এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > তৃণমূল করতে গেলে কাটমানির প্রয়োজন? হেভিওয়েট নেতার মন্তব্যে বিপাকে শাসকদল, পাল্টা হুঁশিয়ারি সুব্রতর!

তৃণমূল করতে গেলে কাটমানির প্রয়োজন? হেভিওয়েট নেতার মন্তব্যে বিপাকে শাসকদল, পাল্টা হুঁশিয়ারি সুব্রতর!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সবথেকে বেশি কাটমানি এবং দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছিল বিরোধী দল বিজেপি। যে কোনো কাজে হাত দিতে গেলেই তৃণমূল নেতাদের কাটমানি দিতে হয় বলে প্রায়শই বাংলাজুড়ে অভিযোগ ওঠে। কিন্তু প্রথম থেকেই যাতে কেউ কাটমানি না নেন, তার জন্য প্রশাসন থেকে শুরু করে দলের সকলকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তৃতীয়বার তৃণমূল কংগ্রেস বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসতে না আসতেই বিপুল অঙ্কের টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত পূর্ব বর্ধমানের গলসির গোহগ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে।

তবে শুধু অভিযোগ ওঠাই নয়, পরোক্ষে এই টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে নিতে দেখা গেল সেই পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের রিঙ্কু ঘোষকে। যেখানে দল চালাতে গেলে টাকা লাগে বলে প্রকাশ্যে জানিয়ে দিলেন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই তৃণমূল নেতা এইভাবে প্রকাশ্যে কাটমানি নেওয়ার কথা স্বীকার করে নেওয়ায় কার্যত চাপের মুখে পড়ে গেল ঘাসফুল শিবির। যদিও বা তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান এই ধরনের মন্তব্য করার সাথে সাথেই পাল্টা তার মন্তব্যের বিরোধিতা করে কোনো সময় দল চালাতে গেলে টাকা লাগে না বলে দাবি করতে দেখা গেল রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। অর্থাৎ দলের পঞ্চায়েত প্রধানের মন্তব্যে যে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে শাসক দল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

জানা গিয়েছে, সম্প্রতি এই পঞ্চায়েতের টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়। যেখানে কাটমানির অভিযোগ তুলে সরব হয় একাংশ। সরাসরি এই ব্যাপারে অভিযোগ ওঠে পঞ্চায়েত প্রধান রিঙ্কু ঘোষের বিরুদ্ধে। আর তারপরেই বিস্ফোরক মন্তব্য করতে দেখা যায় সেই পঞ্চায়েত প্রধানকে। তিনি বলেন, “দল চালাতে গেলে টাকা নেওয়া হয়, সেটা সবাই জানে। তা না হলে দল চলবে কিভাবে! বিডিও সাহেব বলেছিলেন, অনলাইনে কাজে দেরি হতে পারে। তাই দ্রুতগতিতে কাজের জন্য তিনি অফলাইনের কথা বলেছিলেন।”

এদিকে পঞ্চায়েত প্রধান যখন দল চালাতে গেলে টাকার প্রয়োজনীয়তার কথা বলছেন, তখন তা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষ নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। স্বাভাবিকভাবেই একদম নীচুতলার জনপ্রতিনিধির মুখ থেকে এই কথা শুনে কিছুটা হলেও হতবাক হয়ে যান বর্ষিয়ান মন্ত্রী সুব্রতবাবু। তিনি বলেন, “এত ছোট স্তরের বিষয়গুলো আমাদের কাছে আসে না। এসব সভাধিপতি বা জেলাশাসকের বিবেচনার ব্যাপার। তবে নির্দিষ্ট অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রমাণিত হলে সে পদেও থাকতে পারবে না। কিন্তু কাটমানি নিয়ে দল চলে, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা।”

পর্যবেক্ষকদের মতে, 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের খারাপ ফলাফল হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ, নীচুতলার জনপ্রতিনিধিদের দুর্ব্যবহার এবং দুর্নীতি। ক্রমাগত শাসকদলের অন্দরমহলে দুর্নীতি বাসা বাঁধার কারণে মানুষ যে তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে এবং বিজেপির প্রতি ভরসা রেখেছিল, তা লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল থেকেই পরিষ্কার হয়ে যায়। তবে এরপরই দুর্নীতি আটকাতে দলীয় এবং প্রশাসনিক স্তরে কড়া বার্তা দিতে দেখা যায় তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

আর তৃতীয়বার দল ক্ষমতায় আসার পরেও কাটমানির যে অবাধ বিচরন চলছে, তা তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের মন্তব্য থেকেই কার্যত স্পষ্ট হয়ে গেল। যাকে সামাল দিতে ময়দানে নামতে হল রাজ্যের বর্ষিয়ান মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। আর তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের এই মন্তব্যের পরেই এখন বিজেপির পক্ষ থেকে প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া হয়েছে, তাহলে কি এতদিন বিরোধীরা যে অভিযোগ করত, তখন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান কার্যত তা স্বীকার করে নিলেন! তাহলে কি তৃণমূল করতে গেলে কাটমানির প্রয়োজন! পঞ্চায়েত প্রধানের বক্তব্যকে হাতিয়ার করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে এখন ক্রমশ চাপ বাড়াচ্ছে গেরুয়া শিবির।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!