এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > কংগ্রেস > ভাইপোকে বাঁচাতে দু নৌকোয় পা মমতার! মোদীর সঙ্গেও সেটিং দিদির?

ভাইপোকে বাঁচাতে দু নৌকোয় পা মমতার! মোদীর সঙ্গেও সেটিং দিদির?


প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-দুর্নীতি নিয়ে একের পর এক তদন্তে পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অনুব্রত মণ্ডলের মতো নেতারা গ্রেফতার হয়েছেন। কিন্তু বারবার ডাকা সত্ত্বেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না বাংলার স্বনামধন্য ভাইপোর বিরুদ্ধে। অনেকেই অভিযোগ করছেন, তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির একটা গোপন সেটিং রয়েছে। সেই কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর পায়ে পড়ে তার ভাইপোকে বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা শুরু করেছেন। যার কারণে তদন্তকারী সংস্থাও শুধু ডাকাডাকির মধ্যেই আটকে রয়েছে। কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না।

তবে সত্যিই কি এই সেটিংয়ের অভিযোগ যথার্থ? সত্যিই কি তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপির শরণাপন্ন হওয়ার যে ভয়ংকর অভিযোগ উঠছে, তা বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ? কি হবে, তা ভবিষ্যৎ বলবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি দেখে গোটা বিষয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি তথা সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তার দাবি, দুই নৌকায় পা দিয়ে চলার চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেকে বলছেন, তৃণমূল নেত্রীর কাছে সবদিক বজায় রাখার এই কৌশল তো নতুন নয়। বরাবরের সুবিধাবাদীর রাজনীতি তিনি করে এসেছেন। এবারেও একদিকে নিজের পরিবারকে রক্ষা করার চেষ্টা, আবার অন্যদিকে বিজেপি বিরোধীতার মুখ হিসেবে বিরোধী জোটে নেতৃত্ব দেওয়ার চেষ্টা। সবদিক যাতে ঠিকঠাক করে রক্ষা করা যায়, তার জন্য কোনো চেষ্টা রাখতেই বাকি রাখছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্তত তেমনটাই অভিযোগ বিরোধীদের।

প্রসঙ্গত, এদিন ডায়মন্ডহারবারে যা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শক্ত গড় হিসেবে পরিচিত, সেই গড়েই সভা করেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। আর সেখানেই বাংলার মানুষের মনে যে প্রশ্ন সবথেকে বেশি মাথা চাড়া দিচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলে দেন তিনি। বিভিন্ন তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু কেন ভাইপোকে ছেড়ে রাখা হচ্ছে, সেই ব্যাপারে সেটিংয়ের গোপন অভিযোগ সামনে আনেন অধীরবাবু। তিনি বলেন, “পার্থ চ্যাটার্জি জেলে, মস্তান অনুব্রত মণ্ডল জেলে। কিন্তু ভাইপোর কিছু হয় না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোদীর সঙ্গে লাইন করে ভাইপোকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। কি হয়, না হয় বুঝতে পারছেন না। তাই একদিকে দিল্লিতে গিয়ে কংগ্রেসের শরণাপন্ন হচ্ছেন, আবার সেটিং বজায় রাখছেন। দু নৌকায় পা দিয়ে চলার চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”

একাংশের দাবি, সেটিংয়ের যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা ক্রমশ প্রকট হতে শুরু করবে, যদি রাঘব বোয়ালদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয়। শুধু অধীর চৌধুরী নয়, বিজেপির অনেকেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে রীতিমতো ক্ষিপ্ত। যার বিরুদ্ধে এত দুর্নীতির প্রমাণ রয়েছে, এত অভিযোগ রয়েছে, মানুষ শাস্তির দাবি করছেন, সেখানে কেন তাকে ছেড়ে রাখা হচ্ছে! তাহলে কি সত্যিই গোপনে গোপনে বিজেপির কাছে গিয়ে নরেন্দ্র মোদীর কাছে গিয়ে মাথা নত করে এসেছেন বাংলার নেত্রী?

অনেকে বলছেন, কখনই এই জিনিস সম্ভব হতে পারে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেস হয়তো বিজেপির শরণাপন্ন হয়ে বাঁচার চেষ্টা করতেই পারে। কিন্তু বিজেপি কখনই তাকে মেনে নেবে না। কারণ যে বাংলায় বিজেপি কর্মীরা প্রতিনিয়ত মার খাচ্ছেন, তাদের বাড়িতে অত্যাচার করা হচ্ছে এবং সেই সমস্ত ঘটনায় তৃণমূলের নেতা কর্মীরা জড়িত, সেখানে দিল্লির নেতারা তৃণমূলের সঙ্গে আন্ডার স্ট্যান্ডিংয়ের রাজনীতি করলে বাংলায় আর বিজেপির ঘুরে দাঁড়ানোর মত পরিস্থিতি থাকবে না। ধীরে ধীরে তারা শূন্যতে নেমে যাবে। তাই নিজেদের ভাবমূর্তি এবং মাঠকে শক্ত করতে অন্তত সেটিংয়ের পথে হাঁটবে না কেন্দ্রীয় বিজেপি বলেই দাবি পর্যবেক্ষকদের।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জি-টুয়েন্টি সম্মেলনে রাষ্ট্রপতির ডাকা নৈশ ভোজে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পাশের চেয়ারে বসেছিলেন। তবে তা নিয়ে বহু চর্চা হয়েছে। অনেকেই সেটিংয়েএর অভিযোগ করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, অমিত শাহ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে একটি কথা পর্যন্ত বলেননি। ফলে তারা সেটিং করে নেবেন বলে অধীর চৌধুরী যে অভিযোগ করছেন, তা ভিত্তিহীন। বরঞ্চ যে বাংলায় এই অধীরবাবুর দলের কর্মীরা মার খাচ্ছে, খুন হচ্ছে, সেই সব কিছু ভুলে গিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বের কারণে এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব এই অধীরবাবুদের মত নেতাকেই মেনে নিতে হবে। কারণ, তাদের একটাই টার্গেট বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করা। কিন্তু সেই কাজ করলে বাংলায় যে দুর্নীতি চলছে, তাকে আটকাতে পারবেন তো অধীরবাবুর মতন তারা? সেই প্রশ্নই তুলে পাল্টা কংগ্রেস নেতাকে চাপে ফেলে দিচ্ছে সমালোচক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!