এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > শিক্ষাঙ্গনে অপসংস্কৃতি! চটুল নাচা-গানার বাংলার সংস্কৃতি মেলায় বন্ধ হয়ে গেল কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠান!

শিক্ষাঙ্গনে অপসংস্কৃতি! চটুল নাচা-গানার বাংলার সংস্কৃতি মেলায় বন্ধ হয়ে গেল কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠান!


ফের প্রশ্নের মুখে রাজ্যের শিক্ষাঙ্গনের সংস্কৃতি রক্ষার প্রসঙ্গ। শিক্ষাঙ্গণ বিশেষ করে কলেজগুলোতে ইদানিং যেকোনো অনুষ্ঠান হলেই মদ্যপান,চাটুল নাচ,গান যেন আমবাত হয়ে গিয়েছে। এ নিয়ে বহুবার শিক্ষামন্ত্রী থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রী উষ্মা প্রকাশ করেছেন৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধমকের মুখে পড়তে হয়েছে টিএমসিপিকে। তবুও কলেজের অনুষ্ঠানে হওয়া অপসংস্কৃতিকে রোখা যাচ্ছে না।

সেরকমই একটা প্রমাণ মিলল গতকাল। দুবরাজপুর থানার হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজে চটুল নৃত্যের আয়োজন করার দাবীকে মান্যতা দেওয়া না হলে বার্ষিক অনুষ্ঠানটাই রদ করে দিল ছাত্রদের একাংশ। এর ফলে বাতিল হয়ে গেল কৃতী ছাত্রছাত্রীদের পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানও। অনুষ্ঠানে নিজেদের সুস্থ্য মনের পরিচয় দিতে বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাউল,রাইবেশে নৃত্য এবং ব্যান্ডের গানের আয়োজন করেছিল হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজ কর্তৃপক্ষ।

অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল বাউল গান দিয়ে। কিন্তু তা শেষ হতেই রাইবেশে নৃত্য পরিবেশন শুরু হতেই ছাত্রদের একাংশ তাতে ঘোর আপত্তি জানায়। একদল ছাত্র তো মঞ্চে উঠে দাবী করে,বাউল,রাইবেশে নৃত্য এখানে চলবে না। কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও লাভ হয় না কোনো। ছাত্রদের জেদের বশে অনুষ্ঠানটাই মাঝপথে বন্ধ হয় গেল। অনুষ্ঠান বাতিলের জেরে ব্যাপক ক্ষুব্ধ কলেজের শিক্ষক থেকে পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

বাউল গানের সংস্কৃতির পীঠস্থান বীরভূম। কবি জয়দেব,বিখ্যাত বাউল শিল্পী পূর্ণ দাস বাউলের জেলা এটি। প্রতিবছরই জয়দেব মেলায় দেশ-বিদেশের বাউলরা জমায়েত হন এখানে। মুখ্যমন্ত্রী প্রতিবছর এই জেলায় আয়োজিত জয়দেবের মেলায় বাউলদর এনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সেই জেলারই একটি কলেজে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাউল ও রায়বেশের এহেন অপমান হতে দেখে ব্যাপক রেগে গেলেন কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।

ছাত্রদের অভদ্র আচরণের জন্যে কলেজের অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা কিছুতেই মেনে নিতে পারলেন না তিনি। কলেজে কোনো অপসংস্কৃতি বরদাস্ত করবেন না তিনি। অধ্যক্ষ জিবি মিটিং-এ বিষয়টি তুললে অবশ্যই ওই ছাত্রদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে,এমনটাই জানালেন তিনি।

একইভাবে এব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম চট্টোপাধ্যায়। ঘটনাটি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি,এমনটাই বক্তব্যে জানালেন। অন্যদিকে,এই ধরণের আচরণ কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়,এমনটাই জানালেন তৃণমূল ছাত্রপরিষদের জেলা সভাপতি সুরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। বীরভূমের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাউল,রাইবেশ হবে এটাই তো খুব স্বাভাবিক। তবে যারা এ ধরণের আচরণ করেছে সেই সংশ্লিষ্ট ছাত্রদের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। কড়া শাস্তি অপেক্ষা করে রয়েছে তাদের জন্য,এমনটাই বললেন তিনি।

তবে বীরভূমের শিক্ষাঙ্গণে এমন ঘটনা আগেও হয়েছে বলে জানা গিয়েছে জেলা সূত্রে। এর আগে লাভপুর শিক্ষক দিবস অনুষ্ঠানে চাটুল নৃত্য পরিবেশিত হয়েছিল। শুধু তাই নয়,খোদ বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবনে ‘লুঙ্গি ড্যান্স’ গানের সঙ্গে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের পা মেলাতে দেখা গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল জামানায় রাজ্যের শিক্ষাপ্রাঙ্গণের সংস্কৃতি কোথায় যাচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এ জেলা কেবল বাউল সংস্কৃতির পীঠস্থান নয়,বিশ্ববরণ্য কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেরও স্মৃতিতেও ভরপুর। শান্তিনিকেতনেও নিজস্ব ঐতিহ্য রয়েছে।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

 

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

প্রতিবছর দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাহিত্য প্রেমী এবং সংস্কৃতিমনষ্ক মানুষ এখানে ঘুরতে আসে। তাঁদের সামনে কোন কোন দৃষ্টান্ত তুলে ধরছে বীরভূম জেলার কলেজের অনুষ্ঠানে আয়োজিত এসব চাটুল নাচ-গান? রাজ্যের বর্তমান প্রজন্মের পড়ুয়াদের মানসিকতা কোন দিকে যাচ্ছে? রাজ্যকে এরকম একাধিক প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিল হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজের এদিনের বার্ষিক অনুষ্ঠান বাতিলের ঘটনাটি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!