এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মেদিনীপুর > উন্নয়ন না হওয়ার দায় কার? বিজেপি না তৃণমূলের? এর উত্তরেই কি খড়্গপুরের ভাগ্য নির্ধারণ?

উন্নয়ন না হওয়ার দায় কার? বিজেপি না তৃণমূলের? এর উত্তরেই কি খড়্গপুরের ভাগ্য নির্ধারণ?


খড়গপুর উপনির্বাচনের জন্য হাতে মাত্র আর কয়েকটা দিন। নির্বাচন কমিশনের কথা অনুযায়ী আগামী 24 নভেম্বর হতে চলেছে খড়্গপুর উপনির্বাচন। আর এই উপনির্বাচনে জেতার জন্য নির্বাচনী প্রচারে জোর দিয়েছে প্রতিটি দল। লক্ষণীয় খড়্গপুরের দুই যুযুধান শিবির তৃণমূল এবং বিজেপি দুজনেই জোর দিয়েছে নির্বাচনী প্রচারে উন্নয়নের ওপর। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে খড়গপুরকে বিজেপি মুক্ত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয়েছে। অন্যদিকে, বিজেপির পুরনো ঘাঁটি খড়গপুর। এত সহজে তাঁরা তাঁদের ঘর ভাঙতে দেবে না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞের দল।

রাজ্যের শাসক দল খড়্গপুরে নির্বাচনী প্রচারে স্লোগান তুলেছে উন্নয়নের পক্ষে। তাদের শ্লোগান ‘ভোট ফর ডেভেলপমেন্ট।’ যদিও এই নিয়ে খড়গপুর এলাকাতেই যথেষ্ট সমালোচনা চলছে। অন্যদিকে, বিজেপিও উন্নয়নের দাবিকেই হাতিয়ার করেছে তাদের নির্বাচনী প্রচারে। তাঁদের স্লোগান ‘ডেভলপমেন্ট কে লিয়ে বিজেপি কো জিতায়ে।’

অন্যদিকে, খড়গপুর এলাকাবাসীর দাবি, উন্নয়ন কোথাও সেভাবে হয়নি। যার ফলে তৃণমূল প্রার্থী তথা পুরপ্রধান প্রচারে বেরিয়ে নানান অভিযোগ শুনছেন। যেখানে পুর প্রধানকে পাওয়া যাচ্ছে না, সেখানে বিজেপি প্রার্থী প্রেমচাঁদ ঝাঁকে ঘিরে ধরে এলাকার মানুষ তাদের অভিযোগ জানাচ্ছেন। তবে এলাকার প্রত্যেক মানুষের অভিযোগের তীর সম্পূর্ণরূপে এলাকার তৃণমূলের স্থানীয় কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে।

অবশ্য তৃণমূল স্হানীয়দের অভিযোগকে সেই অর্থে কোনো গুরুত্ব দিচ্ছেনা। তাঁদের দাবি বরং উল্টো। তৃণমূলের তরফে বলা হচ্ছে, বিরোধী দল বিজেপির চক্রান্তেই এলাকার মানুষরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। উন্নয়নের দাবি নিয়ে তৃণমূল জানিয়েছে, পুরসভার হাত ধরে গত কয়েক বছরে খড়্গপুরে প্রচুর উন্নয়ন হয়েছে। রাস্তায় আলো এসেছে, শ্মশানঘাটের উন্নতি হয়েছে ইত্যাদি।

অন্যদিকে, তৃণমূলের জেলা সম্পাদক শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, খড়্গপুরের উপনির্বাচন জিততে মূল হাতিয়ার এলাকার সাধারণ মানুষের সমস্যার সমাধান। উন্নয়নে জোর দিতে হবে। একইসঙ্গে তিনি রেলের অনুন্নয়ন নিয়েও এদিন সরব হয়েছেন। অন্যদিকে তৃণমূলের ঠিক উল্টো কথা বলছে বিজেপি। তাঁদের দাবি, শহরে কোনো উন্নয়ন হয়নি। যা হয়েছে তা শুধু সাজানো।

