এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া > মারামারিতে আক্রান্ত অভিষেকের মা! বিজেপিকে অভিযুক্ত করলেন হেভিওয়েট মন্ত্রী!

মারামারিতে আক্রান্ত অভিষেকের মা! বিজেপিকে অভিযুক্ত করলেন হেভিওয়েট মন্ত্রী!

রাজনৈতিক সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি পাত্রসায়রের বেলুট গ্রামে। গত শুক্রবার তৃণমূলের পাত্রসায়রের পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ শিল্পা দাস মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে বিভিন্ন ভাবে ভাঙচুর করা হয়। একইসঙ্গে, তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম নেতা অভিষেক মুখোপাধ্যায়ের 80 বছরের মা কনক মুখোপাধ্যায়কে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। এর পাশাপাশিই আক্রান্ত হন, এক স্থানীয় তৃণমূল কর্মী দ্বৈপায়ন চট্টোপাধ্যায়ও। আর এসবের পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের।

এদিন পাত্রসায়রের বেলুট গ্রামে রাজনৈতিক সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া দলীয় কর্মীদের খোঁজ খবর নিতে আসেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অন্যতম হেভিওয়েট মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা। এদিন তাঁর উপস্থিতিতেই এলাকায় বন্ধ থাকা তৃণমূলের পার্টি অফিস নতুন করে চালু করা হয়। আর সেখানেই তিনি বিজেপিকে তীব্র আক্রমন করেন। তবে এই সমস্ত অভিযোগকে কার্যত উড়িয়ে দেয় ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্ব।

এদিন রবিবার সকালবেলা বেলুট গ্রাম এলাকায় পৌঁছান মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পাত্রসায়র ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি পার্থপ্রতিম সিংহ। এছাড়াও তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি সুব্রত দত্ত এবং অন্যান্য নেতৃত্ব। এলাকায় পৌঁছে শুক্রবার রাতে আক্রান্ত হওয়া দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা। কথা বলেন শিল্পাদেবী ও দ্বৈপায়নবাবুর সঙ্গে। আর এর পরেই এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ থাকা বেলুট গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল কার্যালয় খোলার ব্যবস্থা করেন তিনি।

ভাঙচুর করা পার্টি অফিসকে নিজে হাত লাগিয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পরিষ্কার করেন বিষ্ণুপুর সংসদীয় জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি শ্যামল সাঁতরা। এরপর পার্টি অফিসে তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা তোলা হয়। এদিন এই এলাকা থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে শ্যামলবাবু বলেন, “বিজেপির চরিত্র মানুষের কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। এরা 4 বছরের শিশু, 80 বছরের বৃদ্ধাকেও মারধর করতে ছাড়ছে না। মহিলা নেত্রীকে শ্লীলতাহানি করেছে। 4 লক্ষ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তিনি আরও বলেন, “স্থানীয় মানুষজন আমাকে জানিয়েছেন এবার তাঁরা প্রতিরোধে নামবেন।” এদিন নিজের বক্তব্যের পাশাপাশি দলীয় কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকার কারণে ইচ্ছে থাকলেও পাত্রসায়র যেতে পারছেন না বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন শ্যামলবাবু। তবে শ্যামলবাবুর পাল্টা হিসেবে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক ভারতীয় জনতা পার্টির জেলা সভাপতি স্বপন ঘোষ বলেন, “সমস্ত ঘটনা তৃণমূল কংগ্রেসের সাজানো।” পুলিশ প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস তাদের কর্মীদেরকে ফাসাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্বপনবাবু।

তবে আক্রান্ত তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ শিল্পা দাস বলেছেন, “সেদিন খুব আতঙ্কে কেটেছে। গ্রামের মানুষ সাহস জুগিয়েছেন। এছাড়াও পার্টির সব নেতারা এসেছিল। আমরা ভরসা পেয়েছি।” এদিকে এই প্রসঙ্গে পাত্রসায়র ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পার্থপ্রতিম সিংহ বলেন, “34 বছরের বামফ্রন্ট আমলেও কখনও এখানে মা বোনেদের উপরে অত্যাচার হয়নি। কিন্তু এখন ভারতীয় জনতা পার্টি সেই কাজ শুরু করে দিয়েছে।”

তবে এই ব্যাপারে ভারতীয় জনতা পার্টির পাত্রসায়র 2 নং মন্ডল সভাপতি তমাল গুই দাবি করে বলেন, “ওরা নিজেরাই ভাঙচুর করে আমাদের কর্মীদের গ্রেপ্তার করিয়েছে। এভাবে বিজেপিকে রোখা যাবে না। মানুষ ওদের সঙ্গে নেই বলে নাটক করছে।” সবকিছু মিলিয়ে পাত্রসায়র এবং বেলুট গ্রামে যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা রীতিমতো উত্তপ্ত বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল। বস্তুত, এবছর লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর এবং বাঁকুড়া দুইটি আসনেই ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে পরাজিত হয় তৃণমূল কংগ্রেস।

এরপরে একদিকে যেমন ভারতীয় জনতা পার্টি নিজেদের সংগঠন বিস্তারের মনোযোগী হন, অন্যদিকে তেমনই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের হারিয়ে যাওয়া মাটি পুনরুদ্ধার করতে সচেষ্ট হন বলে মত রাজনৈতিক মহলের। লোকসভা নির্বাচনে শাসকদলের পায়ের তলার মাটি সরে গেলেও, আসন্ন পুর-নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া তারা। এই পরিপ্রেক্ষিতে, সংঘর্ষের বাতাবরণ প্রায়শই এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন একাংশ। এখন আগামী দিনে পরিস্থিতি কোন দিকে এগোয়, সেদিকেই লক্ষ্য থাকবে ওয়াকিবহাল মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!