এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > এবার কি বিজেপির দিকে পা বাড়াচ্ছেন রাজীব ব্যানার্জি? জল্পনা বাড়ালেন খোদ তৃণমূলের মন্ত্রী!

এবার কি বিজেপির দিকে পা বাড়াচ্ছেন রাজীব ব্যানার্জি? জল্পনা বাড়ালেন খোদ তৃণমূলের মন্ত্রী!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিধানসভা নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে, ততই কি তৃণমূলে ভাঙ্গন ধরেছে? তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষ নেতাদের মধ্যেই পড়েন রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যতম শক্তিশালী জেলা সে দক্ষিণ দিনাজপুর হোক বা নদীয়া, প্রতিটি জায়গায় তৃণমূলের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন রাজীববাবু। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত আস্থাভাজন তিনি। কিন্তু নিজের গড়েই এখন রীতিমত ব্যাকফুটে রাজ্যের হেভিওয়েট মন্ত্রী বলে তীব্র জল্পনা রাজ্য রাজনীতিতে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের পর ক্ষতিপূরণের অর্থ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের নানা নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তারপর তৃণমূলের তরফে সেই সমস্ত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সম্প্রতি হাওড়া জেলায় তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী অরূপ রায় বেশ কিছু তৃণমূল নেতাকে এই ব্যাপারে সাসপেন্ড করেন। আর এরপরই সেই বিষয়ে মুখ খোলেন জেলার হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়‌।

যেখানে তিনি বলেন, “রাঘব-বোয়ালদের বাদ দিয়ে কেন চুনোপুঁটিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল! আমি কেন কিছু জানতে পারলাম না? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ছেন। কয়েকজনের জন্য দলকে কালিমা লিপ্ত হতে দেওয়া যায় না। এই সিদ্ধান্ত জেলা তৃণমূল সভাপতি একতরফাভাবে নিয়েছেন। কয়েকজন ভুঁইফোড় দুর্নীতির জন্য দলের ভাবমূর্তি খারাপ হতে দেব না। যতদিন রাজনীতিতে থাকব, ততদিন লড়াই করব। সবকিছুই আমাকে অন্ধকারে রেখে করা হয়েছে।”

এখানেই শেষ নয়, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় আরও এক ধাপ এগিয়ে এদিন বলেন, দলীয় নিয়ম নীতি অনুযায়ী সভাপতি ও কো-অর্ডিনেটর একসঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেবেন। তেমনটা করা হয়নি। চুনোপুঁটিদের বলি দিয়ে রাঘব-বোয়ালদের বাঁচানো হয়েছে। হাওড়ার মানুষ জানে কারা দুর্নীতিপরায়ন। দলকে সবকিছু জানিয়েছি – যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার দলই নেবে। আর রাজ্যের হেভিওয়েট মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এইভাবে মুখ খুলতেই রীতিমত ঝড় বইতে শুরু করেছে রাজ্য রাজনীতিতে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন তিনি দুর্নীতি নিয়ে অনেক প্রশ্ন তুললেও কোনো নাম নেন নি। কিন্তু, তাঁর কথার পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা যেভাবে মুখ খুললেন রাজ্যের আরেক হেভিওয়েট মন্ত্রী অরূপ রায় – তারপরেই উঠে গেছে অনেক প্রশ্ন। এদিন অরূপবাবু বলেন, বিজেপির ভাষায় যদি আমার দলের কোনও লোক কথা বলে তাহলে তা ঠিক কি বোঝায় তা বুঝে নিতে হবে। এ কথা কখনওই দলের সাচ্চা একজন কর্মীর মুখে মানায় না। যারা দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থী দাঁড় করিয়ে রিগিং করে হারিয়ে দেন তাদের মুখে এসব কথা মানায় না।

রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় এদিন আরও বলেন, দলের অনুমতিক্রমেই ওই নেতাদের সাসপেন্ড বা শোকজ করা হয়েছে। যদি আবারও কারও বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নিতে আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়, তাহলে আবার আমি তাই করব। তাকে (রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে) অনেকবার বৈঠকে বা প্রেস কনফারেন্সে ডাকা হলেও তিনি আসেন না। তিনি অবশ্যই এসব বিষয় নিয়ে দলের অন্দরে কথা বলতে পারেন, তবে কখনওই তা সংবাদমাধ্যমের কাছে বলা উচিত হয়নি। আর হাওড়ার দুই হেভিওয়েট মন্ত্রীর এই বাকযুদ্ধে নতুন সমীকরণ দেখতে পাচ্ছেন অনেকেই।

এদিন অরূপ রায়ের মুখে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে “বিজেপির ভাষায় যদি আমার দলের কোনও লোক” মন্তব্যই এই জল্পনার পিছনে সব থেকে বেশি দায়ী। জেলার হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা দুর্নীতি নিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি পদক্ষেপের পরেই যেভাবে জেলা তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে মন্তব্য করলেন, তাতে রীতিমত তৃণমূলের হেভিওয়েট মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থান নিয়ে দলের অন্দরে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। তৃণমূল বর্তমানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং দুর্নীতিকে একদম ছেটে ফেলতে চাইছে।

কিন্তু সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার পরেই যেভাবে রাজীববাবু তার বিরুদ্ধে সরব হলেন – তা নিয়ে জল্পনা চলছিলই। আর অরূপবাবুর পাল্টা প্রত্যাঘাতের পর সেই দ্বন্দ্বে যেন সরকারি সিলমোহর পরে গেল বলে অভিমত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। আর এই গোটা ঘটনায় ব্যাপক চাপে পড়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব বলেই মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। ইতিমধ্যেই দলের অন্দরে গোটা বিষয়টি আলোচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

তবে হেভিওয়েট মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এতদিন দলের নির্দেশে সমস্ত কাজ করলেও, যেভাবে নিজের জেলাতেই, তাঁর বিরুদ্ধে জেলা তৃণমূল সভাপতি ঘুরিয়ে ‘বিজেপির ভাষায়’ বলে তাঁকে আক্রমন করলেন – তাতে করে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে এখন শুরু হয়েছে জল্পনা। তাহলে কি এবার ধীরে ধীরে দলের অন্দরে বিদ্রোহী হয়ে উঠছেন রাজ্যের মন্ত্রী? তাহলে কি তিনি এবার বড়সড় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন? তাহলে কি দলের সঙ্গে দূরত্ত্ব বাড়ছে তাঁর? এমনই হাজারটা প্রশ্ন এখন হাওড়া জেলার রাজনীতিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যার উত্তর হাতড়াচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!