এই পরিস্থিতিতে বিজেপির নির্বাচনী প্রচারে আরও জোর বাড়ছে এলাকার মানুষের বিক্ষোভের ফলে। এলাকার মানুষের বিক্ষোভেই বোঝা যাচ্ছে, উন্নয়নের ফলা কতটা ভোঁতা। উল্লেখ্য, গত 27 নভেম্বর এক নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারে গিয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকার। সেখানে তাঁকে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘিরে ধরে স্থানীয় কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এলাকার বাসিন্দারা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, নিকাশি থেকে শুরু করে রাস্তা, আবাস যোজনা কোন উন্নয়নই এলাকায় হয়নি। এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা আশীষ সেনগুপ্ত।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে, গত 11 ই নভেম্বর 12 নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় মহিলারা রাস্তা অবরোধ করতে যান, নিকাশি ও অন্যান্য অনুন্নয়নের অভিযোগ নিয়ে। যদিও পুলিশের পদক্ষেপে এই অবরোধ বাধাপ্রাপ্ত হয়। কিন্তু এরপর স্থানীয় পুরপ্রধান নির্বাচনী প্রচারে গেলে তাঁকে ঘিরে ধরে স্থানীয়রা বিক্ষোভ চালাতে থাকে। কিন্তু পুরপ্রধান-পাল্টা বলেন এলাকার উন্নয়ন নিয়ে এতদিন কেন কোনো কথা হয়নি? তিনি দাবি জানান, নির্বাচনী প্রচার ভেস্তে দিতে বিজেপি-সিপিএম চক্রান্ত করে এ ধরনের বাধা সৃষ্টি করছে।

অন্যদিকে পুর পরিষেবা নিয়ে স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে প্রেমচাঁদ ঝাকে। অনুন্নয়ন এর অভিযোগ তুলে প্রেমচাঁদ ঝা বলেন, “উনি (পুরপ্রধান) তো নিজেকে উন্নয়নের কান্ডারী বলছেন। এদিকে মানুষকে উন্নয়নের আসল চেহারা দেখাচ্ছেন। নর্দমা নেই, রাস্তা নেই, জলে রাস্তা ভাসছে। অবস্থা এমনই যে কে কোন দলের নেতা, সেটা মানুষ বুঝতে চাইছে না। তাই আমাদেরও প্রচারে গিয়ে এসব কথা শুনতে হচ্ছে।’

এই কথার প্রেক্ষিতে তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকার বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে অনুন্নয়নের কথা নিয়ে বলেছেন, ‘2016 থেকে রেল শহরে বিজেপির বিধায়ক ছিলেন। এখনতো সাংসদ রয়েছেন। তারপরেও এই এলাকায় কোন উন্নয়ন বিজেপি করেনি। এই শহরে আলো থেকে রাস্তাঘাট, শ্মশান সবকিছুই পুরসভা ও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে।” তবে নিকাশি যে এলাকার প্রধান সমস্যা তা মেনে নিয়েছেন এদিন পুরপ্রধান। আর তার পরেই তিনি নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, ‘আইআইটি কে দিয়ে মাস্টারপ্ল্যান তৈরীর পরিকল্পনা রয়েছে।’

খরকপুর কেন্দ্রে বরাবরই জোর হচ্ছে বিজেপির। 2014 বিধানসভা ভোটে বিজেপির পক্ষ থেকে দিলীপ ঘোষ প্রথম খড়গপুর অধিগ্রহণ করেন। আর লোকসভা ভোটে বিজেপির জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে দিলীপ ঘোষ সাংসদ হিসাবে জয়লাভ করেন। বলাইবাহুল্য খড়গপুর কালক্রমে বিজেপির গড় হিসেবেই পরিচিত হয়েছে। এবারেও তাই উপনির্বাচনে জয়ের ধারা বজায় রাখতে বিজেপি সমগ্র শক্তি নিয়ে ঝাঁপাবে।

আর সেই শক্তিকে প্রতিরোধ করার জন্য তৃণমূলও উন্নয়নের অস্ত্রকে হাতিয়ার করে নির্বাচনী প্রচারে নেমেছে। তবে খড়গপুর কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে যে একটা প্রেস্টিজ ফাইট হতে চলেছে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। আপাতত উন্নয়নের হাতিয়ারকে সঙ্গী করে খড়গপুর কোন দল অধিকার করছে, সে দিকেই নজর থাকবে পরিদর্শক মন্ডলীর।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!