এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > বিজেপি > ভরাডুবির পরই দুই নেতার প্রতিযোগিতা শুরু, শেষ হাসি হাসবে কে? জোরদার চর্চা!

ভরাডুবির পরই দুই নেতার প্রতিযোগিতা শুরু, শেষ হাসি হাসবে কে? জোরদার চর্চা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  একজন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ, আর অপরজন সদ্য বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী‌। এখন বিজেপির অন্দরমহলে এই দুই ব্যক্তির মধ্যে রীতিমত কম্পিটিশন তৈরি হয়েছে বলে দাবি করছেন একাংশ। রাজ্য রাজনীতির অন্যান্য ইস্যুর মধ্যে সবথেকে বেশি বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদ নিয়ে এখন রীতিমত দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে বলেই চর্চা শুরু হয়েছে। যার একদিকে রয়েছেন দিলীপ ঘোষ এবং অন্যদিকে রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।

তবে সেই চর্চা অবশ্য অন্য কারও করা নয়, বরঞ্চ বিজেপির অন্দরমহলে কান পাতলেই এই দুই নাম নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। আর তা দেখেই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবার হয়ত বা বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদে বদল আসতে পারে। এতদিন দিলীপ ঘোষের বিপক্ষে রাজ্য সভাপতি পদে তেমন কোনো মুখ ছিল না। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী ভারতীয় জনতা পার্টিতে যুক্ত হওয়ার পরে ক্রমাগত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নজরে চলে এসেছেন।

শুধু তাই নয়, বিধানসভা নির্বাচনে নিজের চ্যালেঞ্জ রক্ষা করেছেন তিনি। বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় না আসলেও নন্দীগ্রামে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজিত করে নিজের ক্যারিশমা দেখিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। সেদিক থেকে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবারের নির্বাচনী বৈতরণী পার করার দায়িত্বে থাকলেও, তিনি তার লক্ষ্য পূরণ করতে পারেননি। যার ফলে রাজ্য সভাপতি হিসেবে দিলীপ ঘোষকে ঠিকমত বাংলার মানুষ মেনে নিতে পারেননি।

তাই সেনাপতি পছন্দ না হওয়ার কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সঠিক মুখ দাঁড় করাতে না পারার জন্যই বিজেপির এই ফলাফল হয়েছে। সেদিক থেকে শুধু নন্দীগ্রাম নয়, সারা রাজ্য জুড়ে যদি শুভেন্দু অধিকারীকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রধান মুখ হিসেবে দাঁড় করানো যেত, তাহলে বিজেপি অনেকটাই সাফল্যের কাছাকাছি পৌঁছে যেত বলে দাবি করা হচ্ছে‌। আর এই পরিস্থিতিতে বর্তমানে সেই শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষ চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজেপির নীচুতলা থেকে ওপরতলা সর্বত্র।

বলা বাহুল্য, শুভেন্দু অধিকারী বিরোধী দলনেতা হলেও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে সম্প্রতি তাকে তলব করা হয়েছে। আর তারপরেই জল্পনা তৈরি হয়েছে, বিজেপির রাজ্য কমিটিতে বড় বদল আসতে পারে। এক্ষেত্রে দিলীপ ঘোষের বদল শুভেন্দু অধিকারীকে রাজ্য সভাপতি করা হতে পারে বলে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। এমনকি অনেক নেতা থেকে শুরু করে সাংসদরাও চাইছেন, শুভেন্দু অধিকারীকে দলের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রাখা হোক। সেদিক থেকে দিলীপ ঘোষ এবং তার অনুগামীদের চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে। তবে শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষে যতই মতামত থাকুক না কেন, বিজেপির সংগঠনের রণনীতি থেকে শুরু করে শৃঙ্খলা, শেষ কথা বলে সংঘ পরিবার।

আর দিলীপ ঘোষ সংঘ পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তাই শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যদি শুভেন্দু অধিকারীকে রাজ্যের সংগঠনের দায়িত্ব দেয়, তাহলে সংঘ পরিবারের মত নাও থাকতে পারে। আর সংঘ পরিবার যদি এতে সায় না দেয়, তাহলে শেষ পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারীর ভাগ্যে শিকে ছিড়বে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বহাল থাকবেন দিলীপ ঘোষ। স্বাভাবিক ভাবেই দলের একাংশ নেতা এবং জনপ্রতিনিধিরা রাজ্য কমিটিতে বদল চাইলেও এবং শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষে কথা বললেও, দিলীপ ঘোষের পক্ষে সংঘ পরিবার থাকার কারণে দুই পক্ষের ভার সমান সমান বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তবে শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষকে নিয়ে এইরকম লড়াইয়ের ব্যাপারে একাংশ গুঞ্জন তৈরি করলেও, তারা দুজনেই কার্যত নীরব। তলায় তলায় যে তাদের মধ্যে কিছুটা হলেও দূরত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত একাংশ। কেননা শুভেন্দু অধিকারী দিল্লিতে যাওয়ার পরে দিলীপ ঘোষের কাছে এই ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছিল। যার উত্তরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি এই ব্যাপারে বিন্দুবিসর্গ জানেন না।

অন্যদিকে দিল্লি থেকে শুভেন্দু অধিকারী জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি দিলীপ ঘোষকে না জানালেও, অমিতাভ চক্রবর্তীকে গোটা ব্যাপারটি জানিয়ে এসেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই তলায় তলায় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে রাজ্য সংগঠন নিয়ে যথেষ্ট চিন্তিত এবং তা যে ঢেলে সাজাতে চাইছে, তা একপ্রকার নিশ্চিত। কিন্তু রাজ্য সভাপতি হিসেবে দিলীপ ঘোষকে রেখে দেওয়া হবে, না কি বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হবে শুভেন্দু অধিকারীকে, এখন সেটা নিয়েই গুঞ্জন ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী।

অনেকে বলছেন, যদি সংঘ পরিবারের মতামত দিলীপ ঘোষের পক্ষে যায়, তাহলে দিলীপ ঘোষকে নাও সরাতে পারে ভারতীয় জনতা পার্টি। তবে এক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারীকে বড় কোনো দায়িত্ব দিয়ে সংগঠনের কাজেও নিযুক্ত করতে পারে গেরুয়া শিবির। অর্থাৎ পাল্লা যে উভয়পক্ষেই সমানভাবে ভারী এবং দিনের শেষে যে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব, তা বলাই যায়। শেষ পর্যন্ত কার ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে, কে বেশি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পৌঁছে যায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!