প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – দুর্নীতি এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে। গত লোকসভা নির্বাচনে এই দুর্নীতির কারণেই অনেক আসনে হারতে হয়েছিল রাজ্যের শাসক দলকে। যার পরেই তৃণমূলের অনেক নেতার বাড়ির সামনে কাটমানি ফেরত দেওয়ার দাবিতে সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ সংগঠিত হয়। ব্যাপক চাপে পড়ে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব।

সরকারি প্রকল্পের টাকা নয়ছয় সহ মানুষের বাড়ির সাহায্যের টাকা আত্মসাৎ করা, বিভিন্ন ঘটনায় নাম জড়িয়ে পড়ে তৃণমূলের ছোট বড় মেজো নানা স্তরের নেতাদের। সাধারণ বাসিন্দা এবং বিরোধীদলের পক্ষ থেকে তৃণমূলের নানা নেতাদের বাড়ির সামনে প্ল্যাকার্ড লাগিয়ে দেওয়া, বিক্ষোভ করা ইত্যাদি ঘটনায় আরও অস্বস্তিতে পড়ে শাসক দল। বর্তমানে ভয়াবহ দুর্যোগের ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে তৃণমূলের নানা নেতার নাম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে

। বিভিন্ন পঞ্চায়েতে তৃণমূলের নেতাদের ঘনিষ্ঠদের বাড়িতে এই ক্ষতিপূরণের টাকা ঢুকেছে বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। যার ফলে গোটা রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে শাসক দল। তবে তৃণমূলের তরফে ব্যবস্থা নিয়ে মানুষের কাছে নিজেদের দলের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও, সামনের বিধানসভা নির্বাচনে এই ঘটনায় যে তৃণমূলকে ব্যাপক চাপে পড়তে হবে, সেই বিষয়টি কার্যত স্পষ্ট বিশেষজ্ঞদের কাছে।

ইতিমধ্যেই বুধবার পর্যন্ত উত্তর 24 পরগনা জেলায় ক্ষতিপূরণের প্রায় এক কোটি টাকা ফেরত দিয়েছে দুর্নীতিগ্রস্তরা‌। কিন্তু তৃণমূলের হুঁশিয়ারির পর দলের জনপ্রতিনিধিরা দুর্নীতির ঘটনায় জড়িত হওয়ার পর সেই টাকা ফেরত দিলেও তৃণমূলের নেতাকর্মীরাই যে দুর্নীতির ঘটনায় জড়িত, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। যার ফলে চাঞ্চল্য বাড়ছে। প্রশাসনের একাংশ বলছেন, অনেকে প্রথমে লজ্জায় টাকা ফেরত দিতে আসেনি। এরপর ধীরে ধীরে বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করে টাকা ফেরতের জন্য চাপ বাড়ানোয় এই প্রবণতা বাড়ছে।

অর্থাৎ এই টাকা ফেরতের ঘটনায় কার্যত স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে তৃণমূলের বেশিরভাগ জনপ্রতিনিধি ভয়াবহ দুর্যোগের ক্ষতি পূরণে টাকা আত্মসাৎ করার ঘটনায় অভিযুক্ত হয়েছেন। আর বর্তমানে প্রশাসন এবং দলের তরফে চাপ দেওয়ায় এখন তারা সেই টাকা ফেরত দিচ্ছেন। যার ফলে প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে যে, তৃণমূল কিছুটা হলেও এই দুর্যোগের ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে দুর্নীতি করেছে বলে দাবি করছে বিরোধীরা। এদিন এই প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নারায়ন গোস্বামী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা প্রশাসনিকভাবে সর্বস্তরে পৌঁছে দিয়েছি। এখনও পর্যন্ত 12 জনকে দুর্নীতির জন্য শোকজ করা হয়েছে। আরও বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে শোকজের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কেউ ছাড় পাবে না। গরিব মানুষের টাকা নিয়ে কোনো নয়ছয় বরদাস্ত করা হবে না।”

তবে এখন তৃণমূল নেতৃত্ব যে কথাই বলুন না কেন, বিরোধীরা যে গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ময়দানে নামবে এবং বিধানসভা নির্বাচনে ভয়াবহ দুর্যোগের ক্ষতিপূরণের টাকা আত্মসাৎ করার ঘটনায় তৃণমূল ব্যাপক অস্বস্তিতে পড়বে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সব মিলিয়ে এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।