এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > তৃণমূলে সম্মান নেই পুরনো কর্মীদের, এতদিনে হুশ ফিরলো মমতার? পাল্টা কটাক্ষ বিজেপির!

তৃণমূলে সম্মান নেই পুরনো কর্মীদের, এতদিনে হুশ ফিরলো মমতার? পাল্টা কটাক্ষ বিজেপির!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত আখের গোছানো, স্বার্থবাদী একজন রাজনীতিবিদ পশ্চিমবঙ্গ কেন, গোটা ভারতবর্ষে ব্যতিক্রম। নিজেরটা ছাড়া, নিজের সুবিধা ছাড়া, নিজের ক্ষমতা ছাড়া তিনি আর কিচ্ছু বোঝেন না। পরিবার বাদকে প্রতিষ্ঠা করাই তার প্রধান লক্ষ্য। এমনকি দলের কর্মীরাও যদি বিপদে পড়েন, তাহলেও তাদের দিকে নজর দেন না এই নেত্রী। না, এই সমস্ত অভিযোগ আমরা করছি না। এতদিন ধরে দলের সিস্টেম, দলের গঠনতন্ত্র নিয়ে এই সমস্ত কথাই বলেছেন তৃণমূলের নীচুতলার অনেক কর্মীরা। এমনকি বিরোধীরাও এই সমস্ত বিষয় তুলে ধরে তৃণমূল নেত্রীকে আক্রমণ করেন। মানুষকে পরিষেবা তো অনেক পরে দেবেন, যিনি নিজের দলের পুরানো কর্মীরা, যারা তাকে ক্ষমতায় আনার জন্য একসময় প্রাণপাত করেছিলেন, তাদের দিকে নজর দেন না, তিনি আবার কিসের নেত্রী? বর্তমানে তৃণমূলে নতুনদের ভিড়ে যখন পুরনোরা হারিয়ে যাচ্ছে, তখন কেউ যাতে মান-অভিমান না করেন এবং দলের ওপর গোঁসা করে বিজেপির দিকে চলে না যান, তার জন্য এবার নিজের হাতেই ব্যাটিং ধরলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এত দেরি করে তিনি পুরনোদের সম্মান জানানোর কথা বললেও, আর বরফ গলবে না বলেই দাবি করছে বিরোধীরা।

প্রসঙ্গত, এদিন নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকে পুরাতন তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে অনেক বড় বড় কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “যারা পুরনো কর্মীরা আছেন, যারা নিজেদের বঞ্চিত বলে মনে করছেন, তাদের কি করে অ্যাকোমোডেট করা যায়, এটা আমি দেখে নেব। সবাইকে এক জায়গায় এসে কাজ করতে হবে।” অনেকে বলছেন, তৃণমূলে তো এখন অনেকগুলো লবি। পিসির লবি, ভাইপোর লবি। ভাইপোর বাড়বাড়ন্ত হওয়ার পর থেকে দলের অনেক বর্ষীয়ান উঁচু তলার নেতারাও পিছনের সারিতে পড়ে গিয়েছেন। আর এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝতে পেরেছেন। সামনের লড়াইটা অনেক বড়। বিজেপিকে নাকি তিনি দেশ থেকে ক্ষমতাচ্যুত করবেন। কিন্তু নিজের দলের মধ্যেই যখন ভাগাভাগি তৈরি হয়েছে, তখন ইন্ডিয়া জোট গঠন করে বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরানো তার কাছে অলীক কল্পনা ছাড়া আর কিছু নয়। এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভালোই বুঝতে পারছেন। তাই এখন নিজের দলের পুরাতন কর্মীদের মান ভাঙানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু এতদিন তার এই চেষ্টা কোথায় ছিল? কেন তিনি ভুলে গেলেন যে, পুরাতন কর্মীদের জন্য তিনি ক্ষমতায় এসেছেন, যারা লড়াই করেছেন, তাদের কথা? নতুন যারা দলে এসেছেন, তাদেরকে জায়গা দিয়ে দিলেন কেন?

তবে ঠেলার নাম বাবাজি, তাই এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সমস্ত কথা বলে পুরাতন কর্মীদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন বলেই দাবি করছে গেরুয়া শিবিরের। তাদের বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝতে পেরেছেন, তার দল আর বেশিদিন টিকবে না। দলের মধ্যে চুরি, স্বজন পোষনের বিরুদ্ধে অনেক নেতারা তার বিরুদ্ধেই প্রশ্ন তুলছেন। পুরাতন যারা কর্মী ছিলেন, যারা নেতা ছিলেন, তারা আজ অবহেলিত। সুযোগ এলেই সেই সমস্ত নেতারা ভাইপোর বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলে জার্সি বদল করে নিতে পারেন। তাই লোকসভার আগে যাতে দলের ভাঙ্গন আটকানো যায়, তার জন্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই পুরাতন কর্মীদের প্রতি এত দরদ উথলে পড়ছে। তবে এতে যদি পুরাতন কর্মীরা গলে যান, তাহলে তারা আবার ভুল করবেন। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি করে ব্যবহার করে ছুড়ে ফেলতে হয়, তা খুব ভালোই জানেন। তাই তৃণমূলকে যারা একসময় ক্ষমতা এনেছিলেন, সেই সমস্ত কর্মীদের আবার পরিবর্তনের পক্ষে লড়াই করে বিজেপির হাত শক্ত করা উচিত বলেই দাবি পদ্ম শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, এতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতার স্বাদ আস্বাদন করেছেন। যারা অন্য দল থেকে এসেছেন, তাদেরকে টিকিট দিয়েছেন, তাদেরকে জায়গা দিয়েছেন। পুরাতন কর্মীরা দলের কাছে বারবার অবহেলার কথা জানিয়েও লাভ হয়নি। তাই এবার জবাব দেওয়ার পালা। নেত্রী হয়তো আহ্বান জানাচ্ছেন বিজেপিকে আটকানোর জন্য। কিন্তু এবার সেই সমস্ত পুরাতন কর্মীরা যারা এতদিন চোখের জল ফেলেছেন, তারাও নেত্রীকে জবাব দিয়ে জানিয়ে দিন, এতদিন তাদের ব্যবহার করা হয়েছে। তাই এবার তারা আর নেত্রীর হাত শক্ত করতে পারবেন না। বরঞ্চ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের নিয়েই এই লড়াইটা সংগঠিত করুন, যারা তার এই সুদিনের সঙ্গী হয়েছেন। যারা নতুন নতুন দলে এসে বড় বড় পদ পেয়ে গিয়েছেন, তারা কেমন নেত্রীর হাত শক্ত করতে পারেন, সেটাই এবার পুরাতন কর্মীরা দেখবেন। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতই পুরনো কর্মীদের কাছে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন, তাতে অন্তত বরফ গলবে না। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!