্চায়েতের 23 টি আসনের মধ্যে 16 টি তৃণমূল, 4 টি কংগ্রেস, একটি বিজেপি এবং দুটি আসন নির্দল দখল করেছিল। যেখানে পঞ্চায়েতের প্রধান হয়েছিলেন তৃণমূলের নিলুফা ইয়াসমিন। কিন্তু এক বছর পেরোতে না পেরোতেই এই পঞ্চায়েতের তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ তৈরি হয়। গত 15 জুন পঞ্চায়েতে তিনটি উপ সমিতির বিরুদ্ধে তৃণমূলের আটজন বিক্ষুব্ধ সদস্য এবং কংগ্রেস, বিজেপির সদস্যরা অনাস্থা আনে। জানা যায়, বৃহস্পতিবার তার আস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আর সেখানেই অংশ নেওয়া তৃণমূলের 8 পঞ্চায়েত সদস্য, একজন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, কংগ্রেসের চারজন এবং বিজেপির একজন পঞ্চায়েত সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তবে পঞ্চায়েতের প্রধান এবং তার গোষ্ঠীর 11 জন পঞ্চায়েত সদস্য এদিন অনুপস্থিত ছিলেন। আর ভোট নিতে বিডিওর প্রতিনিধি হিসেবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন কালিয়াচকের ডেপুটি সেক্রেটারি। এদিকে তিন উপসমিতি বিরুদ্ধে অনাস্থা আনায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে তিনটি উপসমিতির ভেঙে যায়। আর এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - অনেকে বলছেন, তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জন্য এবার বিরোধীদের সাহায্য নিয়ে তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী উপসমিতি ভেঙে দিল। যা সত্যিই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে শাসকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে আরও প্রকাশ্যে নিয়ে এল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কেন তারা হঠাৎ দলের বিরুদ্ধে এভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন? এদিন এই প্রসঙ্গে বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল সায়েম বলেন, “আমরা 14 জন আস্থাভোটে যোগ দিই। বাকি পঞ্চায়েত সদস্যরা আসেনি। আগামী দিনে আমাদের মত করে সমস্ত উপসমিতি ও সঞ্চালক গঠন করব।” অন্যদিকে আরেক বিক্ষুব্ধ সদস্য আবু বাককার সিদ্দিক বলেন, “আমরা বাধ্য হয়ে কংগ্রেস ও বিজেপির হাত ধরেছি। প্রধানের বিরুদ্ধে একাধিকবার দলে লিখিত অভিযোগ জানিয়েও ফল পাইনি। এবার উপসমিতি পরিবর্তন করব।” কিন্তু যেভাবে তার দলের সদস্যরাই তার বিরুদ্ধে সরব হলেন এবং আস্থা ভোটে বিজেপি ও কংগ্রেসের সাহায্য নিয়ে জিতে গেলেন, তাতে কি তৃণমূল চাপে পড়ল না? এদিন এই প্রসঙ্গে পঞ্চায়েত প্রধান নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, “এটা সম্পূর্ণ দল বিরোধী কাজ। জেলা নেতৃত্বের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে এই কাজ করল। বিষয়টি জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছে।” এদিকে এই ব্যাপারে গোটা ঘটনা রাজ্য নেতৃত্বকে জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি তৃণমূলের গৌরচন্দ্র মন্ডল। তবে তৃণমূলের একটি অংশ তৃণমূলের বিরুদ্ধে যেভাবে বিজেপি এবং কংগ্রেসের সাহায্য নিয়ে উপসমিতি ভেঙে দিল, তাতে বিজেপি এখানে যোগ দিল কেন? এদিন এই প্রসঙ্গে মালদহ জেলা বিজেপির কার্যকরী সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এসব স্থানীয় পঞ্চায়েত স্তরের বিষয়। এই ঘটনা আমার জানা নেই।” রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, যে যাই বলুন না কেন, যেভাবে এবার তৃণমূলকে সরাতে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বিরোধীদের সাহায্য নিতে শুরু করেছে, তাতে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে সবার আগে যে তাদের ঘরের দ্বন্দ্ব মেটাতে হবে, তা কার্যত পরিষ্কার হয়ে গেল। আর যদি তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব এখন লাগাম টানতে না পারে, তাহলে আগামী দিন তাদের পক্ষে অত্যন্ত ভয়ঙ্কর বলেই দাবি করছে বিশেষজ্ঞরা। কেননা এভাবে যদি চলতে শুরু করে, তাহলে বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের অনেক প্রার্থীকে তৃণমূলের অনেক নেতাই হারিয়ে যাওয়ার জন্য কাঠি করতে পারেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে। সব মিলিয়ে এবার মালদহের এই ঘটনা তৃণমূলের দলীয় শৃঙ্খলাকে বড়সড় প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল। আপনার মতামত জানান -