এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ১৪ দিনের অনশনের পর সরকার ঘোষণা করেও দিচ্ছে না সঠিক বেতন! প্রতিবাদ করে গ্রেপ্তার ৭ শিক্ষক

১৪ দিনের অনশনের পর সরকার ঘোষণা করেও দিচ্ছে না সঠিক বেতন! প্রতিবাদ করে গ্রেপ্তার ৭ শিক্ষক


দীর্ঘদিন ধরেই পিআরটি স্কেলের দাবিতে আন্দোলনরত রাজ্যের হাজার হাজার প্রাথমিক শিক্ষক। অনেক আবেদন-নিবেদন-আনোচনাতেও যখন রাজ্য সরকার সেই দাবি মেনে নেয় নি, তখন উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে আমরণ অনশনে বসেন রাজ্যের শিক্ষকরা। শেষ পর্যন্ত শিক্ষকদের অনশনের সামনে পিছু হঠে রাজ্য সরকার ঘোষণা করে, পিবি-৪ স্কেল দেওয়া না গেলেও, পিবি-৩ স্কেল দেওয়া হবে। রাজ্যের শিক্ষকরাও নমনীয়তা দেখিয়ে এই সংক্রান্ত অর্ডার হাতে পেয়ে অনশন প্রত্যাহার করে নেন।

কিন্তু, শিক্ষকদের দাবি, রাজ্য সরকার যে অর্ডার বের করেছিল আর বাস্তবে যে পরিমান বেতনবৃদ্ধি করেছে – তার মধ্যে আসমান-জমিন ফারাক! তাঁদের কথা অনুযায়ী, এই স্কেল পরিবর্তনের ফলে যে বেতন ৮,০০০ টাকা বাড়ার কথা ছিল, বাস্তবে তা বেড়েছে মাত্র ৩০০ টাকা! আর তাই, নিজেদের সঠিক বেতনের দাবিতে গতকাল পুনরায় অস্থির ব্যানারে কলকাতার রাজপথে নামেন হাজার হাজার প্রাথমিক শিক্ষক। যাদবপুর এইট বি বাস স্ট্যান্ড থেকে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির দিকে মিছিল করে যেতে চান শিক্ষকরা।

কিন্তু, বিশাল সেই মিছিলকে বাঘাযতীন মোড়েই ব্যারিকেড করে আটকে দেয় পুলিশ। কিন্তু প্রায় লক্ষ শিক্ষক-শিক্ষিকার সেই মিছিল দমে না গিয়ে রাস্তার উপরেই ধর্নায় বসে পরে। এরপর, একপ্রকার চাপে পরেই অস্থির এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু সেই বৈঠকেও কোনো সমাধান সূত্র মেলে না। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, রাস্তায় বসে পড়াটা কোনও পন্থা হতে পারে না। আন্দোলনকারীদের দাবি সরকার শুনবে কিন্তু সেটা সঠিক জায়গায় বলতে হবে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর, শিক্ষামন্ত্রীর কাছে কোনো সমাধানসূত্র না পেয়ে, ধর্ণা চালিয়ে যেতে থাকেন শিক্ষকরা। কিন্তু, জনসাধারণের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে, তাঁরা বাঘা যতীন মোড় থেকে অবস্থান সরিয়ে পাশের সলিল চৌধুরী পার্কে ধর্ণা-আন্দোলন চালিয়ে যান। কিন্তু, অভিযোগ ওঠে শিক্ষকদের সেই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ভঙ্গ করতে পুলিশ তো বটেই, স্থানীয় তৃণমূল নেতা-নেত্রীরাও হুমকি থেকে দাদাগিরি সব চালিয়ে যান। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে এই নিয়ে সরব হন উস্থির রাজ্য সম্পাদিকা পৃথা বিশ্বাস।

পৃথাদেবী লিখেছেন, রাত আড়াইটে – আবারো রাস্তায় শুয়ে। তফাত শুধু এবার যাদবপুর থানার সামনে, থানায় রয়েছেন সন্দীপদা (উস্থির রাজ্য সভাপতি সন্দীপ ঘোষ) সহ সহকর্মী, সহযোদ্ধারা। আরো অনেকেই আছেন লালবাজারে। স্বাধীন দেশের বৈধ নাগরিক, যোগ্যতা অনুযায়ী বেতন চেয়ে আন্দোলন করেছি, এই ‘অপরাধে’ থানার দরজা বন্ধ হতে দেখলাম আজ! দেখলাম পার্কে বসে থাকার ‘অপরাধে’ পুলিশি মদতে স্থানীয় নেতাদের দাদাগিরি!দিদিগিরিও দেখলাম!

ক্ষোভ উগরে দিয়ে পৃথাদেবী আরও লিখেছেন, ‘সংবেদনশীল প্রশাসন’ মহিলাদের বাথরুম টুকু ব্যবহার করতে দিতেও নারাজ! অবাক হইনা আর, চোদ্দ দিনের অনশনের মূল্যে পাওয়া অর্ডার যখন অস্বীকার করে সরকার, তখন অবাক হওয়ার ক্ষমতাও ফুরিয়ে যায়! তবে জেদ বাড়ে প্রতিদিন, একটু একটু করে চোয়াল শক্ত হয়, মুষ্ঠিবদ্ধ হাত ওঠে আকাশে। আমরা আছি, আমরা থাকব, নিজেদের লড়াই নিজেরাই লড়ে নেব। কিন্তু, এখানেই শেষ হয় না শিক্ষকদের হেনস্থা!

উস্থি সূত্রে জানা গেছে, আলোচনা করার নাম করে রাজ্য সভাপতি সন্দীপ ঘোষ ও রাজ্য সম্পাদক পৃথা বিশ্বাস সহ ৭ জনকে যাদবপুর থানায় ডেকে পাঠানো হয় আজ সকালে। সেখানে সকলকে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে। আজই আলিপুর জজ কোর্টে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা আছে বলেও জানানো হয় সংগঠনের তরফে। প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলন কার্যত জোর করেই তুলে দিল পুলিশ বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। আন্দোলন ভেস্তে দিতে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের রাস্তায় নামিয়েছে পুলিশ – বলে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!