এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > ভাইপো ছাড়া গতি নেই, টের পেয়েছেন মদন? অভিষেককে কপি, খোঁচা বিরোধীদের!

ভাইপো ছাড়া গতি নেই, টের পেয়েছেন মদন? অভিষেককে কপি, খোঁচা বিরোধীদের!


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতি থাকলে আমাকে ধরতে হবে না। ফাঁসি কাঠের মঞ্চ করে দেবেন। আমি সেখানে গিয়ে মৃত্যুবরণ করব। যুবরাজের মুখ থেকে এই কথা শুনতে শুনতে অভ্যস্ত বাঙালি। কিন্তু এবার বাংলার রাজনীতিতে আরও একজন এই একই ঢঙ্গে দুর্নীতি প্রসঙ্গে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে শুরু করলেন। তিনি হচ্ছেন, বাংলার কালারফুল বয় মদন মিত্র। দীর্ঘ পাঁচ ঘন্টা তার বাড়িতে সিবিআই আধিকারিকরা তল্লাশি চালিয়েছে। পৌরসভার নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তারপর বাইরে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মদনবাবু বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে আমাকে কিছু করতে হবে না। আমি নিজেই গঙ্গায় ঝাঁপ দেব। অর্থাৎ তার দলের নেতা যে ঢঙ্গে বক্তব্য রাখেন, এবার সেই একই ঢঙ্গে দীর্ঘ তল্লাশির পর বাইরে বেরিয়ে এসে বক্তব্য রাখতে দেখা গেল কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ককে। যা দেখে অনেকে বলছেন, আসলে সবকিছুই যুবরাজকে সন্তুষ্টি করার চেষ্টা। কারণ যুবরাজকে খুশি না রাখলে মদনবাবুর চাকরিটাও যে থাকবে না। আর এটা তিনি খুব সহজেই বুঝতে পেরেছেন। যার কারণে এখন থেকেই যুবরাজ যে পথে হাঁটছেন, দুর্নীতিতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলে, তিনি যেভাবে বক্তব্য রাখছেন, সেই একই ভাবে বক্তব্য রাখার চেষ্টা করে তাকে কপি করছেন মদন মিত্র বলেই দাবি বিরোধীদের।

প্রসঙ্গত, রবিবার সাত সকালে মদন মিত্র, ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে পৌঁছে যায় সিবিআই আধিকারিকরা। জানা যায় যে, পৌরসভায় যে নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি নিয়োগ নিয়েই তাদের বাড়িতে তল্লাশি। কার্যত গোটা বাড়ি ঘিরে রাখে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সকলের মধ্যেই একটা আশঙ্কার বাতাবরণ তৈরি হয় যে, তাহলে কি আজকেই কোনো বড় পদক্ষেপ হবে? কিন্তু না, সেরকম কিছু অবশ্য দেখা যায়নি। পাঁচ ঘন্টা তল্লাশি করার পর বেরিয়ে যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা মদন মিত্রের বাড়ি থেকে। তারপর বাইরে বেরিয়ে এসে মদনবাবু বলেন, “আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতি থাকলে আমাকে কিছু করতে হবে না আমি নিজেই গঙ্গায় ঝাঁপ দেব।”

আর তৃণমূল বিধায়কের এই মন্তব্য দেখে সোচ্চার হতে শুরু করেছে বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, তৃণমূল দলে এখন দুটো ভাগ। একটা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আর একটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে রয়েছেন প্রবীণ নেতারা। সেদিক থেকে মদনবাবু কিছুটা চাপেই রয়েছেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তার গুরুত্ব খুব একটা নেই বললেই চলে। ইতিমধ্যেই বিজেপির রাজ্য সভাপতিও জানিয়ে দিয়েছেন যে, মদন মিত্র, ফিরহাদ হাকিমদের বাড়িতে এই সিবিআই তল্লাশিতে নাকি খুশিই হয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এসবের মাঝেই তল্লাশি শেষ হওয়ার পর বাইরে বেরিয়ে এসে এমন একটা ভাব করলেন মিত্র যেন, তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অন্তঃপ্রাণ। যেভাবে যুবরাজের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠলেই তিনি বড় বড় গলায় দাবি করেন, তাকে ফাঁসির মঞ্চে যেন তুলে দেওয়া হয়। ঠিক একই ঢঙ্গে  কিছুটা বদল এনে তিনি নদীর জলে ঝাঁপ দেবেন বলে ফিল্মি ডায়লগ দিলেন কালারফুল বয়। তবে এসব করে তিনি যুবরাজের আস্থা ভজন হতে পারেন। কিন্তু আইনের রাস্তা ভাজন হতে পারবেন না। যদি তিনি দোষ করে থাকেন, তাহলে আজ না হোক কাল, সাজা পেতে হবে বলেই দাবি বিরোধী শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, তৃণমূল দলের রাশ এখন ধীরে ধীরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে চলে যাচ্ছে। এটা আর বুঝতে বাকি নেই কারোরই। দলের প্রবীণ নেতারাও সেই কথা বুঝতে পেরেছেন। তাই অনেক প্রবীণ নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আসলে তার আনুগত্য পেতে উঠে পর্যন্ত দাঁড়ান। ফলে সেদিক থেকে মদন মিত্র খুব ভালো মতই উপলব্ধি করছেন যে, এবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথেই তাকে চলতে হবে। তা না হলে যেভাবে তার বাড়িতে তল্লাশি হয়েছে, তাতে যদি সিবিআই বড় কোনো স্টেপ নেয়, তাহলে হয়তো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তার পাশে নাও দাঁড়াতে পারে। যেটা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে হয়েছে। তাই তল্লাশি শেষ হওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে বক্তব্য রাখেন, সেভাবেই তাকে কপি করার চেষ্টা করলেন মদন মিত্র। কিন্তু অনেকে বলছেন, অভিষেকবাবু তো রক্ষাকবচ নিয়ে জেরার মুখোমুখি হন, এবার যদি ভবিষ্যতে এই তদন্তের জন্য মদন বাবুকে জেরার মুখোমুখি হতে হয়, তখন তিনি কি করবেন? তখনও কি বিভিন্ন অছিলা দেখিয়ে জেরায় যাবেন, নাকি নিজের যুবরাজের দেখানো পথেই রক্ষাকবচ নিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মুখোমুখি হবেন? দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!