এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > তৃণমূল নয়, সিবিআই কি বিজেপির প্রধান অস্বস্তি? শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারিতে বাড়ছে চাপ!

তৃণমূল নয়, সিবিআই কি বিজেপির প্রধান অস্বস্তি? শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারিতে বাড়ছে চাপ!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  রাজ্যে বহু চেষ্টা করেও তারা ক্ষমতা দখল করতে পারেনি। কিন্তু রাজ্যে বিরোধীদলের জায়গা দখল করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর বিধায়করা শপথ নেওয়ার পর তৃণমূল নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করার পরেই শাসকদলের অস্বস্তি বাড়িয়ে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে নারদ কান্ডে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তৃণমূলের দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক এবং রাজ্যের এক প্রাক্তন মন্ত্রীকে। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনা তৃণমূলকে চাপে ফেলে দেওয়ার অন্যতম অস্ত্র হিসেবে প্রয়োগ করার কথা ছিল ভারতীয় জনতা পার্টির।

কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে তৃণমূলের দুই মন্ত্রী এবং এক বিধায়ক গ্রেপ্তার হওয়ার পরে কার্যত চাপ বাড়তে শুরু করেছে ভারতীয় জনতা পার্টির। গোটা পরিস্থিতি কি আদৌ তাদের পক্ষে গেল! এখন তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু করে দিয়েছে বিজেপি নেতারা। অনেকেই বলতে শুরু করেছেন, এতটা সক্রিয় হয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা পদক্ষেপ গ্রহণ না করলেই পারত। এমনিতেই বিজেপির প্রতি বাংলার মানুষ সমর্থন দেখাননি। বহু চেষ্টা করেও প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এনেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে পরাজিত করতে পারেনি ভারতীয় জনতা পার্টি।

অর্থাৎ মানুষ যে তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে, তা ভোটবাক্স খোলার পরই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে‌। আর পরাজিত হয়ে যাওয়ার পর বিরোধী আসনে বসা ভারতীয় জনতা পার্টি প্রতিহিংসাপরায়ন আচরণ করছে বলে সিবিআইয়ের গ্রেপ্তারির পর প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই এই পরিস্থিতিতে ভোটের ফলাফল বেরোনোর পরই যেভাবে সিবিআই তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রী, বিধায়কদের গ্রেপ্তার করেছে, তাতে জনতার রায় এই ইস্যুতে যে বিজেপিকে একেবারে ব্যাকফুটে ফেলে দেবে, তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরমহলেই।

জানা গেছে, এই গোটা বিষয় নিয়ে বিজেপি যথেষ্ট চাপে রয়েছে। বিরোধী আসনে বসে তারা তৃণমূলকে রাজ্যের আইনশৃংখলা সহ ও অন্যান্য বিষয়ে চেপে ধরার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু সেক্ষেত্রে রাজ্যপালের অনুমোদনের পর যেভাবে রাজ্যের শাসকদলের মন্ত্রী, বিধায়করা গ্রেপ্তার হলেন, তাতে মানুষ এই গোটা ঘটনাকে ঠিক ভাবে নিচ্ছেন না। বিজেপির একাংশ মনে করছেন, এর ফলে দল আরও বিড়ম্বনার মুখে পড়ল। হয়ত বা অনেকে মনে করতে পারেন যে, তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রীরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর বিজেপি অনেকটা সুবিধা পেয়ে গেল।

কিন্তু মানুষের কাছে তৃণমূল এই কথা তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে যে, বিজেপি দ্বারা পরিচালিত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। আর ভোটে পরাজয়ের পরপরই যেভাবে শাসক দলের নেতা মন্ত্রীরা গ্রেপ্তার হলেন, প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে যে বিজেপি এই কাজ করেছে, তা মানুষের কাছে তুলে ধরতে তৃণমূল কংগ্রেস। স্বাভাবিক ভাবেই গোটা ঘটনা বিজেপির পক্ষে যাবে বলে মনে করা হলেও, বাস্তবে এই বিষয়ে যে তাদের গলার কাঁটা হয়ে উঠতে পারে ভবিষ্যতে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষ সূত্র মারফত খবর, পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে, তা অনুধাবন করে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে রিপোর্ট করতে শুরু করেছে বিজেপির অনেক রাজ্য নেতারা। জানা গেছে, রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে নিজেদের ক্ষোভের কথা জানিয়ে দিয়েছেন অনেক বিজেপি নেতা। এখন এই রকম উদ্যোগ নেওয়াতে বিজেপি যে আরও মানুষের মন থেকে মুছে যাবে, সেই কথা শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে এই প্রসঙ্গে এক বিজেপি নেতা বলেন, “সিবিআইয়ের চার্জশিট তৈরি হয়ে গেলে তারা আদালতে জমা দিয়ে দিতে পারত। তারপরে আদালতের সিদ্ধান্ত যা হওয়ার হত। পাঁচ বছর ধরে পড়ে থাকা মামলায় গ্রেফতারের জন্য এই সময়টা কেন বেছে নেওয়া হল, কে জানে!” বিজেপির অনেক নেতা থেকে শুরু করে কার্যকর্তা বুঝতে পারছেন যে, বর্তমান সময়ে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই পদক্ষেপ নেওয়া কার্যত ভুল।

যে যাই বলুন না কেন, তৃণমূল যেভাবে তাদের নেতা- মন্ত্রীদের গ্রেপ্তারের পর সিবিআইকে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছে, তাতে মানুষের মনে বিজেপি সম্পর্কে কিছুটা হলেও ক্ষোভের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এমনিতেই বিধানসভা নির্বাচনে তারা প্রত্যাখ্যাত। তার মধ্যে ভোটের পরেই ক্ষমতা দখল করতে না পেরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার এই উদ্যোগ যে আদতে বিজেপির ওপরতলা নেতাদের দেখানো পথ অনুসরণ করা, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত অনেকেই।

আর এই সহজ সত্যটা অনুধাবন করেই এখন কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে শুরু করেছে রাজ্য বিজেপির নেতারা। ভবিষ্যতে পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে পৌরসভা নির্বাচন রয়েছে। তখন এই বিষয়কে শিখন্ডী করে তৃণমূল যে বিজেপির আরও চাপে ফেলে দিতে পারে, তা বুঝতে পারছেন রাজ্য বিজেপির অনেক পদাধিকারী।

তাই এখন থেকেই সর্তকতা অবলম্বন করতে শুরু করেছেন তারা। যদিও বা এই গ্রেপ্তারির সঙ্গে তাদের কোনো যোগ নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম নেতা রাহুল সিনহা। এদিন তিনি বলেন, “তদন্ত হচ্ছে আদালতের নির্দেশে। এর সঙ্গে বিজেপির কোনো সম্পর্ক নেই‌। এই নিয়ে আমাদের ভাবার কিছু নেই।”

তবে মুখে তিনি যে কথাই বলুন না কেন, দলের ভেতরে যে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে যে সব রকমের চেষ্টা চলছে, তা বলাই যায়। তবে অস্বস্তি ঢাকতে এবং মানুষের মনে তৃণমূল যে কথা পরিবেশন করছে, তাকে মুছে দিতে গেরুয়া শিবির কি পদ্ধতি প্রয়োগ করে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!